ASANSOL

কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন ৫০ দিন পার করলো, পুলিশ পাহারায় আবার প্রশাসনিক ভবনে ঢুকলেন উপাচার্য, করলেন বৈঠকও

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও দেব ভট্টাচার্যঃ* ৫০ দিনেরও বেশি সময় পার করলো আসানসোলের কাজি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে হওয়া একাংশ অধ্যাপক, অধ্যাপিকা, কর্মী ও পড়ুয়াদের আন্দোলন। তারই মধ্যে বুধবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মতো পুলিশ পাহারায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনে চেম্বারে ঢুকলেন উপাচার্য ডঃ সাধন চক্রবর্তী। বলতে গেলে, তার ঢোকা নিয়ে তেমন কোন অশান্তি বা গন্ডগোল হয়নি। তবে সেই সময় অন্যদিনের মতো এদিনও আন্দোলনকারীরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে ও লবিতে বসেছিলেন। পরে উপাচার্য এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে দাবি করেন যে তিনি চেম্বারে বিশ্ববিদ্যালয় ও অনুমোদিত বেশ কয়েকটি কলেজের বিভিন্ন ক্লাসের সিআর বা ক্লাস রিপ্রেজেনটেটিভদের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে আলোচনা করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য সমস্যা নিয়েও তিনি আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। যদিও, উপাচার্যের এই দাবির পুরোটা আন্দোলনকারীদের তরফে পড়ুয়ারা মানতে চায়নি।


প্রসঙ্গতঃ, গত ১৩ মার্চ থেকে উপাচার্যের বিরুদ্ধে দূর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগ এনে তার পদত্যাগের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে ধর্ণা অবস্থানে বসেন শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস অনুমোদিত অধ্যাপক ও শিক্ষা কর্মী সংগঠনের সদস্যরা। পরে সেই আন্দোলনে সামিল হয় পড়ুয়াদেরও একাংশ। এই আন্দোলনের মাঝে দুবার উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এসে প্রশাসনিক ভবনে ঢোকার চেষ্টা করেন। কিন্তু আন্দোলনকারীদের বাধায় দুবারই তাকে ফিরে যেতে হয়। এই আন্দোলন তোলার তার আবেদন কর্ণপাত করেননি আন্দোলনকারীরা। তিনি আসানসোল উত্তর থানার পুলিশেরও দ্বারস্থ হয়েছিলেন। শেষ পর্যন্ত তিনি এপ্রিল মাসে গোটা পরিস্থিতির কথা বলে কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা করেন। সেই মামলায় হাইকোর্ট প্রশাসনিক ভবনের ৫০ মিটারের বাইরে পদ্ধতি মেনে আন্দোলন করার নির্দেশ দেয়। পাশাপাশি বলা হয়, তারা কোন আধিকারিকদের গতিবিধি নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন না। গোটা বিষয়টি পুলিশকে দেখতেও নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই মতো গত শুক্রবার প্রথমবার কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। তাকে দেখে ব্যাপক স্লোগান দেওয়া হয়। তিনি সেদিন ঘন্টা দুয়েকের মতো বিশ্ববিদ্যালয়ে ছিলেন। শুক্রবারই তিনি বলেনছিলেন, বুধবার এসে বৈঠক করবেন। সেইমতো এদিন তিনি সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন। পুলিশ বাহিনী তাকে প্রশাসনিক ভবনের দোতলায় তার চেম্বারে নিয়ে যায়।


পরে তিনি বলেন, শুক্রবারই বলেছিলাম বুধবার এসে বৈঠক করবো। সেই মতো বেশ কয়েকজন সিআর বা ক্লাস রিপ্রেজেনটেটিভদের সঙ্গে বৈঠক করেছি। কিছু বিভাগের অতিরিক্ত ফি নিয়ে তারা আমায় বলেছে। আমি এই বিষয়ে যে কমিটি আছে, তার সদস্যদের বৈঠক করে একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে আমার কাছে পাঠাতে বলবো। তারপর দ্রুত নিয়ম মেনে যতটা করা যায় করবো। এছাড়াও কিছু বিভাগের ফ্যাকাল্টি ও পরিকাঠামোর সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পাশাপাশি ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ভালো প্লেসমেন্টের বিষয়টি এদিন আমাকে বলা হয়েছে। এই ব্যাপারটি দেখার জন্য যে আধিকারিক আছেন তাকে বলবো। আমি চেষ্টা করছি, যত দ্রুত আগের পরিবেশ ফিরিয়ে আনা যায়।


অন্যদিকে, আন্দোলনকারী পড়ুয়াদের তরফে সাজিত আব্বাস বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সিআর উপাচার্যের সঙ্গে বৈঠকে ছিলেন না। শুনেছি বাইরের কলেজে থেকে কয়েকজন এসেছেন। আমরা আমাদের দাবিতে অনঢ় রয়েছি। গনতান্ত্রিক পদ্ধতি মেনে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো কিছু আধিকারিক বিশ্ববিদ্যালয় নষ্ট করার চেষ্টা করছেন। আমরা তা হতে দেবোনা।

Leave a Reply