জেলা সভাপতির সামনেই শাসক দলে কোন্দল, পঞ্চায়েতের আসন নিয়ে আসানসোলের কার্যালয়ে ধুন্ধুমার, বচসা, হাতাহাতি
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়ঃ এবার পশ্চিম বর্ধমান জেলা। পঞ্চায়েত ভোটে প্রার্থী হওয়া ও আসন বন্টনকে নিয়ে ধুন্ধুমার কাণ্ড ঘটল শনিবার রাতে তৃণমূল কংগ্রেসের আসানসোল শহরে জিটি রোডের রাহালেন মোড় সংলগ্ন জেলা কার্যালয়। একবারে জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সামনেই তৃণমূল কংগ্রেসের দুপক্ষ প্রথমে বচসা ও পরে হাতাহাতিতে জড়িয়ে পড়ে। দু’পক্ষের এই বিবাদের মাঝে আক্রান্ত হন শাসক দলের সংখ্যালঘু সেলের নেতা শাহিদ পারভেজ। আর এই ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয় গোটা এলাকায়। খবর পেয়ে শাসক দলের জেলা কার্যালয়ের ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকা আসানসোল দক্ষিণ থানা থেকে পুলিশ ছুটে আসে। শেষ পর্যন্ত বেশ কিছুক্ষুনের চেষ্টায় পুলিশের হস্তক্ষেপে শাসক দলের দুপক্ষকে সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।




জানা গেছে, এই ঘটনার সূত্রপাত আসানসোল দক্ষিণ বিধানসভার রানিগঞ্জ ব্লকের জেমারি গ্রাম পঞ্চায়েতের আসন বন্টন নিয়ে। শনিবার রাতে আসানসোলে জেলা কার্যালয়ে দলীয় প্রতীক দেওয়ার জন্য রানিগঞ্জের ঐ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থীদের ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেখানে আসন বন্টন নিয়ে রানিগঞ্জ গ্রামীণ এলাকার তৃণমূল ব্লক সভাপতি দেবনারায়ণ দাসের সঙ্গে দলের শীর্ষ নেতাদের সামনেই বচসায় জড়িয়ে পড়ে রানিগঞ্জের গ্রামীণ এলাকার আরেক তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অর্জুন সিং। জানা যায়, অর্জুন সিং ও তার অনুগামীরা যে আসন পেয়েছে তা তাদের মনঃপুত হয়নি বলেই তারা এদিন জেলা সভাপতির কাছে নালিশ জানাতে আসেন। আর তখনই তাদের সঙ্গে সেখানে দেবনারায়ণ দাসের সঙ্গে প্রথমে বচসা ও কথা কাটাকাটি শুরু হয় ও পরে তা হাতাহাতি পর্যন্ত যায়। জেলা কার্যালয়ের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পরিস্থিতি এতটাই বাড়ে যে দলের জেলা কার্যালয়ের ভেতর থেকে বাইরে এসে রাহালেন মোড়ে জিটি রোডে বিবাদে জড়িয়ে পড়া দুপক্ষের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। খবর পেয়ে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বে থাকা আসানসোল দক্ষিণ থানা থেকে পুলিশ ছুটে আসে। পুলিশ দুপক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। এদিকে এই ঘটনার মাঝে পড়ে আসানসোলের তৃণমূল কংগ্রেসের সংখ্যালঘু সেলের নেতা জেলা কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা শাহিদ পারভেজ আক্রান্ত হন বলে খবর।
এই ঘটনার কথা স্বীকার করেন তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, দলের সবাই টিকিট চায় ভোটে লড়াইয়ে জন্য। কিন্তু, তা তো সম্ভব নয়। কারণ আসন সীমাবদ্ধ। তাই সবাইকে টিকিট দেওয়া যায় না। ফলে কেউ ধর্ণা দিচ্ছে। অবস্থান করছে। কেউ আবার এসে কান্নাকাটি করছে। তিনি আরো বলেন, আমি দলের মধ্যে সবাইকে বোঝাবো। পঞ্চায়েত নির্বাচনে সবাই দলের হয়েই লড়াই করবে। দেওয়াল লেখা শেষ হয়ে গেলেই এইসব থেমে যাবে বলে দাবি করেছেন নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী। তিনি বলেন, এই পশ্চিম বর্ধমান জেলায় মনোনয়ন পর্বে শান্তিতেই মিটেছে। জেলার বেশ কিছু গ্রাম পঞ্চায়েতে দল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় পেয়েছে। পাশাপাশি অনেক আসনেও জয় এসেছে।
বিরোধীরা অবশ্য শনিবার রাতের ঘটনা নিয়ে কটাক্ষ করে বলছেন, এই তো শুরু। আরো হবে।