সালানপুরে তৃণমূলের মৌন মিছিল, বিজেপির আমলে জঙ্গি হামলা নিয়ে উঠল প্রশ্ন
বেঙ্গল মিরর, কাজল মিত্র:– জম্মু ও কাশ্মীরের পহেলগাঁওয়ে সন্ত্রাসবাদীদের নৃশংস হামলায় ২৬ জন নিরীহ হিন্দু পর্যটকের মৃত্যুর ঘটনায় গোটা দেশে ক্ষোভের ঢেউ ছড়িয়েছে।এই বর্বরোচিত হত্যা কাণ্ডের প্রতিবাদে পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনি বিধানসভার সালানপুরে শুক্রবার একটি মৌন মিছিল ও স্মরণসভার আয়োজন করে সালানপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস। আমডাঙ্গা মোড় থেকে ডাবর মোড় পর্যন্ত আয়োজিত এই মিছিলে অংশ নেন তৃণমূলের নেতা-কর্মীরা। ডাবর মোড়ে একটি সভায় নিহত দের স্মৃতির উদ্দেশ্যে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করা হয় এবং দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানানো হয়।




সভায় উপস্থিত ছিলেন সালানপুর ব্লক তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি মহম্মদ আরমান,সহ সভাপতি ভোলা সিং সহ আরো অনেকে।এদিন মহম্মদ আরমান তিনি তীব্র ভাষায় এই হামলার নিন্দা করে বলেন,“পহেলগাঁওয়ের এই নরকীয় হত্যাকাণ্ড মানবতার উপর কলঙ্ক। দোষীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে ফাঁসির সাজা দিতে হবে।” তিনি আরও অভিযোগ করেন যে, বিজেপি শাসনের আমলে জঙ্গি হামলার ঘটনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।তাঁর দাবি, “২০১৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ৩৭টি জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে,আর এগুলো সবই বিজেপির শাসনকালে।”
মহম্মদ আরমান প্রশ্ন তুলে বলেন, “নোটবন্দীর সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দাবি করেছিলেন যে, এই পদক্ষেপে জঙ্গিদের কোমর ভেঙে দেওয়া হয়েছে এবং জঙ্গি হামলা আর হবে না। কিন্তু বাস্তবে কী দেখছি? পহেলগাঁওয়ের মতো ঘটনা কেন বারবার ঘটছে?” তিনি কেন্দ্রীয় সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, “বড় বড় কথা বলে আর চলবে না। এবার কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করা জরুরি।”সভায় উপস্থিত স্থানীয় তৃণমূল নেতা ও কর্মীরা এই হামলাকে ভারতের গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উপর আঘাত হিসেবে বর্ণনা করেন। মিছিল ও সভায় অংশ নেওয়া স্থানীয় বাসিন্দারাও নিহতদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং এই ধরনের সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের তীব্র নিন্দা করেন।
প্রসঙ্গত,গত ২২শে এপ্রিল পহেলগাঁওয়ের বৈসরান উপত্যকায় সশস্ত্র জঙ্গিরা পর্যটকদের লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি চালায়। এই হামলায় ২৬ জন নিহত ও ২০ জনেরও বেশি আহত হন। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ এই ঘটনাকে সন্ত্রাসবাদী হামলা হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং পাকিস্তান-ভিত্তিক জঙ্গি সংগঠন লশকর-ই-তাইয়েবার সঙ্গে যুক্ত ‘দ্য রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট’(টিআরএফ)-এর নাম এই হামলার সঙ্গে জড়িয়েছে।
সালানপুরের এই মিছিল ও সভা শুধু পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদই নয়, বরং জঙ্গিবাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তোলার একটি প্রয়াস। তৃণমূল নেতৃত্বের এই উদ্যোগ এলাকায় ব্যাপক সাড়া ফেলেছে এবং রাজনৈতিক মহলে জঙ্গি হামলা নিয়ে তীব্র বিতর্কের সূচনা করেছে।