চিত্তরঞ্জনের নিরাপত্তা আরো জোরদার করতে প্রায় ৪০০ র বেশি সিসিটিভি, অবসরপ্রাপ্ত ৫০ জন সেনাকর্মী নিয়োগ এবং ড্রোনের প্রস্তাব
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য্য।আসানসোল। চারিদিকে পাঁচিল দেওয়া সংরক্ষিত রেল শহরের নিরাপত্তা বাড়ানোর জন্য দাবী জানালো চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার সিটু অনুমোদিত স্বীকৃত শ্রমিক সংগঠন লেবার ইউনিয়ন। চিত্তরঞ্জনের জেনারেল ম্যানেজার অনিল কুমার গুপ্তা, চিত্তরঞ্জনের আরপিএফ এর আইজি সত্য প্রকাশ ,প্রিন্সিপাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার এস ভার্মা সহ সমস্ত বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে লেবার ইউনিয়নের বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক হয়। বর্তমানে এখানে প্রায় আট হাজার কর্মী আছেন।৯০০ রেল আবাসন সম্পূর্ণ শূন্য অবস্থায় পড়ে আছে।এই বৈঠকেই ইউনিয়নের তরফে লিখিতভাবেই দাবী জানানো হয়েছিল চিত্তরঞ্জন রেল শহরে একাধিক অপরাধের ঘটনা ঘটেছে অতীতে ।সেজন্য আরো বেশি মাত্রায় নিরাপত্তা বাড়াতে সিসিটিভি বা অন্যান্য ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার। একই সঙ্গে চিত্তরঞ্জন রেলস্টেশন থেকে এক নম্বর গেট এবং তিন নম্বর গেটের কাছেই রাস্তা আরো চওড়া করার দাবি জানানো হয়েছে।














এদিন আরপিএফ এর পক্ষ থেকে একাধিক ইতিবাচক সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান ঐ ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাজীব গুপ্ত। রাজিব বাবু বলেন চিত্তরঞ্জনে গত এক বছরে পরপর একাধিক চুরি, খুনের ঘটনা ,ছিনতাই থেকে শুরু করে নানান ধরনের অপরাধমূলক কাজকর্ম ঘটেছে । এইসব অপরাধী অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বহিরাগতরা যুক্ত হচ্ছে। যেহেতু চিত্তরঞ্জন শহরটি সম্পূর্ণ রেল কর্তৃক সংরক্ষিত এবং আরপিএফ এর একটা বড় ভূমিকা আছে পাশাপাশি চিত্তরঞ্জন থানাতে যত পুলিশ কর্মচারী ও আধিকারিক দরকার তার তুলনায় অনেক কম পুলিশ আছেন। সেজন্য আরপিএফ একটি বড় ভূমিকা পালন করে নিরাপত্তার ক্ষেত্রে ।
এছাড়াও তিনি বলেন পরিত্যক্ত রেল আবাসন ভেঙে ফেলা হয়েছে এবং সেই সব জায়গাতে রেলের যে স্ট্রিটলাইট ছিল সেগুলো কেটে দেওয়া হচ্ছে। আমরা প্রিন্সিপাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার এর কাছে দাবি করেছি যেখানে আপনারা আবাসন গুলি ভাঙছেন সেখানে এখনো প্রচুর কর্মীরা ওইসব রাস্তার আবাসনে থাকেন ।স্বাভাবিকভাবেই সেখানকার রাস্তার আলো যাতে কেটে না দেন সেটা দেখতে হবে। এই সঙ্গে সঙ্গে হাইমাস্ক লাইটের আরো ব্যবস্থা করতে হবে। প্রিন্সিপাল চিফ ইঞ্জিনিয়ার জানিয়েছেন তাদের এখন থেকে সেটা মাথায় রাখা হবে ।এছাড়াও অন্তত ২৫ টি নতুন করে হাইমাস্ক লাইট লাগানোর প্রস্তাব তাদের কাছে আছে।তিনি বলেন আইজি সাহেব আমাদের জানিয়েছেন এখনো বেশ কিছু আরপিএফ এর পদ শূন্য থাকায় বাইরে থেকে অবসরপ্রাপ্ত নিরাপত্তাকর্মী নেয়া হবে এবং কয়েকশো সিসিটিভি লাগানো হবে। এছাড়াও রাতের বেলায় আলাদা করে মোটরবাইকে টহল দেয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে আরপিএফ এর তরফে। আমরা আরেকটি বিষয় বলেছি সেটি হচ্ছে প্রচুর ঠিকাদার কর্মী কারখানার ভেতরে বা বাইরে কাজ করছেন যাদের পরিচিতি পত্র নেই ।নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি অত্যাধিক গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। তাছাড়াও যাদের নিয়োগ করা হচ্ছে অন্তত অস্থায়ীভাবে তাদের ক্ষেত্রেও পুলিশ বা আর পি এফ এর তরফে সামগ্রিক ভেরিফিকেশন দরকার। এই দাবিও তারা জানান।
আর পি এফ এর চিত্তরঞ্জনের দায়িত্বে থাকা আইজি সত্য প্রকাশ বেঙ্গল মিররকে জানান আমাদের চিত্তরঞ্জন রেল শহরের আমরা নতুন করে আরো প্রায় ৪০০র বেশি সিসিটিভি বিভিন্ন জায়গায় লাগাবো যার মধ্যে নাইট ভিশন ক্যামেরাও অবশ্যই থাকবে। এছাড়া চিত্তরঞ্জনের জন্য আমরা একটি ড্রোন কেনার প্রস্তাব পাঠিয়েছি। ড্রোন এলে তাও আমরা সেটা ব্যবহার করব নিরাপত্তা সংক্রান্ত সমীক্ষার জন্য ।যেহেতু আমাদের প্রায় একশোর বেশি আরপিএফ এর পদ এখন শূন্য আছে সেই জন্য আমরা ৫০ জন প্রাক্তন অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মী নিয়োগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
চিত্তরঞ্জনে যে তিনটি গেট আছে এক ,দুই ও তিন ঝাড়খণ্ড এবং পশ্চিমবঙ্গের সাথে যুক্ত সেখানে আরো উন্নতমানের নিরাপত্তার দেখার জন্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হবে। এই শহরের সাথে যুক্ত পকেট গেট গুলির তে আমরা সিসিটিভি অবিলম্বে লাগাবো। তাছাড়া ইতিমধ্যেই আমাদের সাতটি মোটর বাইক কেনা হয়েছে ।এই বাইকে করে দিনে রাতে আমাদের কর্মীরা শহরের নিরাপত্তা দেখার কারণে টহল দেন। শহরের কোথাও যদি পাঁচিল ভাঙ্গা হয় তাহলে আমরা তা মেরামত করি এবং যদি জানতে পারা যায় কেউ এটা ভাঙছে সেক্ষেত্রে তাদের অর্থ দিয়েই আমরা এই মেরামত করানোর কথা বলি। এছাড়াও পুলিশ প্রশাসনের সাথেও আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ আছে।

