ASANSOL

দ্বিতীয়বারের জন্য জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে বিশ্বনাথ বাউরি, সহসভাধিপতি বিষ্ণুদেও নুনিয়া

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ* ২০১৭ সালের জুন থেকে ২০২৩ এর আগষ্ট মাস। এই ৬ বছরের ব্যবধানে দ্বিতীয় বারের জন্য পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে প্রত্যাবর্তন হলো বিশ্বনাথ বাউরির। বুধবার দুপুরে শপথ গ্রহণের পরে বিদায়ী সভাধিপতি স্ত্রী সুভদ্রা বাউরির হাত থেকে আগামী ৫ বছরের জন্য জেলা পরিষদের ব্যাটন তুলে নিলেন বিশ্বনাথ বাউরি। তার সঙ্গে এদিন সহকারী বা সহসভাধিপতি হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন বিষ্ণুদেও নুনিয়া।



এদিন আসানসোল আদালত সংলগ্ন জেলা পরিষদ ভবন প্রাঙ্গনে নবনির্বাচিত জেলা পরিষদের ১৮ সদস্যর শপথ গ্রহণ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিলো। পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদের উপস্থিতিতে বিশ্বনাথ বাউরি, বিষ্ণুদেও নুনিয়া, মহঃ আরমান সহ ১৭ সদস্যকে শপথ বাক্য পাঠ করান অতিরিক্ত জেলাশাসক সঞ্জয় পাল। কালোবরণ মন্ডল এদিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে গরহাজির ছিলেন। কেন এই গরহাজিরা তা অবশ্য শাসক দলের তরফে জানা যায়নি। কালোবরণ মন্ডলের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এদিনের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে অনুপস্থিত ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় ও আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান তথা রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়।



এদিনের অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন পান্ডবেশ্বরের বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী, জামুড়িয়ার বিধায়ক হরেরাম সিং, আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র তথা আইএনটিটিইউসির জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক সহ অন্যান্যরা। এছাড়াও ছিলেন জেলা পরিষদের দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলাশাসক প্রশান্ত রাজ শুক্লা, ডিপিআরডিও তমোজিৎ চক্রবর্তী।



দায়িত্ব নিয়ে নতুন জেলার সভাধিপতি ও সহসভাধিপতি বলেন, দল যে কাজ দিলো, তা যথাযথ ভাবে পালন করার চেষ্টা করবো। ব্লকের মানুষেরা যাতে সরকারি পরিসেবা ঠিক মতো পান তা দেখবো। সভাধিপতি আরো বলেন, কি ভাবে জেলা পরিষদের আয় বাড়ানো যায়, তা দেখা হবে। তারজন্য জেলা পরিষদের যেসব অব্যবহৃত সম্পত্তি রয়েছে, তা ব্যবহার করা যায় কি না, তা আলোচনা করা হবে।

তৃণমূল কংগ্রেসের জেলা সভাপতি নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী এদিন বলেন, জেলা পরিষদের নতুন বোর্ড স্বচ্ছ প্রশাসন উপহার দেবে। সবাইকে সঙ্গে নিয়ে গোটা এলাকায় উন্নয়নের কাজ করা হবে। আগামী দুদিনের মধ্যেই কর্মাধ্যক্ষদের বেছে নেওয়া হবে। আগামী সপ্তাহে তারা প্রথম বৈঠক করবেন।

প্রসঙ্গতঃ, পঞ্চায়েত নির্বাচন শেষ হওয়ার পর থেকেই কে হবেন পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা পরিষদের সভাধিপতি ও সহসভাধিপতি তা নিয়ে জল্পনা বেশ কয়েকদিন ধরে চলছিলো। বেশ কয়েকজন এই দুই পদের দৌড়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা কিছুটা হলেও আছে, এমন ভেবে বিশ্বনাথ বাউরিকে করার সিদ্ধান্ত নেয় তৃনমুল নেতৃত্ব । অন্যদিকে, তার সহকারী পদে দায়িত্ব দেওয়া হয় বিষ্ণুদেও নুনিয়াকে।

প্রসঙ্গতঃ, পশ্চিম বর্ধমান জেলার প্রথম জেলা পরিষদ গঠিত হয়েছিলো ২০১৭ সালে। সেই বছরের ১৯ জুন থেকে ২০১৮ সালের ৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জেলা পরিষদের প্রথম সভাধিপতির দায়িত্বে ছিলেন। জেলা গঠনের পরে পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি পদটি তফসিলি জাতির জন্য সংরক্ষিত ছিল। তাতে বসেন রানিগঞ্জের বিশ্বনাথ বাউরি। এর পরে, ২০১৮ সালে এই পদটি তফসিলি জাতি মহিলার জন্য সংরক্ষিত ছিল। তখন এই পদে বসেন বিশ্বনাথ বাউরির স্ত্রী সুভদ্রা বাউরি। বিশ্বনাথ বাউরিকে গত পাঁচ বছর তার সহযোগিতার জন্য মেন্টর পদে রাখা হয়েছিল। কিন্তু এবার এই পদটি অসংরক্ষিত ছিল। কিন্তু ভোট ব্যাঙ্কের কথা মাথায় রেখে শাসক দলের জেলা নেতৃত্ব আবার বিশ্বনাথের হাতে লাগাম তুলে দিল বলে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। উল্লেখ্য, এবারের পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদের ১৮ আসন শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস জিতেছে।

Leave a Reply