রানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ষোলআনা দুর্গার বর্ণাঢ্যময় বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন
বেঙ্গল মিরর চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : রানীগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী ষোলআনা দুর্গার বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন হল সড়ম্বরের সঙ্গে। দীর্ঘ কয়েকটা বছর কোরনা প্রকোপে কোনক্রমে নমো নম করে পূজো পর্ব সম্পন্ন হলেও এবার আবারো পূর্বের ন্যায় ষোল আনা দুর্গাপূজা কমিটি লক্ষ্মী পূজার পরের বুধবার ধরে তাদের বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন করল। উল্লেখ্য যেহেতু বণিক সংগঠনের সদস্যরা এই পুজোকে পরিচালিত করে সেই জন্যই বহু পূর্বেই বৃহস্পতিবার রানীগঞ্জ শহরের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকায় বুধবার এই পুজোর বিসর্জন পর্ব সম্পন্ন হয়।
সেই বিসর্জন পর্বের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে এবার দেবী দুর্গার বিসর্জনে ব্যাপক আড়ম্বর লক্ষ্য করা গেল। এদিন আলোক সজ্জায় বিদ্যুতের বাঘ দিয়ে এই শোভাযাত্রা শুরু করে, দেবী দুর্গার মূর্তি, বাউল শিল্পীদের লোকগান, ছো নাচ, মিশন রানীগঞ্জ, চন্দ্র অভিযান, সূর্য অভিযান সহ বিভিন্ন বিষয় ডিজিটাল লাইটের ঝলমলে আলোয় ফুটিয়ে তুলে দর্শকদের নজর কাড়ে তারা। রানীগঞ্জের আশপাশের বিভিন্ন অংশের লক্ষাদিক দর্শক এই বিশেষ শোভাযাত্রায় হাজির থেকে প্রতিটি মুহূর্তের সব ছবি, তাদের ক্যামেরাবন্দি করে। এদিন মহিলারা অভিনব সাজে ফুটিয়ে তোলে ষোল আনা দুর্গার শুভ বিজয়ার শুভেচ্ছা বার্তা। এরপরই শূন্যে ভাসতে থাকা সিদ্ধিদাতা গণেশ, রাধা কৃষ্ণ নজর কাড়ে দর্শকদের। আর তারপরই ড্রাম বাজিয়ে চমক লাগাই শিল্পীরা, আলোক ঝলমলে আলোর মাঝে ছোট বড় সকলেই খুশিতে, আনন্দে নেচে ওঠে হাজারো হাজার দর্শকের মাঝে। অনেকেই নিজেদের অ্যান্ড্রয়েড ফোনে তুলে রাখে সেই সকল ছবি।
রানীগঞ্জ শহর যেন মুহূর্তে আনন্দ উচ্ছ্বাসে মেতে ওঠে বুধবারের বর্ণাঢ্যময় এই সন্ধ্যায়। বহু দূর-দূরান্তের শিল্পী দেবদেবীর বিভিন্ন মডেল আকারে সেজে, মন কাড়ে দর্শকদের। মডেলের শিল্পীরা রঙিন সাজে সেজে বিভিন্ন নাচ গানের তালে নেচে ওঠে। আর এ সকলের পরই প্রথমে মা লক্ষ্মী, তারপর দেবী দুর্গা স্বপরিবারে বিদায় নেয় হাজারো হাজার মানুষের উলুধ্বনিতে জয়ধ্বনিতে। সমগ্র এই অনুষ্ঠান কর্মসূচিতে হাজির থেকে দর্শকদের সাথেই শিল্পীরাও দারুন ভাবে উপভোগ করে এ দিনটি। বহু শিল্পী এত দর্শকদের উপস্থিতি দেখে উচ্ছ্বসিত, তারা বারংবার এ ধরনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করতে চান বলেই দাবি করেন। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন এবার প্রায় ১৩ টি বাজনা দল তাদের অনবদ্য বাদ্যযন্ত্রে সারা শহর মাতিয়ে তুলে, আর তার সাথেই আলোক সজ্জা সহ বহু মডেল শিল্পী, আকর্ষণীয় মডেল প্রস্তুত করে, রানীগঞ্জের যে মহাবীর আখড়ার শূন্যতা তাকে পূরণ করার চেষ্টা করেছে।