ASANSOL

আসানসোলের মিশ্র নার্সিং ইনস্টিটিউট থেকে পাশ করা নার্সরা সারা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মানুষের সেবা করবেন : এইচ এন মিশ্র

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত: আসানসোলের বাগবন্দিতে অবস্থিত আসানসোল মিশ্র নার্সিং ইনস্টিটিউটে বুধবার সদ্য প্রশিক্ষিত নার্সদের জন্য একটি স্বাগত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই প্রসঙ্গে তথ্য দিতে গিয়ে এই ইনস্টিটিউটের ডাইরেক্টর এইচ এন মিশ্র বলেন, যদিও এটি তাঁর ইনস্টিটিউটের দ্বিতীয় বর্ষ। তবে এই প্রথম এমন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি আইএনসি ( ইন্ডিয়ান নার্সিং কাউন্সিল) এর স্বীকৃতি পেয়েছে। এছাড়া এটি রাজ্যের স্বাস্থ্য দপ্তর থেকে ওয়েস্ট বেঙ্গল নার্সিং কাউন্সিল এর স্বীকৃতিও পেয়েছে। এ কারণে এ বছর প্রথমবারের মতো আয়োজন করা হচ্ছে এই স্বাগত অনুষ্ঠানের। তিনি বলেন, তার ইনস্টিটিউটে দুই ধরনের নার্সিং কোর্স করানো হয়। প্রথমটি বিএসসি এবং অন্য জিএনএম । যারা বিজ্ঞান বিভাগে দ্বাদশ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ তারা বিএসসি নার্সিং এ ভর্তি হয়। এটি একটি ৪ বছরের কোর্স। যে সমস্ত শিক্ষার্থীরা অন্য কোনো মাধ্যমে ১২ তম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছে তারা জিএনএম এ ভর্তি হয়। এটি ৩ বছরের কোর্স।


তিনি জানান, আজকের স্বাগত অনুষ্ঠানে আসানসোল রামকৃষ্ণ মিশনের সেক্রেটারি স্বামী সোমাত্মানন্দ জি মহারাজ, বিশিষ্ট হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা: মানস ব্যানার্জি, ডাঃ সুব্রত ভট্টাচার্য(সিনিয়র) প্রধানত উপস্থিত ছিলেন। তার উপস্থিতিতে নতুন প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী নার্সদের স্বাগত জানানো হয়। এই বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বদের তার সাথে আলাপ করানো হয় । যাতে এই নতুন প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী নার্সরা তাদের কাছ থেকে কিছু শিখতে পারেন।



এইচ এন মিশ্র বলেন যে তার প্রতিষ্ঠান আসানসোল জেলা হাসপাতাল, আসানসোল রেল হাসপাতাল, কাল্লা হাসপাতাল সহ বিভিন্ন সরকারী এবং বেসরকারী হাসপাতালের সাথে চুক্তি করেছে। যাতে এখানে প্রশিক্ষণ গ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা প্র্যাকটিক্যাল করতে কোনো অসুবিধার সম্মুখীন না হয়। তার ইনস্টিটিউটের প্রায় ৫০০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালের সাথে চুক্তি রয়েছে। যেখানে এই নার্সরা বাস্তব প্রশিক্ষণ পাবেন। এর পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটিতেই তত্ত্ব প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এখানে একটি বিশেষ ল্যাবরেটরি রয়েছে যাতে সেখানে প্রশিক্ষণ নিতে পারে যায়। তিনি বলেন, নার্সিং এর জন্য প্র্যাকটিক্যাল প্রশিক্ষণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর এ কারণেই তার প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে এই আয়োজন করা হয়।

তিনি জানান, চেন্নাই থেকে জিএনএম-এ এমএসসি এবং পিএইচডি করা একজন নার্সকে এই ইনস্টিটিউটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও তার ১৯ বছরের অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখানকার ভাইস প্রিন্সিপ্যালও জিএনএম-এ এমএসসি, তাই বলা যেতে পারে যে ফ্যাকাল্টির অধীনে এই ছাত্ররা এখানে প্রশিক্ষণ নেবে তারা উচ্চমানের শিক্ষক। তিনি বলেন, আজকের স্বাগত অনুষ্ঠানে যারা এখানে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন এমন শিক্ষার্থীদের নির্দেশ দিতে হবে যেন এক দিনের জন্যও ক্লাস মিস না করা হয় কারণ এখানকার শিক্ষকরা প্রতিদিন পূর্ণ নিষ্ঠার সাথে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেবেন। তাই কোনো শিক্ষার্থী ক্লাসে না এলে তার জন্য ক্ষতি হবে।তিনি বলেন, কোনো কারণে কোনো শিক্ষার্থী কোনো দিন ক্লাসে আসতে না পারলে অবশ্যই পরের দিন আসবেন। একই ক্যাম্পাসে চলমান ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, ওই কলেজটি ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় যখন অনেক কম শিক্ষার্থী ছিল। কিন্তু ধীরে ধীরে কলেজ থেকে পাশ করা ছাত্ররা সেই স্থান অর্জন করে জীবনে এতটাই সফল হয় যে, এখন এ বছর ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে জায়গা না থাকায়
২৪৭ জন শিক্ষার্থীকে ফিরিয়ে দিতে হয়েছে। যে কোনো ইনস্টিটিউট তৈরি করতে সময় লাগে, এ জন্য ইনস্টিটিউট পরিচালনাকারী শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে, বিশেষ করে শিক্ষক ও ইনস্টিটিউট পরিচালকদের সর্বোচ্চ দায়িত্ব রয়েছে বলে জানান তিনি।



তিনি বলেন যে যখন করোনা ছড়িয়ে পড়ে তখন এই রাজ্য থেকে ৬০০ জন নার্স অন্য রাজ্যে চলে গিয়েছিল। এরপর তিনি এই নার্সিং কলেজ প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। যাতে এখানে নার্সের অভাব না হয় এবং তিনি আশা করেন ভবিষ্যতে তার প্রতিষ্ঠান থেকে পাশ করা নার্সরা দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে মানুষের সেবা করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *