ASANSOL

চিকিৎসকের এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে গুগুল সার্চ করে হাসপাতালের নম্বরে ফোন, প্রতারণার শিকার এক ব্যক্তি, একাউন্ট থেকে উধাও প্রায় ৬৪ হাজার টাকা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ স্ত্রীকে চিকিৎসক দেখানোর জন্য এ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে গুগুল সার্চ করে পাওয়া নম্বরে ফোন করে প্রতারণার শিকার হলেন আসানসোলের এক ব্যক্তি। ফোন করার তিনদিন পরে ঐ ব্যক্তির ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে উধাও হয়ে গেলো প্রায় ৬৪ হাজার টাকা। আসানসোল দক্ষিণ থানার সাতাইশার বাসিন্দা এসকে সিং নামে ঐ ব্যক্তির একাউন্ট থেকে ৬৩, ৯৯৯ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। এই ঘটনার কথা জানিয়ে আসানসোল সাইবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই ভিত্তিতে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।


জানা গেছে, গত ১৮ আগষ্ট সকালে সাড়ে নটা নাগাদ আসানসোলের সাতাইশার এসকে সিং স্ত্রীকে চিকিৎসক দেখানো জন্য চিকিৎসকের এপয়েন্টমেন্ট নিতে দুর্গাপুরের এক বেসরকারি হাসপাতালে নম্বর পেতে গুগল সার্চ করেন। তাতে তিনি ফোন নম্বর পান। সেখানে তিনি ফোন করেন। অন্য প্রান্তে ফোন ধরা ব্যক্তি তার কাছে জানতে চান, কোন চিকিৎসককে দেখাবেন ইত্যাদী। এরপর শ্রীসিংয়ের মোবাইলে একটা লিংক পাঠানো হয়। তাকে বলা হয় ঐ লিংকে একটা ফরম্যাট আছে। চিকিৎসক দেখতে হলে ঐ ফরম্যাট ফিলআপ করে পাঠাতে হবে। ফরমেটে ইউপিআই নম্বর লিখে দিতে বলা হয়েছিল। একইসঙ্গে ১০ টাকা অনলাইন দিতে হবে রেজিস্ট্রেশনের জন্য। সেই মতো শ্রীসিং তাই করেন। কিন্তু ১০ টাকার পরিবর্তে তিনি ১ টাকা পাঠান। পরে তিনি লক্ষ্য করেন যে, ঐ ১ টাকা কেটে নেওয়া হয়েছে। পরক্ষণেই তার মনে হয় যে, গোটা বিষয়টি ভুয়ো। তিনি কোন প্রতারণা চক্রের ফাঁদে পড়েছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি তার মোবাইল ফোন থেকে সবকিছু ডিলিট করে দেন। শ্রীসিং বলেন, এরপর আমাকে ঐ ফোন নম্বর থেকে কমপক্ষে সাতবার ফোন করা হয়েছে। কিন্তু আমি ফোন ধরিনি। তারপর আর কিছু হয়নি।


কিন্তু তিনদিন পরে ২১ আগষ্ট সোমবার বিকেল ৪.৩৫ মিনিটে শ্রীসিংয়ের মোবাইলে প্রথম একটি ম্যাসেজ আছে। তাতে তিনি দেখেন, তার ব্যাঙ্ক একাউন্ট থেকে ৪৯, ৯৯৯ টাকা কাটা হয়েছে। তা নিয়ে কিছু বুঝে উঠার আগেই তার কাছে আরো দুটি ম্যাসেজ আছে। তাতে দেখা যায় আরো ১ টাকা ও ১৩, ৯৯৯ টাকা দু’দফায় কাটা হয়েছে। আর তার একাউন্টে পড়ে আছে মাত্র ৪৩৬ টাকা। গোটা বিষয়টি জানার পরেই তিনি রাতেই আসানসোল সাইবার অপরাধ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পরে ব্যাঙ্ক কতৃপক্ষকেও অবহিত করেন। তার আগে অবশ্য তিনি ব্যাংকের টোল ফ্রি নাম্বারে ফোনও করে ছিলেন কিন্তু সেখান থেকে কোন উত্তর পাননি। শ্রীসিং বুঝতে পারছেন না যে, কি করে এটা সম্ভব? কেননা, যে লিংক পাঠানো হয়েছিলো, তাতো তিনি তিনদিন আগে ডিলিট করে দিয়েছেন। কোনকিছু শেয়ার করেননি। তাহলে কি করে টাকা তোলা হলো?
এই বিষয়ে সাইবার বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ঐ ব্যক্তি লিংক ডিলিট করেছেন। আর ফোন করেননি বা ধরেননি। কিন্তু তিনি যে ১ টাকা পাঠিয়েছিলেন, তার ডকুমেন্ট প্রতারণা চক্রের কাছে থেকে যায়। তারা তিনদিন দেখার পরে, কোনভাবে কোন এ্যাপস্ ব্যবহার করে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
অভিযোগ প্রসঙ্গে পুলিশ জানায়, তদন্ত শুরু করা হয়েছে।

Leave a Reply