RANIGANJ-JAMURIA

মনোনয়ন জমার শেষ দিনে জামুড়িয়া ব্লকে রাজনৈতিক সৌজন্যের নজির , অগ্নিমিত্রা পালকে দেখে ” গোব্যাক ” স্লোগান, দলের কর্মীদের সরিয়ে পাশে তৃনমুল বিধায়ক

বেঙ্গল মিরর, জামুড়িয়া, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পঞ্চায়েত ভোটের জন্য মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিলো বৃহস্পতিবার। এদিনও বাংলার বিভিন্ন জেলার ব্লকে রাজ্যের শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে বিরোধী দলগুলোর অভিযোগের অন্ত নেই।
তারই মধ্যে এদিন পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল মহকুমার জামুড়িয়া ব্লকের বিডিও অফিসে শাসক ও বিরোধী দলের ” রাজনৈতিক সৌজন্য” র নজির সৃষ্টি হলো। আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের সঙ্গে দেখা করে কোন রকম বাধা ও অশান্তি ছাড়াই দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ার ব্যাপারে পাশে থাকার আশ্বাস দিলেন জামুড়িয়ার তৃনমুল কংগ্রেসের বিধায়ক হরেরাম সিং। শাসক দলের বিধায়কের কাছ থেকে এমন ব্যবহার পেয়ে স্বভাবতই খুশি বিজেপি বিধায়ক। পাল্লা বিজেপি বিধায়কও সৌজন্য দেখালেন।


তবে এদিনের সকালের শুরুটা জামুড়িয়া বিডিও অফিসে খুব একটা সুখকর ছিলো না। পূর্ব ঘোষণা মতো এদিন সকাল এগারোটা নাগাদ দলের প্রার্থীদের মনোনয়ন পত্র জমা দেওয়ানোর জন্য জামুড়িয়া বিডিও অফিসে পৌঁছে যান অগ্নিমিত্রা পাল। তার সঙ্গে ছিলেন কুলটির বিজেপি বিধায়ক ডাঃ অজয় পোদ্দার, জেলা সম্পাদক তথা মুখপাত্র বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় সহ অন্য নেতা ও কর্মীরা। সেখানে আগে থেকেই জটলা করেছিলেন জামুড়িয়ার তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মী। কোন গন্ডগোল যাতে না হয় তারজন্য ছিলো পুলিশ বাহিনীও। অগ্নিমিত্রা পালকে দেখে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা ও কর্মীরা ” বহিরাগত দুর হটো” ও “গোব্যাক” স্লোগান দিতে শুরু করেন। গোটা এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। বিজেপির তরফে পাল্টা স্লোগান দেওয়া হয়। পুলিশ দু’পক্ষের মাঝে থেকে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। তখন শাসক দলকে আক্রমন করে অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, আমি যদি এখানে বহিরাগত হই, তাহলে উড়িষ্যায় করমন্ডল এক্সপ্রেসের দূর্ঘটনার সময় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেখানে যান। তিনি সেখানে কি ছিলেন? আসল কথা হলো তৃনমুল কংগ্রেসের কোন সৌজন্যবোধ নেই। আমি একজন নির্বাচিত বিধায়ক ও জনপ্রতিনিধি। সংবিধান আমাকে সব জায়গায় যাওয়ার অধিকার দিয়েছে। আসল কথা আমাকে দেখে তৃনমুল কংগ্রেসের চুলকানি হচ্ছে। ওদের বার্নল লাগাতে হবে।


জামুড়িয়া বিডিও অফিসের কাছে যখন এমন পরিস্থিতি চলছে, তখন দূরে দলের কার্যালয়ে ছিলেন তৃনমুল কংগ্রেসের বিধায়ক হরেরাম সিং। সেখানে তিনি বলেন, অগ্নিমিত্রা পাল কি বলছেন, আমার জানা নেই। আমি কিছু বলতেও চাইনা। এতটুকু বলতে পারি, বিজেপির নির্বাচনে লড়াই করার মতো কেউ নেই। আমরা কাউকে বাধা দিইনি। অভিষেক বন্দোপাধ্যায়ের নির্দেশ আছে। আমি প্রতিদিন সকাল এগারোটা থেকে বিকেল তিনটে পর্যন্ত বসে আছি। যারা মনোনয়ন পত্র জমা দিতে পারছেন না, তারা আসুক ব্যবস্থা করে দেবো।


এরপর দলের নেতা ও কর্মীদেরকে নিয়ে হেঁটে অগ্নিমিত্রা পাল যেখানে ছিলেন, সেখানে আসেন হরেরাম সিং। দুজনেই মুখোমুখি হতে সৌজন্য বিনিময় করেন। সেখানে হরেরাম সিং বলেন, যারা স্লোগান দিয়েছে, তাদের বকুনি দিয়ে সরিয়ে দিয়েছি। আমরা চাই সবাই মনোনয়ন পত্র জমা দিক। যারা কাজ করেছে, তাদেরকে মানুষ ভোট দিক। রাজনীতির ময়দানে লড়াই হোক। আর কেউ কিছু করবে না বলে তিনি বিজেপি বিধায়ককে আশ্বাস দেন। পাল্টা অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, উনি আমার বিধানসভার ” কলিগ “। দেখে ভালো লাগছে। আমিও চাই রাজনীতির ময়দানে মুখোমুখি লড়াই হোক। মানুষেরা শান্তিতে ভোট দিক।
এরপরই এলাকায় উত্তেজনা কমে।

Leave a Reply