INDIA POST : ডাকঘরে হবে বিমান থেকে হোটেলে বুকিং
বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল: পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল দুর্গাপুর মহকুমার চল্লিশটি ডাকঘরে আগামী মাসের ডাক পরিষেবার সাথে বিমান, ট্রেন, বাসের টিকিট, হোটেলে বুকিং করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে এখানেই মিলবে ভোটার কার্ড। ইলেকট্রিক, গ্যাস,ব্রডব্যান্ড, মোবাইল বা ল্যান্ডলাইনের বিল মেটানো যাবে এখানে অনলাইনের মাধ্যমে। ইতিমধ্যেই রানীগঞ্জের সিয়ারসোল রাজ বাড়ি রেলের টিকিট বুকিং এর কাজ শুরু হয়ে গেছে।
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2023/10/IMG-20230207-WA0151-e1698295248979.webp?resize=768%2C512&ssl=1)
![INDIA POST](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2020/09/images-3-1.jpeg?resize=300%2C200&ssl=1)
এই কাজের জন্য এর মধ্যে আসানসোল রানীগঞ্জ এবং দুর্গাপুরের তিনটি প্রধান ডাকঘর ও বার্নপুর,রানীগঞ্জ এবং চিত্তরঞ্জনের তিনটি ডাকঘর সহ ছটি ডাকঘরের কর্মীদের প্রশিক্ষণ এর কাজ শেষ হলো বলে সোমবার জানান আসানসোল ডিভিশনের ডেপুটি সুপারিনটেনডেন্ট অফ পোস্ট অফিস পরিমল গোস্বামী।
যেহেতু এখন ডাকঘরে সেই অর্থে পোস্টকার্ড ইংল্যান্ড বা সাধারণ খামে আসা চিঠির পরিমাণ ব্যাপক ভাবে কমে গেছে। রেজিস্ট্রি পোস্ট ,মানি অর্ডার,কিছুটা আছে। সঙ্গে ডাকঘরের নিজস্ব ক্ষুদ্র সঞ্চয়ও কিছু প্রকল্প আছে। কিন্তু এসবের উপর নির্ভর করে ভারতবর্ষের প্রায় দেড় লাখ ডাকঘর গুলোকে বেশিদিন আর্থিক ভাবে টিকিয়ে রাখা যাবে না।এটা জেনেই ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার ডাকঘরে ব্যাংকিং এবং পাসপোর্ট ব্যবস্থা কোথাও কোথাও চালু করেছেন। যার মধ্যে এই দুটোই আসানসোল হেড পোস্ট অফিসে চালু হয়েছে।
চল্লিশটি ডাকঘর পরিষেবা চালু করার কথা
পশ্চিম বর্ধমান জেলার সিনিয়র সুপারিনটেনডেন্ট অফ পোস্ট অফিস বিমল প্রামাণিক জানান ভারতীয় ডাক বিভাগ ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের প্রায় তিনশ ডাকঘরে এইসব সুবিধা বা পরিষেবা চালু করার কথা ঘোষণা করেছে। এরমধ্যে চল্লিশটি ডাকঘর আমাদের আসানসোল অফিসের অন্তর্গত। প্রথম পর্যায়ে আমরা দুর্গাপুর ,আসানসোল ,রানীগঞ্জ ,চিত্তরঞ্জন,বার্নপুর কিছু বিষয় চালু করব। তিনি জানান যেসব ডাকঘরে তিন জন বা তার বেশি কর্মী আছেন ভবিষ্যতে সেই সমস্ত ডাকঘর এই পরিষেবা চালু করে দেবো ।
আমরা হিসেব করে দেখেছি চল্লিশটি ডাকঘরের মধ্যে বেশিরভাগ আসানসোল মহাকুমার মধ্যে পড়বে। কয়েকটি ডাকঘর দুর্গাপুর মহাকুমার মধ্য চিহ্নিত করা হয়েছে । তিনি জানান এই জন্য আমরা চল্লিশটি ডাকঘরের আশি জন কর্মীকে প্রশিক্ষণ দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এই প্রশিক্ষণ বর্তমানে দুর্গাপুরের তিন নম্বর ডাকঘরের ট্রেনিং সেন্টারে হচ্ছে। এছাড়াও নিয়মিত অনলাইনে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। আমরা আগামী মাসে এর কয়েকটি পরিষেবা চালু করে দিতে পারব দুর্গাপুর ,আসানসোল ,রানীগঞ্জ এ। সিয়ারসোল রাজবাড়ি ডাকঘরে রেলের বুকিং পরিষেবা ইতিমধ্যেই চালু হয়েছে। তিনি জানান এখন থেকে ডাকঘরে একটা লম্বা তালিকা থাকবে। যেখানেই এই ধরনের প্রচুর কাজ হবে ।যেমন তিনি বলেন লাইফ সার্টিফিকেট জমা দেয়ার কাজও ভবিষ্যতে ডাকঘরে করা যাবে ।
ভোটার কার্ডও এবার থেকে মিলবে। সমস্ত সরকারি পরিষেবা যেমন সরকারের বিদ্যুৎ বিল, বাড়ির গ্যাসের বিল, ব্রডব্যান্ড পরিষেবা, মোবাইল ল্যান্ডলাইন, ফোনের বিল এই সমস্ত কিছু এখানে অনলাইনে পেমেন্ট ধীরে ধীরে করা যাবে। তাছাড়া পেনশনসহ বিভিন্ন সামাজিক প্রকল্পের টাকা, নানান সরকারি অনুদান পরিষেবা এখান থেকে মিলতে চলেছে। এই দপ্তরের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক বলেন এমনকি কেউ যদি তার নিজের জমির তথ্য জানতে চান বর্তমানে যেমন কেউ আলাদা করে কোন সাইবার ক্যাফেতে গিয়ে টাকা দিয়ে সেই তথ্য সংগ্রহ করেন এখানে সেই কাজ ভবিষ্যতে হতে পারে। বর্তমানে ব্যাঙ্কিং পরিষেবা চালু আছে তাকে আরও উন্নত করার কথাও বলা হয়েছে।
ট্রেনের টিকিট কাটা কিম্বা যদি বাসের টিকিট দরকার হয় অথবা হোটেল বুকিং সবই
আসানসোল থেকে ধরুন কেউ দেরাদুনে ,কেউ কুলু ,মানালি, কেউবা দার্জিলিং বেড়াতে যেতে চাইছে। তাহলে তার ট্রেনের টিকিট কাটা কিম্বা যদি বাসের টিকিট দরকার হয় অথবা হোটেল বুকিং সবই কিন্তু এই ডাকঘর থেকেই করা সম্ভব হবে। সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে বাইরে অনেক ছাত্র-ছাত্রী পড়তে যাবার জন্য অনলাইনে আবেদন করেন ভর্তির জন্য। সেই কাজ কিন্তু আগামী দিনে ডাকঘর থেকেই করা সম্ভব হবে। যারা বিভিন্ন বীমা কোম্পানির প্রিমিয়াম দেওয়ার জন্য ঘোরাফেরা করেন বা সেইসব অফিসে যান এখন থেকে সেই কাজটা হতে পারে।
বিমল বাবু বলেন ইতিমধ্যেই আমরা ডাকঘর গুলিতে গঙ্গাজল বিক্রি করে খুব ভালো সাড়া পেয়েছিলাম। আমাদের কাছে আসানসোল রানীগঞ্জ এবং দুর্গাপুর ডাকঘর এর জন্য গড়ে ৩০০ করে ২৫ টাকা দামের এন নাইনটি ফাইভ মাস্ক আসে ।দু’দিনের মধ্যেই সেগুলো বিক্রি হয়ে গেছে। এর চাহিদাও প্রচুর ।সেটাও আমরা কলকাতায় লিখে পাঠিয়েছি এবং আমরা বলেছি আমাদের প্রচুর পরিমাণ এই মাস্ক পাঠান যা আমরা একেবারে গ্রামীণ এলাকার ডাকঘর গুলোতেও বিক্রি করতে পারব ।অর্থাৎ ডাকঘরের রানারের শুধু চিঠি বিলি নয় ।
এখন সমস্ত স্তরের পরিষেবা দেওয়া পরিকল্পনা ভারত সরকার ডাকঘরের মাধ্যমে নিয়েছেন ।আসানসোল-দুর্গাপুর রানীগঞ্জ শিল্পাঞ্চলের মানুষকে আমরা সহজেই তা পৌঁছে দিতে চাই।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক উচ্চপদস্থ ডাক বিভাগের আঞ্চলিক অধিকর্তা জানান বর্তমানে ডাক দপ্তরের যে আয় এবং কর্মচারীদের বেতন তার মধ্যে সমতা নেই। কয়েক হাজার কোটি টাকার বেশি ঘাটতি হচ্ছে। স্বাভাবিকভাবেই তারা তাদের বিকল্প আয়ের কথা ভাবনাচিন্তা শুরু করেছেন সারাদেশে ডাকঘর গুলির জন্য । এই পদক্ষেপ সে দিকেই এগোচ্ছে।