West Bengal

রাজ্যের দুই জায়গায় ডিভিসি ৮০০০ কোটি টাকা খরচ করে ২১২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের কেন্দ্র চালু করার অনুমোদন পেয়েছে

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য, আসানসোল : ( DVC Will Set up Power plants in West Bengal ) পশ্চিম বর্ধমান জেলার দুর্গাপুর ৮০০ মেগা ওয়াটের একটি ইউনিট এবং পুরুলিয়ার রঘুনাথপুর ৬৬০ মেগাওয়াট করে দুটি অর্থাৎ ১৩২০ মেগাওয়াট দুটি ইউনিক তৈরি হবে। এই রাজ্যের এই দুই জায়গায় ডিভিসি প্রায় আট হাজার কোটি টাকা খরচ করে ২১২০ মেগা ওয়ার্ড বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতাসম্পন্ন নতুন বিদ্যুৎ কেন্দ্র চালু করার অনুমোদন পেয়েছে। একইসঙ্গে ঝাড়খণ্ডের কোডারমাতে আরো ১৬০০ মেগাওয়াট সহ মোট ৩৭২০ মেগাওয়াট তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র নতুন করে উৎপাদনের কাজ ডি ভি সিতে এবার শুরু হবে। এতে নতুন করে কোন জমি প্রয়োজন হবে না । ডিভিসির নিজস্ব জমিতেই এই কাজ হবে। ডিভিসির এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর এবং মাইথনের প্রজেক্টহেড অঞ্জনি কুমার দুবে এই কথা জানান।


এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর অঞ্জনি কুমার দুবে বলেন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র ছাড়াও জলবিদ্যুৎ এবং নতুন করে তাদের যে বাঁধ গুলি আছে সেখানেও ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তুলে সেই বিদ্যুৎ তারা সরবরাহ করবে। এছাড়াও সৌর শক্তি সম্পন্ন বিদ্যুৎ তারা গড়ছে। এই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সব মিলিয়ে ডিভিসি আগামী কয়েক বছরে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য ২৭ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে। এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন ডিভিসি ১২ হাজার কোটি টাকার গত আর্থিক বছরে ব্যবসা করেছে এবং ৬৩২ কোটি টাকা লাভ করেছে । ২০৭০ সালের মধ্যে ভারত সহ সারা পৃথিবী থেকেই কার্বন মুক্ত করার লক্ষ্যে ডিভিসিও ধীরে ধীরে সৌর বিদ্যুৎ এবং জলবিদ্যুতের দিকে বিশেষ জোর দিয়েছে।


এছাড়াও তিনি বলেন পশ্চিমবঙ্গে ডিভিসির যতগুলি সাবস্টেশন আছে অথবা জাতীয় সড়কের ধারে বা তাদের নিজস্ব যেখানে যেখানে বিদ্যুৎ কেন্দ্র আছে সেখানে সহ ঝাড়খন্ডের মাইথন, পাঞ্চেত এলাকা মিলিয়ে ১৭০ টি ইলেকট্রিক গাড়ির চার্জের স্টেশন তৈরি করা হবে। মাইথন এই কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। এছাড়াও আসানসোলের কালিপাহাড়ি, দুর্গাপুরের মুচিপাড়া, হুগলির কাছে বেলমুড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় এমন চার্জিং স্টেশন তৈরি হবে। গাড়ির ব্যাটারি চার্জিং এরও ব্যবস্থা করবে তারা। এই ব্যাটারি চার্জিং কেন্দ্রগুলিতে যেহেতু অনেকটা সময় লাগে তাই ইচ্ছে করলে পুরনো ব্যাটারি রেখে নতুন চার্জ ব্যাটারিও নিয়ে যেতে পারেন গাড়ি চালকরা। তাতে তাদের সময় বাঁচবে। অর্থাৎ শুধু বিদ্যুৎ উৎপাদন নয় পাশাপাশি অন্যান্য ক্ষেত্রেও নতুন করে কাজ শুরু করার কথা ডিভিসি ভেবেছে।

আরেকটি প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি কয়লার খরচ কমাতে ছত্রিশগড়ের একটি সংস্থার সাথে ইতিমধ্যেই তাদের চুক্তি হয়েছে। তারা কয়লার বিকল্প যা কয়লা থেকেই তৈরি হয় কিন্তু কার্বন থাকবে না তেমন অন্তত দশ শতাংশ কয়লা কিনবে ডিভিসি। এর ফলে তাদের বিদ্যুতের তৈরিতে খরচ কমবে এবং কার্বন গ্যাস ও অনেকটা কম হবে । আগামী তিন চার বছরের মধ্যেই ডিভিসি প্রায় ১৬০০মেগাওয়াট সোলার বিদ্যুৎ উৎপাদন করবে। একই সঙ্গে তিনি বলেন ডিভিসির প্রতিবছর বিদ্যুৎ এর চাহিদার পরিমাণ যে বাড়ছে সেটা আমরা ২০৩০ সাল অব্দি নিজেরাই বাজার দেখে একটা হিসেব তৈরি করেছি। সেটাকেই মাথায় রেখে এই উৎপাদন বাড়ানো হচ্ছে। এই মুহূর্তে আমাদের ৬৫৪৪ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা আছে ।

আগামী সাত বছরে তা বেড়ে ১৫ ৯৭৩ মেগাবাইট হবে। পাশাপাশি তিনি বলেন বাংলাদেশে আমাদের উৎপাদিত বিদ্যুৎ প্রতিদিন ৮০০ মেগাওয়াট করে যাচ্ছে। দুর্গাপুরেই বর্তমানে কোন বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে না ডি ভি সিতে , এই নতুন ইউনিটটি হলে আবার দুর্গাপুর তার ঐতিহ্য ফিরে পাবে। এই বিশাল অংকের অর্থ বিনিয়োগের ফলে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে কর্মী নিয়োগ থেকে বাজারের অগ্রগতি ঘটবে বলে তিনি দাবি করেন ।

Leave a Reply