ASANSOL

আসানসোল দূর্গাপুরের শিল্পক্ষেত্রে বাড়ছে দূষণ, কড়া পদক্ষেপ স্টেট পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডের, রাতে ড্রোন দিয়ে নজরদারি

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল ও দূর্গাপুর শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন শিল্প তালুক বা শিল্পক্ষেত্রে দূষণ বাড়ছে। একইসঙ্গে রয়েছে রোড ডাস্ট বা রাস্তার দূষণ। সবমিলিয়ে এইভাবে দূষণ বাড়ায় চিন্তিত রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ বা ওয়েষ্ট বেঙ্গল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ড ( ডবলুবিপিসিবি)। বোর্ড এই দূষণ নিয়ন্ত্রণ বা কমাতে বেশকিছু কড়া পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে আসানসোল পুরনিগমের কনফারেন্স হলে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়। এই বৈঠকে পর্ষদের তরফে উপস্থিত ছিলেন চেয়ারম্যান ডঃ কল্যাণ রুদ্র ও মেম্বার সেক্রেটারি আইপিএস রাজেশ কুমার। এছাড়াও ছিলেন আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার এন সুধীর কুমার নীলকান্তম, আসানসোল পুরনিগমের চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, দুই ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমুল হক, পুর কমিশনার রাহুল মজুমদার সহ জেলা প্রশাসন সহ বিভিন্ন সংস্থার আধিকারিকরা। এদিনের বৈঠকে দুটি পর্যায়ে দূষণ নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।


বৈঠক শেষে পর্ষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বার সেক্রেটারি বলেন, এই রাজ্যের ৬ টা শহরকে দূষণ নিয়ে চিহ্নিত করা হয়েছে। তারমধ্যে রয়েছে আসানসোল ও দূর্গাপুর। এই দুই শহরের বিশেষ করে শিল্প ক্ষেত্রের দূষণ খুবই চিন্তাজনক। যার মধ্যে রয়েছে, দূর্গাপুরের কিছু এলাকা। রয়েছে আসানসোল, জামুড়িয়া, রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর, কুলটি ও সালানপুরের কিছু জায়গা। বিশেষ করে যেখানে স্পঞ্জ আয়রন কারখানা যেখানে আছে। আমরা সেগুলোকে হটস্পট হিসাবে চিহ্নিত করেছি। এইসব এলাকায় দূষণ নিয়ন্ত্রণের জন্য কারখানায় কারখানায় পলিউশন কন্ট্রোল ডিভাইস বা যন্ত্র লাগানো রয়েছে। কিন্তু, খবর পাওয়া যাচ্ছে রাতে এইসব যন্ত্র চালানো হয়না। বন্ধ করে রাখা হয়। অনেক কারখানা আবার সকালেও তা চালায় না। খবর পেয়ে আমরা যাই। সতর্ক করি। কিন্তু রাতে নজরদারির জন্য এবার ড্রোনের ব্যবহার করা হবে। পুলিশ কমিশনারকে তা বলা হলো। গোটা সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। কারা এই কাজ করছে তা আমরা দেখবো। চেয়ারম্যান বলেন, আমরা চাই না, কারখানা বন্ধ হয়ে যাক। সেটা তো একবারে শেষ ব্যবস্থা। এছাড়াও রোড ডাস্ট বা রাস্তা থেকেও একটা দূষণ বাড়ছে। তারজন্য দুবার করে রাস্তায় জল দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। খারাপ রাস্তা সারাইয়ের পদক্ষেপ নিতে বলা হয়েছে। এই খারাপ রাস্তার কারণে গাড়ি চলে যাওয়ার পরে চাকা থেকে দূষণ ছড়াচ্ছে। আমাদের টার্গেট হলো ২০১৭-১৮ সালে দূষণের যা মাপকাঠি ছিলো, তার থেকে অন্ততঃ ৪০ শতাংশ কমানো।


চেয়ারম্যান আরো বলেন, এই রাজ্যের পশ্চিম সীমান্ত বিশেষ করে ঝাড়খন্ড থেকে একটা দূষণ বাড়ছে। শীতকালে তা সবচেয়ে বেশি। তারজন্য দুই রাজ্যের সীমান্তে ” গ্রীন বেল্ট ” বা গাছের প্রাচীর দেওয়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। পুরো কাজটা হতে ৫ বছর সময় লাগবে। তাই এই বছর বর্ষার সময় থেকেই এই কাজ শুরু করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি আগামী আগষ্ট সেপ্টেম্বর মাসে সেন্ট্রাল পলিউশন কন্ট্রোল বোর্ডকে নিয়ে প্রতিবেশী রাজ্যগুলির সঙ্গে বৈঠক করার ভাবনা রয়েছে। যেখানে ঐ রাজ্যগুলিকে পলিউশন কন্ট্রোলে তাদের কি কি করতে হবে, তা বলে দেওয়া হবে।
এদিনের বৈঠকে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের তরফে ২১ জনকে ” স্মোক লেস চুলা বা ধোঁয়াহীন উনুন দেওয়া হয়েছে। উপস্থিত ছিলেন কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী কিংশুক রায়, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কমল মন্ডল, নির্বাহী প্রকৌশলী কে কে শ্যাম, সৌরিন্দ্র ঘোষ প্রমুখ।

Leave a Reply