ASANSOL-BURNPUR

বার্ণপুরে মেয়েকে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ, মায়ের অভিযোগে গ্রেফতার বাবা

বেঙ্গল মিরর,বার্ণপুর ও আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : ১৪ বছরের নাবালিকা মেয়েকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে খুনের অভিযোগ। আর সেই ঘটনায় মায়ের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার হলো বাবা। রবিবার নববর্ষের সকালে এই ঘটনার কথা জানাজানি হওয়ার পরে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরের শান্তিনগর হাইস্কুল সংলগ্ন কচুবাগান এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। ঐ এলাকারই বাসিন্দা মৃত নাবালিকার নাম সুনিতা কুমারী সাউ (১৪)। ধৃত নাবালিকার বাবার নাম মুন্না সাউ। রবিবার সকালে মৃতার মা রানিদেবী সাউ হিরাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। তার ভিত্তিতে এদিন মুন্নাকে গ্রেফতার করে হিরাপুর থানার পুলিশ। সোমবার ধৃতকে আসানসোল জেলা আদালতে তোলা হবে।



জানা গেছে, ১৪ বছরের সুনিতা কুমারী তার বাবা-মা ও চার ভাইবোনের সঙ্গে শান্তিনগর হাইস্কুল সংলগ্ন কচুবাগান এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িকে থাকতো।  শনিবার ছিল তার ছোট বোনের জন্মদিন। বোনের জন্মদিন পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলো সুনিতা। আগের দিন রাতে সে বাবাকে বোনের জন্মদিনের জন্য থালা তৈরির উপকরণ বাজার থেকে আনার জন্য একটা তালিকা দিয়েছিলো। কিন্তু শনিবার সকালে হঠাৎ সুনিতাকে অচৈতন্য অবস্থায় বিছানায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। তখন তার নাক-মুখ থেকে রক্ত বেরোচ্ছিল। কাউকে কিছু না বলে তার বাবা-মা সহ পরিবারের সদস্যরা সুনিতার দেহ শ্মশানে নিয়ে গিয়ে দাহ করার প্রস্তুতি শুরু করেন। কিন্তু বাড়িওয়ালার চাপে শনিবার সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ অচৈতন্য সুনিতাকে আসানসোল জেলা হাসপাতালের এমারজেন্সি বিভাগে নিয়ে আসা হলে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। প্রাথমিক ভাবে চিকিৎসক সুনিতার গলায় দুটি কালো দাগ দেখতে পান। তা দেখে মনে নাবালিকা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। সেই সময় মুন্না চিকিৎসককে বলেন, মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে।

কিন্তু শনিবার দুপুরে সুনিতার দেহ জেলা হাসপাতালের মর্গে মৃতদেহ ময়নাতদন্তের পরে জানা যায়, তাকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। হাসপাতালের মর্গ থেকে হিরাপুর থানার পুলিশ মুন্না সাউকে আটক করে। এরপর রবিবার সকালে রানিদেবী সাউ হিরাপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তার স্বামীর বিরুদ্ধে। পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, এখনো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়া যায়নি। তবে নাবালিকার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে বাবাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে মনে হচ্ছে, মেয়ের আচরণে মুন্না সাউ রেগেছিলো। সেই কারণে শনিবার রাতে বাড়ির লোকেরা যখন ঘুমিয়েছিলো, তখন সে মেয়েকে গলা টিপে খুন করে। পরে নিজেই বলে মেয়ে গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে। ঠিক কি কারণে নিজের মেয়েকে বাবা খুন করলো, তা তাকে হেফাজতে নিয়ে পুলিশ জানার চেষ্টা করবে বলে জানা গেছে।
এদিকে এই ঘটনায় সাউ পরিবার যে এলাকায় থাকেন , সেখানকার বাসিন্দা বিশেষ করে প্রতিবেশীরা বিষয়টি জানতে পেরে বেশ অবাক হয়েছেন।  তারা ভাবতে পারছেন না যে, কি করে এই ঘটনা ঘটলো।

Leave a Reply