আসানসোল জেল কর্মী থেকে সুপার সবারই চাপ কমলো
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল। জেল কর্মী থেকে জেল সুপার সবারই চাপ কমলো। আর অনুব্রতর মতো ভিআইপির আবদার শুনতে হবে না। নজরকাড়া ভিআইপি শূন্য হল আসানসোল জেল। প্রায় আড়াই বছর ধরে গরু কয়লা পাচারকাণ্ডে আসানসোল জেল বা বিশেষ সংশোধনাগার ভিআইপি সংশোধনাগারে পরিণত হয়েছিল। মঙ্গলবার সেই সংশোধনাগার ভিআইপি মুক্ত হল বলা চলে। অন্যদিকে এইসব ভিআইপিদের জন্য সাধারণ বন্দিরা বিভিন্ন সময় বিশেষ করে উৎসব মরসুমে দুর্গাপুজো কালীপুজো কিংবা ভাইফোঁটায় যেসব সুযোগ সুবিধা পেয়েছে, খাবারের মান উন্নত হয়েছে সেগুলো আর হবে না ভেবে তারা কিছুটা হতাশ বলা চলে।
২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে গরু এবং পরে কয়লা পাচার কাণ্ডের সিবিআই এর মামলা শুরু হতেই এই সমস্ত কেসগুলি আসানসোলের বিশেষ সিবিআই আদালতে আসে এবং এইসব কেসে যারা গ্রেপ্তার হন তাদের আসানসোল জেলে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যে ২০২০ সালের ১৮ই নভেম্বর গরু পাচার মামলায় বিএসএফের কমান্ডেন্ট সতীশ কুমার গ্রেপ্তার হন ।এরপর ১১ ই ডিসেম্বর এই একই মামলায় গরু পাচার কাণ্ডের প্রধান অভিযুক্ত এনামুল হক আত্মসমর্পণ করেন। ১৩ মাস তিনি জেলেছিলেন। ২০২১ এ মার্চ মাসে গ্রেফতার হন বিকাশ মিশ্র। ২০২২ এ ১০ই জুন অনুব্রতর দেহরক্ষী সেহেগল গরু পাচার মামলায় গ্রেপ্তার হন ।দীর্ঘদিন আসানসোল জেলে থাকার পর বর্তমানে এনামুল,সেহগল তিহাড় জেলে আছেন।
২০২২ এ ১২ ই জুলাই কয়লা কাণ্ডে ইসিএল এর ৫ জেনারেল ম্যানেজার সহ সাত জনকে গ্রেফতার করা হয় ।পরে আরো একজন গ্রেপ্তার হন। তার আগেই জয়দেব মণ্ডল সহ চার বড় কয়লা মাফিয়া কয়লাকান্ডে গ্রেফতার হয়ে প্রায় দুমাস এই জেলে ছিলেন। বর্ধমান সন্মার্গ চিটফান্ড মামলায় বর্ধমান পুরসভার প্রশাসক প্রণব চট্টোপাধ্যায় কেও গ্রেফতার করে এই জেলেই দীর্ঘদিন রাখা হয়েছিল। হাইকোর্টের নির্দেশে তিনি জামিন পান।গরু পাচার মামলায় সবচেয়ে বড় ভিভিআইপি বীরভূমের তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে সিবিআই ১০ই আগস্ট২০২২ গ্রেফতার করি। ২৪ শে আগস্ট থেকে প্রায় সাড়ে ছয় মাস পর অনুব্রত মণ্ডল মঙ্গলবার আসানসোল জেল থেকে ইডির আদালতের নির্দেশ মত দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হল।
আসানসোল জেলে থাকাকালীন এইসব ভিভিআইপিদের একদিকে নিরাপত্তা ও চিকিৎসা নিয়ে প্রতি মুহূর্তে যেমন দুশ্চিন্তায় ছিলেন জেল কর্তৃপক্ষ ।তেমনি তাদের নিয়ে নানান বিতর্ক নানা সময়ই উঠেছে। বিশেষ করে অনুব্রত মণ্ডল কে প্রথম দিন থেকেই জেলে সাধারণ যে সেল সেখানে রাখা হয়নি। তার জন্য জেল হাসপাতালের একটি ওয়ার্ড এবং সেখানে টেলিভিশন পর্যন্ত ছিল। তিনি একাধিকবার যখন জেলা হাসপাতালে পরীক্ষার জন্য গেছেন বা আদালতে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তখন শহরের বা আদালতের রাস্তাঘাটে বড় অংশই প্রায় বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল কয়েক ঘন্টার জন্য ।এতে একাধিকবার সাধারণ মানুষ অত্যন্ত সমস্যা পরেছিলেন। আবার এই অনুব্রতর আবদারে দুর্গাপুজো, কালীপূজা ভাইফোঁটায় জেলের সমস্ত বন্দিদের জন্য প্রত্যেকদিন বিশেষ খাবার দাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। অনুব্রত নিজেও জেলে হনুমানের পুজোর জন্য ফুল এবং মিষ্টি সংগ্রহ করেছিলেন। এইসব ভিআইপি বন্দিদের দেখভালের জন্য প্রায় প্রত্যেক দিনই অস্থায়ী চিকিৎসকদের পাঠানো হতো জেলে। কিন্তু জেলের চিকিৎসা ব্যবস্থায় অনুব্রত সন্তুষ্ট ছিলেন না।
তিনি নিজেই আসানসোলের জেলা হাসপাতালে এসে চিকিৎসক এবং পুলিশ কর্মীদের বলেছিলেন আমি সুযোগ পেলে জেলের জন্য আলাদা একটি অ্যাম্বুলেন্স এবং আলাদা করে জেলের মধ্যে একটি ভালো হাসপাতাল করার চেষ্টা করে দেবো আম বন্দীদের জন্য। একই সঙ্গে এখানকার কর্মীদের যেসব সমস্যা তিনি শুনেছেন তারও সমাধানের আশ্বাসও দিয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই এই মুহূর্তে আসানসোল জেলে সর্বশেষ ভিভিআইপি বন্দি অনুব্রত মণ্ডল জেল ছাড়ায় যেমন হাফ ছেড়ে বাঁচলেন সেখানকার আধিকারিক থেকে কর্মীরা, তেমনি কিছুটা সেইসব বন্দিরা হতাশ ,যারা দীর্ঘদিন জেলে আছেন। তারা মনে করেন এই ধরনের মানুষ থাকায় তাকে অন্তত তাদের সমস্যার কথা গিয়ে বললে তিনি তার সমাধানে কোন না কোনও ভাবে চেষ্টা করতেন। জেলের এক কর্মী এবং এক আইনজীবী বলেন অনেকদিন পর এতজন ভিআইপি পরপর গত দু’বছর ধরে আসানসোল জেলে এসেছেন এবং বিভিন্ন সময়ই তারা চলে গেছেন। গত দুই দশকে আমরা মনে করতে পারছি না এত ভিআইপি একসঙ্গে এই জেলে আসার কথা।
- বার্ণপুরে তৃনমুল কংগ্রেস প্রার্থীর
- আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে কুয়ো খুঁড়তে গিয়ে মিললো কয়লা
- SS Ahluwalia वोट मांगने पहुंच गए तृणमूल कार्यालय
- आसनसोल इंजीनियरिंग कॉलेज में खुदाई के दौरान निकला कोयला ?
- আসানসোল ও কুলটিতে দুটি জনসভা মুখ্যমন্ত্রীর