আসানসোল আদালতে চালু হওয়া ” ফ্যামিলি কোর্ট” নিয়ে আইনজীবীদের আপত্তি , বার এ্যাসোসিয়েশনের বৈঠকে আলোচনা
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্তঃ ( Asansol Family Court ) আসানসোল বার এ্যাসোসিয়েশনের সদস্য আইনজীবীরা শুক্রবার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেন। এদিনের এই বৈঠকের প্রসঙ্গটি ছিল গত ২৩ ফেব্রুয়ারি আসানসোল আদালতে ” ফ্যামিলি কোর্ট ” উদ্বোধনের সাথে সম্পর্কিত। বৈঠকের পরে এ বিষয়ে সাংবাদিকদের আসানসোল বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেশ তিওয়ারি বলেন, আসানসোল আদালতে যে ফ্যামিলি কোর্ট চালু হলো, তাতে শুধু আইনজীবীই নয়, বিচারের আশায় আসা সব সাধারণ মানুষই সমস্যায় পড়বেন।তিনি বলেন, ফ্যামিলি কোর্টের নিয়ম অনুযায়ী আইনজীবীরা সেই আদালতে জেরা করতে পারবেন না। আর প্রায় ১৫টি আদালতের মামলা ফ্যামিলি কোর্টে রয়েছে। তাতে সবমিলিয়ে ফ্যামিলি কোর্টে প্রায় ৩০,০০০ মামলা থাকবে। একটি মামলা নিষ্পত্তি হতে অনেক বছর লেগে যাবে। যে কারণে বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষদেরকে বেশি ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হবে। তাদের সমস্যা বাড়বে। তিনি বলেন, ফ্যামিলি কোর্ট তাড়াহুড়ো করে খুলে দেওয়া হয়েছে।এখানকার আইনজীবীরাও বুঝতে পারেননি এতে কি সমস্যা হবে। কিন্তু এখন ধীরে ধীরে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে যাচ্ছে। সেজন্যই এদিন এই বৈঠক ডাকা হয়েছে।আগামী দিনে এই সমস্যার সমাধান করা না হলে, আরও বড় আন্দোলন করা হবে।
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2023/10/IMG-20230207-WA0151-e1698295248979.webp?resize=768%2C512&ssl=1)
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2024/03/img-20240301-wa00877858407913131053126.jpg?resize=500%2C226&ssl=1)
একইভাবে আসানসোল বার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বাণী মণ্ডল বলেন, ফ্যামিলি কোর্টের কারণে আইনজীবীদের চেয়ে বিচারের আশায় আসা মানুষরা সমস্যায় পড়বেন। ৩০ হাজার মামলা এখানে জমা হলে, তা সময়ের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে বছরের পর বছর লেগে যাবে। এছাড়া এইসব মামলায় আইনজীবীরা তাদের মক্কেলদের পক্ষে মামলা লড়তে না পারলে সাধারণ মানুষ বিচার পেতে আরও সমস্যায় পড়বেন।
আসানসোল আদালতের সিনিয়র আইনজীবী অমিতাভ মুখোপাধ্যায়ও ফ্যামিলি কোর্ট নিয়ে আপত্তি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, ফ্যামিলি কোর্ট চালু হলে আইনজীবীদের চেয়ে সাধারণ মানুষ বেশি সমস্যায় পড়বেন। কারণ আইনজীবীরা ফ্যামিলি কোর্টে মামলা লড়তে পারেন না। এমন পরিস্থিতিতে বিচার চাইতে আসা নিরক্ষর বা কম শিক্ষিত মানুষ আদালতে আসবেন, তাদের অনেক সমস্যায় পড়তে হয়।
উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, যদি একটি আদালতে ৩০ হাজার মামলা বিচারাধীন থাকে, তাহলে আজ যদি কোনো মামলার তারিখ আসে, তাহলে মামলার পরবর্তী তারিখ হতে কমপক্ষে ১ বছর সময় লাগবে। এর থেকে সহজেই বোঝা যায় একটি মামলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সময়ে আসবে না।এতে অনেক সময় লাগবে? এমন পরিস্থিতিতে যদি কোনো মহিলার জন্য বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা হয় বা বিবাহ বিচ্ছেদের পর ভরণপোষণের মামলা হয়, তাহলে সেই মহিলা কতটা কষ্ট পাবেন ?
তিনি বলেন, এদিনের বৈঠকে এই সমস্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তাতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, গোটা বিষয়টি নিয়ে আসানসোল জেলা জজকে একটি চিঠি লেখা হবে। যাতে এই সমস্যার সমাধানের অনুরোধ করা হবে। এর পরেও যদি কোনও ইতিবাচক সিদ্ধান্ত না নেওয়া হয় তবে পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে আবারও বৈঠক করা হবে।
আসানসোল কোর্ট বার এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি রাজেশ ওরফে বান্টি তেওয়ারি ও সম্পাদক বানি কুমার মন্ডল, সিনিয়র আইনজীবী ও প্রাক্তন সভাপতি অমিতাভ মুখোপাধ্যায়,শেখর চন্দ্র কুন্ডু,
তপন চট্টোপাধ্যায়, মনিপদ্ম ব্যানার্জি, সনাতন ধারা, সায়ন্তন মুখার্জি, শান্তনু ব্যানার্জি, অনুপ মুখার্জি, তপন বন্দোপাধ্যায়, সুপ্রিয় হাজরা প্রমুখ।