ASANSOL

দূর্গাপুর আইকিউ সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বিরল রোগ “জায়েন্ট এনকেফেলোসিল ” র সফল অস্ত্রোপচার

বেঙ্গল মিরর, দূর্গাপুর, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ বিরল রোগ ” জায়েন্ট এনকেফেলোসিল” র সফল অস্ত্রোপচার হলো পশ্চিম বর্ধমান জেলার দূর্গাপুরের আইকিউ সিটি মেডিকেল হাসপাতালে। ” এনকেফেলোসিল ” মস্তিষ্কের একটি প্রোট্রুশন ও ঝিল্লি যা মাথার খুলির মাধ্যমে এটিকে ঢেকে রাখে। গর্ভাবস্থায় নিউরাল টিউব পুরোপুরি বন্ধ না হলে এনকেফেলোসিল ঘটে। এতে শিশুরা সাধারণত মাথার পিছনে ফোলাভাব নিয়ে জন্মায়। এটি এমন একটি বিরল রোগ যা প্রতি ১০ হাজার শিশুর মধ্যে প্রায় ১ জনের ক্ষেত্রে ঘটে। অনেক সময় সময়মত হস্তক্ষেপের পরেও এরজন্য খারাপ হয়।


জানা গেছে, কুলটির বরাকরের একটি বেসরকারি নার্সিং হোমে অস্ত্রপচার বা অপারেশনের মাধ্যমে এমনই এক শিশুর জন্ম হয়। প্রসবের সময় ঐ শিশুটির মাথার পেছনে খুব বড় ফোলাভাব ছিলো। তাই শিশুটিকে দূর্গাপুরের আইকিউ সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছিলো। আইকিউ সিটি মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ডাঃ সি.এস. সিংয়ের নেতৃত্বে শিশু সার্জারি বিভাগের অধীনে ডাঃ জয়ন্ত কুমার মুদুলির আন্ডারে শিশুরোগ বিভাগে শিশুটিকে ভর্তি করা হয়েছিল। শিশুটির সিটি স্ক্যান করা হয়েছিলো। যা দেখে শিশুটির এনকেফেলোসিল হয়েছে নিশ্চিত হন চিকিৎসকরা। এতে শিশুটির মাথার খুলিতে একটি ত্রুটি দেখায় যার মাধ্যমে মস্তিষ্কের টিস্যু, মস্তিষ্কের তরল আবরণের স্তরগুলি বাইরে ছড়িয়ে পড়ে।


শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল হওয়ার পরে, শিশু জন্মের চতুর্থ দিনে অস্ত্রোপচার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অস্ত্রোপচারটি প্রায় ৩ ঘন্টা ধরে হয়েছিলো। সঠিক অস্ত্রপচারের মাধ্যমে শিশুর মাথা থেকে ফুলে যাওয়া অংশটি ঠিক করা হয়েছিল। অপারেশন বা অস্ত্রপচারের পরবর্তী সময়ে কোন জটিলতা ছিল না। তাই অস্ত্রোপচারের পরের দিনই শিশুটিকে ভেন্টিলেটরি সাপোর্ট থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছিল। বর্তমানে শিশুটি স্নায়বিকভাবে স্বাভাবিক এবং ওজন বাড়ছে।


এই প্রসঙ্গে সুপর্ণা সেনগুপ্ত (সিইও আইকিউ সিটি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল) বলেন, পেডিয়াট্রিক সার্জন, পেডিয়াট্রিক অ্যানাস্থেটিস্ট, শিশু বিশেষজ্ঞ ও আইকিউ সিটি হাসপাতাল মেডিকেল কলেজের প্রশিক্ষিত অপারেশন থিয়েটার এবং এনআইসিইউ কর্মীদের চেষ্টায় সফলভাবে অস্ত্রপচার করা হয়েছ। যেহেতু শিশুটির বাবা-মা খুবই দরিদ্র, তাই রাজ্য সরকারের স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের অধীনে সম্পূর্ণ চিকিৎসা বিনামূল্যে করা হয়েছে।

Leave a Reply