ASANSOL

আসানসোলে প্রথম দূর্গাপুজো কার্নিভাল উৎসাহ ও সাড়ম্বরের সঙ্গে অংশ নিলো ১৪ টি ক্লাব

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার শহর আসানসোলে বৃহস্পতিবার দ্বাদশীর দিন বিকেলে প্রথম বার ” দূর্গাপুজো কার্নিভাল ২০২৩ ” আয়োজন করা হয়। কার্নিভালের জন্য মুল মঞ্চ তৈরি করা হয়েছিলো শহরের জিটি রোডের বিএনআর মোড় ও ভগৎ সিং মোড়ের ঠিক মাঝখানে। কার্নিভালের রুট নির্দিষ্ট করা হয়েছিলো রবীন্দ্র ভবনের সামনের রাস্তা হয়ে জিটি রোড দিয়ে ভগৎ সিং মোড় পর্যন্ত। প্রথমবারের এই কার্নিভালে আসানসোল মহকুমার বিভিন্ন শহরের মোট ১৪ টি দূর্গাপুজো কমিটি তথা অংশ নেয়। সরকারি ভাবে আয়োজন করা এই দূর্গাপুজো কার্নিভালের প্রদীপ জ্বালিয়ে ঠিক বিকেল চারটের সময় উদ্বোধন হয়।

উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের আইন ও শ্রম মন্ত্রী মলয় ঘটক, আসানসোলের সাংসদ শত্রুঘ্ন সিনহা, পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসক পোন্নাবলম এস, আসানসোল দূর্গাপুরের পুলিশ কমিশনার সুনীল কুমার চৌধুরী, পশ্চিম বর্ধমান জেলা পরিষদের সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরি, আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল পুরনিগমের মেয়র তথা বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়, আসানসোল পুরনিগমের দুই ডেপুটি মেয়র অভিজিৎ ঘটক ও ওয়াসিমুল হক জামুড়িয়ায় বিধায়ক হরেরাম সিং। এছাড়াও ছিলেন আসানসোলের মহকুমাশাসক অভিজ্ঞান পাঁজা, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সোনেয়াল সহ পুলিশ ও প্রশাসনের আধিকারিকরা।


প্রথম বার আয়োজন করা এই কার্নিভালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্বাগত ভাষণ দেন জেলাশাসক।
পরে মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, পশ্চিম বর্ধমান একমাত্র জেলা যেখানে দুটি মহকুমায় দুটি পুজো কার্নিভাল একদিনে আয়োজন করা হচ্ছে। রাজ্য সরকারের তরফে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এর অনুমত দিয়েছেন। তিনি আরো বলেন, প্রথমবারের এই কার্নিভালে সবমিলিয়ে ১৪ টি পুজো কমিটি বা উদ্যোক্তা ক্লাব অংশ নিচ্ছে । সরকারি ভাবে হওয়া এই কার্নিভালে অংশ নেওয়া পুজোগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা হবে। তাদের মধ্যে প্রথম সেরা তিন বাছাই করে তাদেরকে আর্থিক পুরষ্কারও দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে । প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পুরষ্কার যথাক্রমে ১ লক্ষ, ৭৫ হাজার ও ৫০ হাজার টাকা।


এদিন দূর্গাপুজো কার্নিভালে সেরা পুজো বাছাই করতে জেলা প্রশাসনের তরফে তিন বিচারক হিসাবে উপস্থিত ছিলেন আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি মহারাজ স্বামী সৌমাত্বানন্দজী মহারাজ, শিল্পী সুশান্ত রায় ও আসানসোলের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের প্রধান শিক্ষক রবি ভিক্টর।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের পরে একবারে শুরুতে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের স্কুটি ও মোটরবাইক বাহিনীর রোডশো হয়।


বিকেল পাঁচটার সময় আসানসোল দূর্গাপুজো কার্নিভালের শোভাযাত্রায় প্রথম পুজো হিসাবে অংশ নেয় বার্ণপুরের নেতাজি স্পোর্টিং ক্লাব। এরপর একে একে আসে অন্য পুজো কমিটিগুলো। উদ্যোক্তা বা ক্লাবের সদস্য ও সদস্যারা নিজেদের সাবেকি পোশাকে ট্রেলারে চাপানো দূর্গা প্রতিমার সামনে হেঁটে হেঁটে এগিয়ে যান। মুল মঞ্চের সামনে অতিথি ও বিচারকদের সামনে প্রতিটি ক্লাবের সদস্য ও সদস্যারা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন। তার মধ্যে ছিলো পুরুলিয়ার ছৌ নৃত্য, আদিবাসী নৃত্য ও বিভিন্ন সরকারি প্রকল্প।


এদিকে, এদিনের এই কার্নিভালের জন্য জিটি রোডের চেলিডাঙ্গা থেকে ভগৎ সিং মোড় পর্যন্ত যান চলাচল বন্ধ করা হয়েছিলো বিকেল তিনটের পর থেকে। অন্য সব রাস্তায় যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিলো। গাড়ি চলাচল অন্য রাস্তায় ঘুরিয়ে দেওয়া হয়। ট্রাফিক ব্যবস্থা ও কার্নিভ্যালের নিরাপত্তা ব্যবস্থায় মোতায়েন করা হয়েছিলো বিশাল পুলিশ বাহিনী। রাজ্য পুলিশের পাশাপাশি ছিলো রেফ, কমব্যাট ফোর্স ও বিশেষ বাহিনী। যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রাস্তায় বেরিয়ে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয় সাধারণ মানুষদেরকে।


বৃহস্পতিবার একইসঙ্গে দূর্গাপুরেও পুজো কার্নিভাল করা হয়েছিলো। সেখানে দুপুর দুটোয় এই কার্নিভাল শুরু হয়। উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের দুই মন্ত্রী প্রদীপ মজুমদার ও মলয় ঘটক, আসানসোলের সাংসদ, পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক ও আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনার।

Leave a Reply