ASANSOL

আসানসোল জেলা হাসপাতাল : ” রিসেপশনিস্ট ” র চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগ, চাঞ্চল্য

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ আসানসোল জেলা হাসপাতালে ” রিসেপশনিস্ট” র পদে চাকরি আছে। দুই যুবতীকে এমনই প্রলোভন দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগ উঠলো একটি বেসরকারি সংস্থার বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার সকালে ঐ দুই যুবতী একটি চিঠি নিয়ে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ঐ চাকরির জন্য ইন্টারভিউ দিতে এলে এই প্রতারণার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। স্বাভাবিক ভাবেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। আসানসোল জেলা হাসপাতালের তরফে ঐ দুই যুবতীকে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে থানায় অভিযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


জানা গেছে, রানিগঞ্জ থানার গীর্জাপাড়ার রাজপাড়ার বাসিন্দা ঐ দুই যুবতীর নাম হলো সোমা জয়সওয়ারা ও নেহা জয়সওয়ারা। কোম্পানির তরফে তাদের কাছ থেকে এই চাকরির জন্য ৪ ও ৫ হাজার টাকা অনলাইনের মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে বলে এদিন তারা দাবি করেন।
জানা গেছে, ঐ দুই যুবতীকে এই চাকরির জন্য গত ১২ আগষ্ট সিএলআর ফেসিলিটি সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি বেসরকারি কোম্পানি থেকে ” লেটার অফ ইনটেন্ট ” দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে ঐ কোম্পানির কর্পোরেট অফিস হিসেবে মহারাষ্ট্রের পুনের একটি ঠিকানা উল্লেখ করা হয়েছে। পাশাপাশি কোম্পানির ব্রাঞ্চ অফিস হিসেবে এই রাজ্যের দক্ষিণ ২৪ পরগণার ডায়মন্ডহারবারের একটি ঠিকানা লেখা আছে। তবে যে চিঠি ডাক মারফত দুই যুবতীর কাছে এসেছে, তা মেদিনীপুরের একটি পোস্ট অফিস থেকে স্পিড পোস্টে পাঠানো হয়েছে।


এই চিঠিতে তাদের ” রিসেপশনিস্ট ” পদে যোগদান বা জয়েনিং ডেট আগামী ১ সেপ্টেম্বর বলা হয়েছে। মাসিক বেতন ১৫ হাজার টাকা লেখার পাশাপাশি তারা কি কি সুবিধা পাবেন সহ একাধিক তথ্য দেওয়া হয়েছে। কাজে যোগ দেওয়ার আগে, তাদেরকে ইন্টারভিউ নেওয়া জন্য মঙ্গলবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে আসতে বলা হয়। সেই মতো এদিন সকালে তারা আসানসোল জেলা হাসপাতালে আসেন। তারা এমারজেন্সি বিভাগের কাছে ফেসিলিটি ম্যানেজারের অফিসে গিয়ে ইন্টারভিউয়ের কথা বলেন ও ঐ চিঠি দেখান। চিঠি দেখেই অফিসের কর্মীরা বুঝতে পারেন যে, সব ভুয়ো। কেন না, সরকারি হাসপাতালে এই রকমভাবে চাকরি হয়না। খবর পেয়ে ফেসিলিটি ম্যানেজারের অফিসে আসেন হাসপাতালের ডেপুটি সুপার কঙ্কন রায়। তিনি সব শুনে ঐ দুই যুবতীকে বলেন, তারা প্রতারিত হয়েছেন। সবকিছুই জাল বা ভুয়ো। তারা যেন গোটা বিষয়টি জানিয়ে থানায় অভিযোগ করেন। পুলিশই ব্যবস্থা নেবে।


পরে ঐ দুই যুবতী বলেন, সোশাল মিডিয়ায় থেকে তারা ঐ কোম্পানির কথা জানতে পারেন ১৫ দিন আগে। তখনই তাদেরকে এই চাকরির অফার দেওয়া হয়। পরে মোবাইল ফোনে কোম্পানির লোকেরা আমাদের সঙ্গে কথা বলে। অনলাইনে ব্যাঙ্ক একাউন্টে আমরা টাকা পাঠাই। বলা হয়েছিলো মাসে ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হবে, সঙ্গে অন্য সুবিধাও। দিন সাতেক আগে ডাক মারফত এই চিঠি আসে। সোমবার ফোন করে আমাদেরকে ইন্টারভিউ দিতে জেলা হাসপাতালে আসতে বলা হয়েছিলো। সেই মতো আমরা এদিন এসে জানতে পারি যে, গোটা বিষয়টি ভুয়ো। আমরা প্রতারিত হয়েছি। যে সব নম্বর থেকে আমাদেরকে ফোন করা হয়েছিলো, সেগুলো ব্লক করে দেওয়া হয়েছে। দুই যুবতী আরো বলেন, আমরা পরিবারের সঙ্গে কথা বলে থানায়অভিযোগ দায়ের করবো।
জেলা হাসপাতালের সুপার ডাঃ নিখিল চন্দ্র দাস বলেন, আমরা বিষয়টি পুরো জানা নেই। ডেপুটি সুপার দেখেছেন। তবে এতটুকু বলতে পারি, এইভাবে সরকারি হাসপাতালে চাকরি পাওয়া যায়না। যুবক যুবতীরা যেন এই ব্যাপারে সতর্ক থাকেন।

Leave a Reply