ASANSOL-BURNPUR

বার্ণপুর ইস্কো হাসপাতালে ভাঙচুর, রোগী মৃত্যুতে চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ, ধৃত ১

বেঙ্গল মিরর, বার্ণপুর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, দেব ভট্টাচার্য ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরের ইস্কো বা সেইল আইএসপি হাসপাতালে এক রোগীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে অন ডিউটি এক চিকিৎসককে মারধর ও হাসপাতালে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটলো। রবিবার সন্ধ্যায় হওয়া এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। ইস্কো হাসপাতালের ডেপুটি সিএমও ডাঃ বিশ্বজিৎ মন্ডলের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে হিরাপুর থানার পুলিশ রবিবার রাতেই একটি এফআইআর করে। তার ভিত্তিতে হিরাপুর থানার পুলিশ রাতেই এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ বিমল প্রসাদ নামে একজনকে গ্রেফতার করে। বার্ণপুরের আপার রোডের বাসিন্দা ধৃতর বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির একাধিক ধারায় মামলা করে। সোমবার সকালে ধৃতকে আসানসোল আদালতে পাঠানো হলে, তার জামিন হয়।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হিরাপুর থানার বার্ণপুরের আপার রোডের বাসিন্দা অশোক রজক (৬৫) নামে ইস্কো কারখানার অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মীকে অসুস্থ অবস্থায় দুদিন আগে তার ছেলে ইস্কো হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসেন। পরিবারের অভিযোগ, সেদিন হাসপাতালের চিকিৎসক তাকে হাসপাতালে ভর্তি না করে পরীক্ষা করে শুধু ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেন। পরিবারের সদস্যদের দাবি, সেই সময় অশোকবাবুর শারীরিক অবস্থা ভালো আমাদের দেখে মনে হচ্ছিলো না। তাই আমরা তাকে হাসপাতালে ভর্তি করে পুরো চিকিৎসা করা হোক বলে চিকিৎসক বলেছিলাম। কিন্তু তাদের কোন কথা শোনা হয়নি বলে অভিযোগ পরিবারের সদস্যদের ।


এরপর রবিবার বিকেলে বাড়িতে থাকার সময় অশোক রজকের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তাকে বিকেলেই বাড়ির লোকেরা ইস্কো হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে আসেন। তখন হাসপাতালের অন ডিউটি বা কর্তব্যরত চিকিৎসক গৌরব দেওঘরিয়া তাকে পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। তখন তার পরিবারের সদস্যরা বলেন, দুদিন আগে যখন অশোকবাবুকে হাসপাতালে আনা হয়েছিল তখন তাকে ভর্তি করলে তিনি বেঁচে যেতেন। এরপর তার পরিবারের সদস্য ও তাদের সঙ্গে থাকা আত্মীয় পরিজন ও এলাকার বাসিন্দারা উত্তেজিত হয়ে পড়েন। এরপর হাসপাতালে ভাঙচুর শুরু হয়। বিশেষ করে হাসপাতালে ঢোকার যে কাঁচের গেট বা গ্লাস ডোর আছে সেগুলো ভাঙচুর করা হয়। অভিযোগ, তারা তখন কর্তব্যরত চিকিৎসক গৌরব দেওঘরিয়াকে মারধর করেন। তিনি কোনমতে উন্মত্ত জনতার হাত থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে সেখান থেকে চলে যান।

ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে পৌঁছান হাসপাতালের চিফ মেডিকেল অফিসার অফ হেলথ বা সিএমও ডাঃ সুশান্ত সিনহা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে হিরাপুর থানার পুলিশও আসে। রাতেই ইস্কো হাসপাতালের ডেপুটি সিএমও ডাঃ বিশ্বজিৎ মন্ডল গোটা ঘটনাটি জানিয়ে হিরাপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। ঘটনার পরে পুলিশ তিনজনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তারমধ্যে বিমল প্রসাদ নামে একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করে।
হিরাপুর থানার পুলিশ জানায়, হাসপাতাল কতৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে সরকারি সম্পত্তি হিসেবে হাসপাতাল ভাঙচুর ও চিকিৎসককে মারধর সহ একাধিক ধারায় মামলা করে একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Leave a Reply