DURGAPURWest Bengal

দূর্গাপুর আদালতে সাজা ঘোষণা বৃহস্পতিবার, মহিলাকে এ্যাসিড ছুঁড়ে জখম করার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত ২৪ পরগণার যুবক

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী ও রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায়, এ্যাসিড ছুঁড়ে এক মহিলাকে মারাত্মক ভাবে জখম করার অভিযোগের মামলায় দোষী সাব্যস্ত হলো এক যুবক। ২ বছরের কিছু বেশি সময় ধরে এই মামলা চলার পরে মঙ্গলবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার দূর্গাপুর আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ ( প্রথম) শৈলেন্দ্র কুমার সিং উত্তর ২৪ পরগণার বারুইপুরের বাসিন্দা মহঃ রফিক ওরফে রফিক মন্ডল নামে ঐ যুবককে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩২৬/এ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন। আগামী ৭ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার বিচারক এই মামলায় সাজা ঘোষণা করবেন বলে এদিন জানান সরকারি আইনজীবী বা পিপি আফসারুল হক।

court

তিনি আরো বলেন, এই মামলায় আইও বা তদন্তকারী অফিসার সহ মোট ১০ জন সাক্ষী দিয়েছেন। দোষী সাব্যস্ত হওয়া মহঃ রফিক জামিন পাননি। তিনি জেলেই ছিলেন। জেলে থাকাকালীন তার সাজা ঘোষণা হতে চলেছে, যা এই মামলার গুরুত্বের দিক থেকে যথেষ্টই তাৎপর্য পূর্ণ আইনজীবী মহল মনে করছেন। এই ঘটনাটি ঘটেছিলো ২০২১ সালের ৬ সেপ্টেম্বর।


পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার দিন সকাল দশটার সময় অন্য দিনের দূর্গাপুর থানার আইনস্টাইন এভিনিউয়ের ২ ও ৪ নং স্ট্রিটের একটি আবাসনে পরিচারিকার কাজ করতে যাচ্ছিলেন ঐ মহিলা। সেখানে আগে থেকেই দাঁড়িয়েছিলো উত্তর ২৪ পরগণার বাসিন্দা মহঃ রফিক ওরফে রফিক মন্ডল। সে ঐ মহিলার পথ আটকায় ও বিয়ের প্রস্তাব দেয়। কিন্তু মহিলা তা প্রত্যাখান করায় রফিক পকেটে রাখা বোতল থেকে এ্যাসিড তার মুখ লক্ষ্য করে ছোঁড়ে। তাতে ঐ মহিলার মুখের বাঁদিকের অংশ পুড়ে যায়। তিনি গুরুতর জখম হন। দৌড়ে ঐ মহিলা ঐ আবাসনে গিয়ে গোটা ঘটনার কথা জানায়। তা শুনে এলাকার বাসিন্দারা আসার আগেই মহঃ রফিক এলাকা ছেড়ে চম্পট দেয়।

খবর পেয়ে ঐ মহিলার দাদা আসেন। তিনি ঐ মহিলাকে হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেদিনই গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে দূর্গাপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। তার ভিত্তি তদন্তে নেমে পুলিশ মোবাইল টাওয়ারের লোকেশান ধরে সেদিন রাত দুটো নাগাদ বারুইপুর থেকে অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দন্ডবিধির ৩২৬/এ নং ধারায় মামলা করে।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, কোন ভাবে ঘটনা ঘটার বেশ কিছু দিন আগে রফিক দূর্গাপুরের বাসিন্দা ঐ মহিলার মোবাইল নম্বর পেয়েছিলো। তারপর থেকে সে সবসময় তাকে ফোন করতো ও প্রেম নিবেদন করতো। একটা সময় সে মহিলাকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। মহিলা বারবার তাকে এই ধরনের কাজ করতে মানা করে ও ফোন করতে বারণ করেন। কিন্তু সে শোনেনি। এমনকি মহিলার দাদা রফিককে ফোন করে এই ধরনের কাজ করতে মানা করে ও নম্বরটি ব্লক করে দেয়। কিন্তু রফিক তারপরেও অন্য নম্বর
থেকে ফোন করে মহিলাকে উত্ত্যক্ত করতো। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান হয়, বিয়ের প্রস্তাব প্রত্যাখান হওয়ায়, প্রতিশোধ নিতেই রফিক এই কাজ করেছে। মামলার তদন্তকারী অফিসার বা আই তদন্ত করে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আদালতে চার্জশিট জমা দেওয়ায় অভিযুক্ত যুবক জামিন পায়নি।

Leave a Reply