ASANSOL

পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসকের কার্যালয়ের অদূরে বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ প্রশাসনের

দাবি উঠলো পুনর্বাসনের, পুরনিগমের পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলাশাসকের কার্যালয়ের অদূরে আসানসোলের সেনরেল রোডে এইচএলজি মোড়ে বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদ করা হলো। শুক্রবার সকালে এই উচ্ছেদ অভিযানকে কেন্দ্র করে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই অভিযান নিয়ে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তারজন্য আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের আসানসোল উত্তর থানার বিরাট পুলিশ বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছিলে। ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আরকে শ্রীবাস্তব। এই অভিযানের সময় এলাকায় উপস্থিত ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের ২২ নং ওয়ার্ডের তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর অনিমেষ ওরফে অনির্বাণ দাস ও শাসক দলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসির পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক অলোক মুখোপাধ্যায় ওরফে মুনমুন।


তবে আসানসোল পুরনিগমের এই পদক্ষেপ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। বিভিন্ন মহল থেকে বলা হচ্ছে, এদিন সেনরেল রোডের যে জায়গায় বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদ করা হলো, তার চেয়ে বেশি দখলদার রয়েছে জিটি রোডের আসানসোল বাজার, হটন রোড ও এসবি গরাই রোডে। এইসব এলাকায় বেআইনি দখলদারদের জন্য যানজট হয়ে থাকে। সাধারণ মানুষের পথ চলা দায় হয় এইসব রাস্তায়। অথচ এইসব রাস্তা ও বাজারে কোন ব্যবস্থা না নিয়ে, যেখানে কোন সমস্যা হয়না, সেখানে এমন পদক্ষেপ নেওয়া হলো।


একইসঙ্গে ঐ এলাকায় বেআইনি দখলদার হিসাবে যে দোকান ভাঙ্গা হয়েছে, তারা পুনর্বাসনের দাবি করেন। পুর প্রশাসনের এই কাজকে সমর্থন করার পাশাপাশি অন্য জায়গায় যাতে এই দোকানদারের পুনর্বাসন পান, তার আশ্বাস দিয়েছেন শাসক দলের কাউন্সিলর ও শ্রমিক সংগঠনের জেলা সম্পাদক।
পুর প্রশাসনের তরফে দাবি করা হয়েছে, এই রাস্তার অদূরে রয়েছে জেলাশাসকের অফিস সহ অন্যান্য সরকারি অফিস। গাড়ি করে এইসব অফিসে যাতায়াতে সমস্যা হচ্ছে। তাই এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।


জানা গেছে, ১৫ দিন আগেই আসানসোল জিটি রোডের বিএনআর মোড় থেকে সেনরেল রোড বা বিবেকানন্দ সরণীতে রাস্তার দুদিকে বেআইনি দখলদারদের সরে যাওয়ার জন্য পুরনিগমের তরফে নোটিশ দেওয়া হয়। পরে মাইকিংও করা হয়েছিলো।
কিন্তু তারপরেও সরে না যাওয়ায় এদিন অভিযান চালানো হয়েছে।
এই প্রসঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার বলেন, নোটিশ দিয়ে বেআইনিভাবে সরকারি জমিতে দখল করে থাকা দোকানদের সরে যেতে বলা হয়েছিলো। কিন্তু তারা না সরে যাওয়ায় এদিন অভিযান করা হয়েছে। শহরের অন্য এলাকায় থাকা বেআইনি দখলদার উচ্ছেদ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুর প্রশাসন নিজেদের মতো করে সময়ে সময়ে পদক্ষেপ নেবে।


এদিন ভেঙে দেওয়া একটি দোকান মালিক কল্পনা মোদক বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এখানে দোকান করে সংসার চালাই। এখন আমাদের কি হবে? প্রশাসনের উচিত ছিলো তো, আগে আমাদের পুনর্বাসন দিয়ে এই পদক্ষেপ নেওয়া। আমি পুর প্রশাসনের কাছে বিকল্প ব্যবস্থা বা পুনর্বাসনের দাবি করছি।
শাসক দলের কাউন্সিলর ও শ্রমিক সংগঠনের জেলা সম্পাদক দোকানদারদের পাশে থেকে পুনর্বাসনের কথা বললেও, পুর প্রশাসনের তরফে এদিন এমন কোন আশ্বাস দেওয়া হয়নি।

Leave a Reply