ASANSOL

আসানসোলে বড় দূর্ঘটনার থেকে রক্ষা বিকানির হাওড়া এক্সপ্রেসের, কামরার মাথায় ভেঙে পড়লো বৈদ্যুতিক খুঁটির অংশ

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্যঃ বড় দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পেল হাওড়াগামী বিকানির হাওড়া এক্সপ্রেস। স্বাভাবিক ভাবেই প্রাণে বেঁচেছেন দূরপাল্লার এই ট্রেনের যাত্রীরাও। এই ট্রেনের এসি বা শীততাপনিয়ন্ত্রিত একটি কামরার মাথার উপরে পড়ে রেললাইনের পাশের উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ওভারহেড বৈদ্যুতিক খুঁটির কিছু অংশ। মঙ্গলবার সকাল সোয়া সাতটা নাগাদ আসানসোল স্টেশন থেকে হাওড়ার উদ্দেশ্যে যাওয়ার পরে ইস্ট বা পূর্ব কেবিনে আগেই আচমকা চলন্ত ট্রেনের “এ ওয়ান” কামরার মাথায় খুঁটির অংশ ভেঙে পড়ে। উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন বিদ্যুৎবাহী ওভারেডের খুঁটি বেঁকে গিয়ে, ঐ খুঁটির মাথায় থাকা তার সহ লোহার যন্ত্রাংশটি বিকানির এক্সপ্রেসের ঐ কামরার উপরে পড়ে বলে জানা গেছে । সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। সেখানেই ট্রেনটি দাঁড়িয়ে যায়। গোটা বিষয়টি বুঝতে পেরে ট্রেনের চালক ঘটনার কথা রেল কন্ট্রোলকে জানান। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনের সিনিয়র ডিভিশনাল ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার( ট্রাকশন )সহ অন্যান্য রেল আধিকারিকরা। এই ঘটনার জেরে ডাউন মেনলাইনে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। তারপর আসানসোল ইস্ট কেবিন থেকে কালিপাহাড়ি পর্যন্ত ঐ লাইনে ৮ টা ৩৬ থেকে বিদ্যুৎ লাইন সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন করে পাওয়ার ব্লক নেওয়া হয়। মেরামতের কাজ শুরু হয়। প্রায় দু’ঘণ্টা পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয় ঐ লাইনে বলে রেল সূত্রে জানা গেছে।


বিকানির হাওড়া এক্সপ্রেসের ঐ কামরায় যাত্রী হিসেবে সফর করছিলেন দীপক ঘোষ। তিনি বলেন আমি জয়পুর থেকে হাওড়া যাচ্ছি। ট্রেনটি এমনিতেই পাঁচ ঘন্টা দেরি করে আসানসোল স্টেশনে পৌঁছায়। এরপর আসানসোল স্টেশন ছাড়ার পরে আবার শুতে যাচ্ছিলাম সকাল সোয়া সাতটা নাগাদ হবে। তখন আচমকাই একটা বিকট আওয়াজ হলো। সঙ্গে সঙ্গে ঝাঁকুনি দিয়ে ট্রেনটা থেমেও গেল। ভাবলাম কোন দুর্ঘটনা ঘটেছে। এরপর বাইরে বেরিয়ে দেখলাম ইঞ্জিন থেকে প্রায় সাত/ আটটি কামরা পার হয়ে গেছে। আমাদের কামরার রেললাইনের পাশে থাকা একটা ওভারহেডের তারের খুঁটি নিচে থেকে বেঁকে গেছে। এরফলে ঐ খুঁটির উপরের অংশটা বগির উপরে পড়ে আছে। ঐ ট্রেনের সফররত অন্য এক যাত্রী মহঃ হাসান বলেন, আসানসোল স্টেশন ছাড়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে। আমরা সবাই কামরায় বাইরে গিয়ে নিচে নেমে বুঝতে পারি যে একটা বড় দুর্ঘটনা হতে হতে বেঁচে গেছে।


রেল ট্রাকশন দপ্তরের আসানসোল ডিভিশনের
সিনিয়র ডিভিশনাল ইলেকট্রিক্যাল বিভাগের এক ইঞ্জিনিয়ার বলেন, খবর পেয়ে আমি এলাকায় পৌঁছাই। দেখি ঐ বৈদ্যুতিক খুঁটির রেললাইন থেকে প্রায় দেড় মিটার উপরে বেঁকে গিয়ে ডাউন মেনলাইনে যে বিদ্যুতের তার আছে সেই তারের সঙ্গে থাকা লোহার অংশটা বগির উপরে কিছুটা পড়েছে। কেন এই ঘটনা ঘটলো? তার উত্তরে তিনি বলেন, হতে পারে পাশের ডাউন স্লো লাইন দিয়ে যাওয়া মালগাড়ির ওয়াগনের কোনও দরজার আংশিকভাবে হয়তো খোলা ছিল। সেই দরজার ধাক্কায় এই খুঁটির নিচের অটা বেঁকে গেছিল। রেল সূত্র থেকে জানা যায়, এই ঘটনার ঠিক আধঘন্টা আগে ৬টা বেজে ৪৫ মিনিট নাগাদ পাশের লাইন দিয়ে একটি মালগাড়ি যায়। সেই মালগাড়ির কোন ওয়াগানের দরজার ধাক্কায় এমন ঘটনা ঘটেছে কিনা তা অবশ্য জানা যায়নি।


আসানসোল স্টেশন লাগোয়া এই বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলি প্রায় ৩০ বছর আগে রেললাইন বৈদ্যুতিকরণের সময় লাগানো হয়েছিল বলে জানা গেছে । রেল আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ক্ষতিগ্রস্থ ঐ খুঁটিটিকে কেটে সরিয়ে দিয়ে নতুন খুঁটি লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে। এই কাজের জন্য দুবার করে পাওয়ার ব্লক বা বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিলো।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক কৌশিক মিত্র বলেন, কি করে এই ঘটনা ঘটেছে তা নিয়ে অবশ্যই তদন্ত হবে। অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ঐ বৈদ্যুতিক খুঁটি মেরামত করে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করা হয়েছে। এর ঘটনায় অবশ্য আপ লাইনে ট্রেন চলাচলে কোনও সমস্যা হয়নি। যে লাইনে ঐ ট্রেনটি ছিলো, সেই লাইনেই ট্রেন চলাচল ব্যহত হয়।

Confirm Ticket Cancellation Charges : रेलवे ने अपडेट किये नियम जान लें क्या है

Leave a Reply