বার্ণপুরে তৃনমুল কংগ্রেসের গোষ্ঠী কোন্দল প্রকাশ্যে, অনুষ্ঠানে ডাক না পেয়ে ক্ষুব্ধ কাউন্সিলর,আক্রমণ দলের বিধায়ককে
বেঙ্গল মিরর, বার্ণপুর ও আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল পুরনিগমের ৭৮ নং ওয়ার্ড বার্ণপুর শহরের তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর হলেন অশোক রুদ্র। অথচ তাকেই নাকি অনুষ্ঠানে ডাকা হয়না। আর তাতেই ক্ষুব্ধ শাসক দলের এই কাউন্সিলর সরাসরি আক্রমণ করে বসলেন রানিগঞ্জ বিধানসভার দলেরই বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়কে।
মঙ্গলবার দুপুরে বার্ণপুরে নিজের কার্যালয়ে এক সাংবাদিক সম্মেলন করে তাপসবাবুর বিরুদ্ধে তোপ দাগেন শাসক দলের এই কাউন্সিলর। তাপস বন্দোপাধ্যায় অবশ্য দলের কাউন্সিলারকে পাল্টা আক্রমণের পথে হাঁটেননি। তিনি গোটা বিষয়টি ” শিশুসুলভ বা চাইল্ডলিস ” বলে উড়িয়ে দিয়েছেন। কোন রকম গুরুত্ব বা কড়া প্রতিক্রিয়া কোনটাই তাপস বন্দোপাধ্যায় দিতে চাননি।
তবে সাংবাদিক সম্মেলনে সরাসরি কাউন্সিলার দাবি করেন তিনি গোটা বিষয়টি আসানসোল পুরনিগমের মেয়র বিধান উপাধ্যায় ও পশ্চিম বর্ধমান জেলার দলের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীকে জানিয়েছেন।তারপরই ওয়ার্ডের মানুষ ও এলাকায় দলের কর্মীদের কথাতেই গোটা বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছেন।
স্বাভাবিক ভাবেই কাউন্সিলারের এহেন মন্তব্যে শাসক দল যে অস্বস্তিতে পড়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা।যেখানে কাউন্সিলারই সরাসরি বিধায়কের বিরুদ্ধে বার্ণপুরে পাল্টা গোষ্ঠী ও উপদল তৈরীর অভিযোগ এনেছেন।
বিরোধী দল বিজেপি শাসক দলের বিধায়ক ও কাউন্সিলারের দ্বন্দ্ব নিয়ে কটাক্ষ করেছে।
অশোক রুদ্র যে ৭৮ নং ওয়ার্ডের সেই এলাকা আসানসোল দক্ষিণ বিধান সভার মধ্যে পড়ে। এই বিধান সভা শাসক দলের হাতে নেই। এর বিধায়ক হলেন বিজেপির অগ্নিমিত্রা পাল। তাপস বন্দোপাধ্যায় ২০২১ সালের আগে এই বিধান সভার বিধায়ক ছিলেন। ২০২১ এ দল তাকে সরিয়ে রানিগঞ্জের টিকিট দেয়। তিনি আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান।
অন্যদিকে, অশোক রুদ্র প্রাক্তন শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের খুবই ঘনিষ্ঠ। তিনি শাসক দলের প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি। সম্প্রতি দল তাকে এই দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়। এবারের আসানসোল পুরনিগম নির্বাচনে প্রথমবার তিনি জিতে কাউন্সিলর হয়েছেন।
এদিন সাংবাদিকের অশোক রুদ্র বলেন, তাপস বন্দোপাধ্যায় আমার এলাকায় এসে অনুষ্ঠান করছেন। অথচ আমাকে সেখানে ডাকা হচ্ছেনা। উদ্যোক্তাদের তাপস বন্দোপাধ্যায়ই বলছেন, আমাকে যেন ডাকা না হয়। এটা কেমন কথা? এখানে বার্ণপুর উৎসব করা হচ্ছে। তাতে বার্ণপুরের কেউ নেই। বেশ কিছুদিন ধরেই এটা চলছে। আমি সব জায়গায় গোটা বিষয়টি বলেছি। তিনি আরো বলেন, এরপর এমন কিছু হলে, তার জন্য কোন অনভিপ্রেত ঘটনা ঘটলে, তারজন্য দায়ী থাকবেন তাপস বন্দোপাধ্যায়।
দলেরই কাউন্সিলরের এমন অভিযোগ ও মন্তব্যে তাপস বন্দোপাধ্যায় বলেন, এইসবের প্রতিক্রিয়া দিতে রুচিতে বাধে। আমাকে কেউ যদি কোথাও কোন অনুষ্ঠানে ডাকে তো, আমি কি করবো। বার্ণপুরের মানুষেরা আমাকে ভালোবাসেন। তারা ডাকেন। আমি তো রানিগঞ্জের বিধায়ক। দিনে সেখানে ১০ টা অনুষ্ঠান হয়। আমাকে একটায় ডাকে। বাকি নটায় ডাকেনা। তাহলে আমি কি তাদেরকে গিয়ে বলবো, আমায় কেন ডাকেন না? কাউকে ডাকা, না ডাকা, সেটা তো তাদের ব্যাপার। তিনি কি দলের উচ্চ নেতৃত্বকে জানাবেন? জবাবে তিনি বলেন, এতো নিচু স্তরের রাজনীতি আমি করিনা।