Bihar-Up-Jharkhand

চলে গেলেন নেহেরুর বউ খ্যাত বলে “বুধনি মেঝাইন”, পাঞ্চেত এলাকায় শোকের ছায়া

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ প্রয়াত হলেন ” নেহেরুর বউ, ” বলে খ্যাত বুধনি মেঝাইন। বাংলা ঝাড়খণ্ড সীমান্ত লাগোয়া মাইথনের পাঞ্চেতের একটি বেসরকারি হাসপাতালে শুক্রবার মৃত্যু হয় তার। বার্ধক্যজনিত রোগে বেশ কয়েক বছর ধরে ভুগছিলেন তিনি। স্মৃতিশক্তিও চলে গেছিলো তার। মৃত্যুর পর শনিবার সকালে পাঞ্চেতে তার বাড়িতেই মৃতদেহ নিয়ে আসা হয়। পরে তার দেহ সৎকার করা হয়।


কে এই বুধনি মেঝাইন? কেন তিনি ” নেহেরুর বউ ” বলে পরিচিত পেয়েছিলেন?

সেই ১৯৫৯ সালের ৬ ডিসেম্বর ডিভিসি বা দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনের পাঞ্চেত জলাধার বা ড্যামের উদ্বোধন হয়। উদ্বোধনে এসেছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহেরু। আর সেদিন ঝাড়খন্ড আদিবাসীদের পক্ষ থেকে ঐ জলাধার নির্মাণকারীদের পক্ষ থেকে প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বুধনি মেঝাইন। তার হাত দিয়ে জওহরলাল নেহেরু পাঞ্চেত ড্যাম উদ্বোধন করিয়েছিলেন। অনুষ্ঠানে ডিভিসির পক্ষ থেকে জহরলাল নেহেরুকে সম্মান জানাতে মালা পড়ানো হয়েছিলো। আর তারপর জহরলাল নেহেরু বুধনিকে সম্মান জানাতে সেই মালা পরিয়ে দিয়েছিলেন বুধনি মেঝাইনের গলায়। এরপরেই বুধনিকে পরিত্যাগ করে তাদের সমাজ।

সমাজ ” নেহেরুর বউ “র তকমা দিয়ে দেয় করে। আর সেই জন্য তাকে নিজের গ্রাম ছেড়ে চলে যেতে বলা হয়। স্বাভাবিক ভাবেই হারিয়ে যান তিনি। পরবর্তীকালে ডিভিসি কর্তৃপক্ষ তাকে খুঁজে নিয়ে আসে। আবার তার চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয়। পরবর্তীকালে অবসর নিয়েছিলেন বুধনি মেঝাইন। ডিভিসির আবাসনে থাকতেন। কিন্তু জীবনে তিনি সঠিক সম্মান পাননি বলেই দাবি এলাকাবাসীদের। তার গ্রামেও ফিরে যেতে পারেনি আর কোনদিন।
এদিন পাঞ্চেত শ্মশানে তার শেষকৃত্য হওয়ার আগে ডিভিসির পক্ষ থেকে তাকে সম্মান জানানো হয়। সম্মান দেওয়া হয় স্থানীয় পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের পক্ষ থেকেও।
এলাকাবাসীদের দাবি বুধনি মেঝাইনের নামে বৃদ্ধাশ্রম বা বুধনি মেজাইনের মূর্তি পাঞ্চেত এলাকায় স্থাপন করা হোক। এলাকার এই দাবির সঙ্গে সহমত পোষণ করেন ঝাড়খণ্ডের বান্দা পঞ্চায়েতের মুখিয়া ভৈরব মন্ডলও।

Leave a Reply