ASANSOL

আসানসোল এলাকায় ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত , মোকাবিলায় রুপরেখা তৈরিতে জেলাশাসক, মেয়র ও সিএমওএইচের উপস্থিতিতে জরুরি বৈঠক

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ( Asansol News Today ) পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল পুরনিগম এলাকায় ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত। আরো ভালো করে বললে, আসানসোল পুরনিগমের ৪ ও ৫ নং বোরোর অধীন ওয়ার্ডগুলোতে সবচেয়ে বেশি চোখ রাঙাচ্ছে এই ডেঙ্গু। সবমিলিয়ে ওয়ার্ডের সংখ্যা ১৪ টি। এমন অবস্থায় এই ডেঙ্গু মোকাবিলায় আগামী ১৫ দিন টার্গেট বা লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে। সামনেই দূর্গাপুজো সহ উৎসবের মরশুম আসছে। এই ১৫ দিনের জন্য একটা রুপরেখা তৈরি করতে মঙ্গলবার সকালে আসানসোল পুরনিগমের মুখোমুখি হলে পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসনের তরফে একটি জরুরি বৈঠক করা হয়। সেই বৈঠকে ছিলেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট ( ডিএম) পোন্নাবলম এস, মেয়র বিধান উপাধ্যায় ও জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান, দুই ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমুল হক ও চেয়ারম্যান অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। আসানসোল পুরনিগমের বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর, মেয়র পারিষদ, বোরো চেয়ারম্যান ও স্বাস্থ্য এবং স্যানিটেশন বিভাগের আধিকারিকদের এই বৈঠকে ডাকা হয়েছিলো। সকাল সাড়ে এগারোটার পরে শুরু হওয়া এই বৈঠক দেড় ঘন্টারও বেশি সময় ধরে চলে। এই বৈঠকে ডেঙ্গুর বাড়বাড়ন্ত ও তা কি ভাবে মোকাবিলা করা হবে, সেই সম্পর্কে কাউন্সিলারদের অবহিত করা হয়েছে। তাদেরকে নিজের নিজের ওয়ার্ডে আরো বেশি করে নজরদারি করতে বলা হয়েছে।


মঙ্গলবার দুপুরে এই বৈঠকের পরে মেয়র বিধান উপাধ্যায় বলেন, এখনো পর্যন্ত আসানসোল পুরনিগম এলাকায় ৫২৫ জন এই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছেন। গত কয়েকদিনের মধ্যে মৃত্যুর কোন ঘটনা ঘটেনি। দুদিন আগেই আসানসোল পুরনিগমের তরফে সংশ্লিষ্ট সব দপ্তরের সঙ্গে তিনটি বৈঠক করা হয়েছে। এদিনের বৈঠকটি জেলাশাসকের কথায় জরুরি ভিত্তিতে ডাকা হয়েছে। সামনেই পুজো বা উৎসবের মরশুম। তাই আসানসোলের মানুষেরা যাতে আনন্দের সঙ্গে তা উপভোগ করতে পারেন তারজন্য এখন থেকেই যুদ্ধকালীন তৎপরতায় সব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। আসানসোল পুরনিগমের ৪ ও ৫ বোরোর অধীন ওয়ার্ডগুলির পরিস্থিতি যথেষ্টই উদ্বেগ জনক। সেই ওয়ার্ডগুলির পাশাপাশি সব ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের সতর্ক করা হয়েছে। মেয়র আরো বলেন, ১০৬ টি ওয়ার্ডে দুটি করে টিম কাজ করছে। তাদের কাজের দেখভাল করছে সুপারভাইজাররা। সবমিলিয়ে ৯৩৯ জন কর্মীরা এই কাজে রয়েছেন। কর্মীদের সংখ্যা কম রয়েছে। তাও যে ওয়ার্ডে ডেঙ্গু আক্রান্তর সংখ্যা বেশি সেখানে বেশি করে কর্মী দেওয়া হয়েছে। তিনি আরো বলেন, ১৪৪ টি নোটিশ এখনো পর্যন্ত বাড়ি ও জমির মালিকদের দেওয়া হয়েছে। এইসব বাড়ি ও জমি অব্যবহৃত অবস্থায় রয়েছে। পুরনিগমের ৫ টি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে রক্ত পরীক্ষা বিনামূল্যে করা হচ্ছে। তিনি সংবাদমাধ্যমের সাহায্যে পুরবাসীদের কাছে আবেদন করে বলেন, প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দপ্তরের নির্দেশ মতো চলুন। সচেতন হন। কোথাও জল জমতে দেবেন না।


জেলাশাসক বলেন, আগামী ১৫ দিনকে টার্গেট করে প্রয়োজনীয় কাজ করার একটা রুপরেখা এদিনের বৈঠকে আলোচনা করে তৈরি করা হয়েছে। সব দপ্তরকে নিয়ে এই কাজ করা হবে। সবাই নিজেদের মতো করে কাজ করবেন। এই সময়ে প্রতি বছরই ডেঙ্গুর প্রকোপ দেখা যায়। তবে এই বছরটা কিছুটা বেশি। তাই সতর্কতা মুলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।
পশ্চিম বর্ধমান জেলা স্বাস্থ্য দপ্তরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা সিএমওএইচ ডাঃ ইউনুস খান বলেন, আসানসোল পুরনিগম এলাকায় ঠিক এই মুহুর্তে গড়ে প্রতিদিন ১৫ জনের মতো ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই জেলায় এই মুহুর্তে আসানসোল পুরনিগম এলাকায় ডেঙ্গুর প্রকোপ বেশি। স্বাস্থ্য দপ্তর প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিয়েছে।

Leave a Reply