ASANSOL

আসানসোলে দেনার দায়ে মা ও ছেলের আত্মহত্যার চেষ্টার ঘটনা, ধৃত ভাড়াটিয়ার জেল হেফাজত, নমুনা সংগ্রহ ফরেনসিক দলের

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দোপাধ্যায়ঃ বাড়ি লিখে দেওয়ার জন্য ভাড়াটিয়ার চাপ ও প্রচুর টাকার দেনায় দায়ে সোমবার রাতে কার্বলিক এ্যাসিড খেয়ে ও হাতের কব্জির শিরা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলো মা ও ছেলে। পরে মায়ের মৃত্যু হয়। আসানসোল জেলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে ছেলে। ঐ বাড়ির ভেতরে একটি ঘর থেকে তিনটি পোষ্য বিদেশি কুকুরকে মৃত অবস্থায় পাওয়া গেছে। কার্বলিক এ্যাসিড খাওয়ার কারণে ঐ তিনটি কুকুরের মৃত্যু হয়। সোমবার রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আসানসোল হটন রোডের রাসডাঙ্গার সুমথপল্লী এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। এই ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে গ্রেফতার করা হলো ঐ বাড়ির একতলায় থাকা ভাড়াটিয়া নীলম বার্নওয়ালকে। ধৃতর বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ ধৃতর বিরুদ্ধে বিএনএসের ১০৮ নং ধারায় আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার একটি মামলা করেছে।

বুধবার ধৃতকে আসানসোল আদালতে তোলা হলে বিচারক তার জামিন নাকচ করে ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন। আগামী ৩০ জুলাই ধৃতকে আবারও জেল থেকে আদালতে পেশ করার জন্য বিচারক নির্দেশ দিয়েছেন। তবে ধৃত ভাড়াটিয়ার স্বামী রাজকুমার বার্নওয়ালকে পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। সে ফেরার রয়েছে।অন্যদিকে, বুধবার ঐ বাড়িতে নমুনা সংগ্রহ করে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ফরেনসিক দল। সোমবার রাতেই ঐ বাড়ির ভাড়াটিয়া মহিলা নীলম বার্নওয়ালকে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ আটক করেছিলো। তাকে জেরা করে, তার বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগের সত্যতা জানার চেষ্টা করেছে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ।এই ঘটনায় মৃতার নাম যুথিকা দাস (৬৮)। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছেলের নাম অরবিন্দ দাস (৪০)।

এদিন দুপুরে দাস বাড়িতে তদন্ত করতে যান আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারাটের ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) ধ্রুব দাস। তার সাথে ছিলেন এসিপি ( সেন্ট্রাল) বিশ্বজিৎ নস্কর। পুলিশ আধিকারিকরা বাড়ির দোতলার ঘরগুলো ভালো করে দেখেন। সোমবার রাতেই বাড়িটি পুলিশ তালা বন্ধ করে দেয়। বাড়ির সামনে পুলিশ পাহারা বসানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ডিসিপি ( সেন্ট্রাল) বুধবার বলেন, বলেন, সোমবার রাতে এই বাড়ির একটা ঘর থেকে পুলিশ মা ও ছেলের জখম ও অচৈতন্য অবস্থায় পাওয়া যায়। তাদেরকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে মাকে চিকিৎসক পরীক্ষা করে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ছেলে ভর্তি আছে। তার শারীরিক অবস্থা কথা বলার মতো হলে, তাকে জেরা করা হবে। পুলিশ এই ঘটনায় অভিযোগের ভিত্তিতে ঐ বাড়ির ভাড়াটিয়া নীলম বার্নওয়ালকে গ্রেফতার করেছে। তার বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়ার একটি মামলা করে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তদন্তের জন্য এই বাড়ি থেকে এদিন নমুনা সংগ্রহ করেছে ফরেনসিক দল। তিনি আরো বলেন, প্রাথমিক ভাবে মনে করা হচ্ছে, কোন চাপ ও আর্থিক দেনার দায়ে মা ও ছেলে এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সবকিছুই তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত ও ফরেনসিক দলের রিপোর্ট পেলে গোটা বিষয়টি আরো পরিষ্কার হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *