RANIGANJ-JAMURIA

প্রাণি সম্পদে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে বিশেষভাবে উদ্যোগ

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী, রানীগঞ্জ : এ রাজ্যকে প্রাণিজ সম্পদে স্বনির্ভর করে তোলার লক্ষ্যে বিশেষভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে পশ্চিমবঙ্গ সরকার। সে বিষয়ের প্রেক্ষিতেই দিকে দিকে প্রাণিজ সম্পদ বিকাশের লক্ষ্যে চলছে বিশেষ তৎপরতা। রাজ্যের অন্যান্য অংশের সাথে, এ বিষয়ে খনি অঞ্চলেও প্রাণিসম্পদের পরিমাণ বৃদ্ধির লক্ষ্যে নেওয়া হয়েছে বিশেষ উদ্যোগ। এমনিতেই খনি অঞ্চলের সর্বত্রই চাষাবাদ প্রায় শেষের মুখে। কয়েকটি মাত্র এলাকাতেই চাষবাস করে চলে জীবন জীবিকা, তবে এ সকলের সাথেই বিস্তীর্ণ অংশের গ্রামীণ এলাকায় এখনো প্রাণিসম্পদের উপর বিশেষভাবে গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে, সে বিষয়ের প্রেক্ষিতে এই সম্পদকে আরো বেশি বৃদ্ধি করে, অন্য রাজ্যের প্রতি রাজ্যকে যাতে নির্ভরশীল না হতে হয়, সে বিষয়ের প্রেক্ষিতেই চলছে প্রাণিসম্পদ বৃদ্ধির কাজ। আর এই রুক্ষ, শুষ্ক ও জল ধারণ ক্ষমতা কম থাকা এলাকাগুলিতে, মানুষ তার জীবন জীবিকা খুঁজে নেওয়ার জন্য এই প্রাণীজ সম্পদের উপর এখন বিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়েছে। এ বিষয়ের প্রেক্ষিতে খনি অঞ্চল রানীগঞ্জে, প্রাণিসম্পদের বিকাশের লক্ষ্যে, এবার পশ্চিম বর্ধমান জেলার, রাণীগঞ্জ ব্লকে ন্যাশনাল লাইভস্টক মিশনের আওতায় হল, প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী। রানীগঞ্জ সমষ্টি উন্নয়ন অফিস চত্বরে এই কর্মসূচি পালিত হয় ।

মূলত এলাকার যে সকল কৃষিজীবী সদস্য রয়েছেন, যারা প্রাণিসম্পদের ওপর নির্ভর করেন ও এলাকার এক বিস্তীর্ণ অংশ জুড়ে থাকা তপশিলি জাতি উপজাতির মানুষজন, যারা রয়েছেন, তারা পশুপালন করে, জীবন নির্বাহ করেন। তাদের কে সহায়তা করতে ও সমাজের প্রান্তিক মানুষদের প্রাণীর সম্পদের ওপর জীবন নির্বাহ করার বিষয় লক্ষ্য করে, তাদের জীবন জীবিকার মান উন্নত করার লক্ষ্যে, খনি অঞ্চলে এই প্রাণী সম্পদ প্রদর্শনী আয়োজন করা হয়েছে, বলেই জানিয়েছেন প্রাণী সম্পদ উন্নয়ন আধিকারিক মানিক রতন পয়ড়্যা। শুক্রবার এ বিষয়ের প্রেক্ষিতে এদিন সকাল ১০ টা থেকে প্রাণিসম্পদ ও প্রাণিজ দ্রব্য প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়।

একই সাথে সরাসরি প্রদর্শনীর মাধ্যমে, যন্ত্র চালিত গাভী দোহন পদ্ধতি সর্বসমক্ষে দেখানো হয়। পরে সবুজ খাদ্য অ্যাজোলা প্রদর্শিত হয়। বসে কিষান ক্রেডিট কার্ড তৈরির শিবির, বাংলা ডেয়ারি স্টল ও কংসাবতী দুধের স্টল। এরপরই প্রাণিসম্পদ কিভাবে বাড়িয়ে তোলা সম্ভব ও তা নিয়ে কিভাবে জীবন জীবিকা আরো উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে আলোকপাত করেন আগত বিশিষ্টজনেরা। এদিনের এই কর্মসূচিতে বিশেষ ভাবে উপস্থিত হন, পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলা সভাধিপতি বিশ্বনাথ বাউরী, জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ সুবীর ব্যানার্জি, মহকুমা শাসক বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য, রানীগঞ্জের সমষ্টি উন্নয়ন আধিকারিক শুভদীপ গোস্বামী, রানীগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ববিতা চৌধুরী, সহ-সভাপতি মোহাম্মদ সাবির, কর্মাধ্যক্ষ সন্তোষ নুনিয়া, পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ বিনোদ নুনিয়া, প্রমূখ।

উল্লেখ্য রানিগঞ্জ কয়লাখনি ও শিল্পাঞ্চল হিসেবে পরিচিত হলেও গ্রামীণ এলাকার বহু মানুষ, গো-পালন ও ছাগল পালনকে ক্ষুদ্র উদ্যোগ হিসেবে গ্রহণ করে, জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। এবার সেই সকল মানুষজনদের আরো বেশি উৎসাহিত করার লক্ষ্যে, কৃতি প্রাণী পালক হিসেবে সম্মানিত করা হল প্রায় পঞ্চাশ জন প্রাণী পালকে। উল্লেখ্য পূর্বেই সরকার দ্বারা প্রদত্ত হাঁস, মুরগি, ছাগল, গরু বিলি করার পর, অনেকেরই সেই প্রাণিজ সম্পদ বৃদ্ধি হয়েছে, যা তাদের অর্থনৈতিক ভাবেই সমৃদ্ধ করছে বলেই দাবি করেছেন উদ্যোক্তারা।

Leave a Reply