ASANSOL

জাল লটারি টিকিটের খোঁজে ঝাড়খণ্ডে পুলিশের অভিযানে হদিশ কারখানার, ধৃত ২, উদ্ধার ল্যাপটপ, প্রিন্টার সহ একাধিক সামগ্রী

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও দেব ভট্টাচার্যঃ ( Fake Dear Lottery Factory ) জাল লটারি টিকিট কারবারের খোঁজে বিভিন্ন সূত্রে খবর পেয়ে আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের পুলিশ ও ডিডি বা গোয়েন্দা বিভাগের তরফে বৃহস্পতিবার রাতে পার্শ্ববর্তী রাজ্য ঝাড়খণ্ডের চিরকুন্ডা ও নিরসা থানা এলাকায় আবারও একযোগে অভিযান চালানো হয়। সেই এলাকায় একটি কারখানা ছিলো। যেখানে জাল লটারির টিকিট তৈরির কারবার চলছিল। সেখানে অভিযান চালিয়ে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়। কারখানা থেকে পাওয়া যায় ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং মোবাইল ফোন, সফ্টওয়্যার ইত্যাদি।


শুক্রবার আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মুদি এই খবর জানিয়ে বলেন, যে দুজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে তারা হলো ঝাড়খন্ডের ধানবাদ জেলার নিরসা থানার বিড়লাধলের রাজীব কুমার ও ধানবাদের পাঞ্চেত ড্যামের বাধনা ঝাটি বাজারের ইউসুফ আনসারি ওরফে সোনু। কারখানা থেকে বাজেয়াপ্ত করা সামগ্রীর মধ্যে আছে ল্যাপটপ দুটি, প্রিন্টার নয়টি, একটি জেরক্স মেশিন, একটি কাটিং মেশিন (টিকিট কাটতে ব্যবহৃত), একটি হার্ড ডিস্ক, বিপুল পরিমাণে একপাশে প্রিন্ট করা লটারির টিকিট, চারটি কার্টিজ ( প্রিন্টিংয়ে ব্যবহার করা হয়) ও আনুমানিক ৩ থেকে ৪ লক্ষ টাকা মূল্যের প্রিন্ট করা লটারি টিকিট। ধৃতদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ থেকে জানা গেছে যে, বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার হওয়া রাজীব কুমার ও মুকেশ কুমার (নভেম্বরের আগে গ্রেফতার করা হয়েছে) হল জাল লটারির টিকিটের প্রধান ডিলার। যারা ঝাড়খণ্ডের নিরসা ও চিরকুন্ডায় কারখানায় ছাপানো জাল লটারি টিকিট আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করত।


আরো তদন্ত ও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বৃহস্পতিবার রাতে গ্রেফতার করা হওয়া দুজনকে শুক্রবার আসানসোল আদালতে তুলে পুলিশ হেফাজতের আবেদন করা হয়। সেই আবেদনের ভিত্তিতে বিচারক তাদের জামিন নাকচ করে ছদিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গতঃ, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে, বিভিন্ন সোর্স থেকে অভিযোগ পাওয়ার পরে, আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিডি ও পুলিশ যৌথভাবে জাল লটারি বিক্রির বিরুদ্ধে অভিযান নামে। সেই সময় জাল লটারি টিকিটের কারবার করার অভিযোগে অনেক অভিযান চালানো হয়। বিভিন্ন থানায় মামলা হয় এবং বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার হওয়া ব্যক্তিদেরকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জাল লটারির টিকিট সরবরাহকারীদের নাম পায়। যারা ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম এলাকার নিরসা ও চিরকুন্ডা থানা এলাকার বাসিন্দা বলে পুলিশ জানতে পারে।


এরপর গত নভেম্বর মাসে মিহিজাম থানা এলাকায় একটি বন্ধ রেস্তোরাঁয় যৌথ অভিযান চালানো হয়েছিল। যেখান থেকে অনেকগুলি ল্যাপটপ, প্রিন্টার এবং বিপুল সংখ্যক জাল লটারির টিকিট উদ্ধার করা হয়েছিল। সেখান থেকে মোট ৯ জনকে গ্রেফতারও করা হয়।
একই সাথে চিরকুন্ডা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরো ২ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের কাছ থেকে বেশ কিছু মোবাইল ফোন, ল্যাপটপ, ডিজাইনিং সফটওয়্যার ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়। যা নকল বা জাল লটারির টিকিট তৈরিতে ব্যবহৃত হত।
দুটি অভিযানে গ্রেফতার হওয়া ১১ জনকে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশ জাল লটারির টিকিট প্রস্তুতকারক ও সাপ্লায়ার হিসাবে আরো কিছু নাম পায়। পুলিশ আরো জানতে পারে যে, চিরকুন্ডা থানা এলাকায় অবৈধভাবে জাল লটারির টিকিট তৈরির আরও একটি কারখানা চলছে। তারপরেই বৃহস্পতিবার রাতেের এই অভিযান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *