BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJANBengali NewsLatestNewsWest Bengal

পলিটেকনিক কলেজের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে যৌন হেনস্তার অভিযোগ

রূপনারায়ণপুর নজরুল সেন্টেনারি পলিটেকনিক কলেজ, সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনলো এক পড়ুয়া

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১০ অক্টোবরঃ পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রুপনারায়ণপুরের হিন্দুস্থান কেবলসের নজরুল সেন্টিনারি পলিটেকনিক কলেজের এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কলেজেরই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক পড়ুয়াকে দীর্ঘদিন ধরে যৌন হেনস্থা করার অভিযোগ উঠলো। এই অভিযোগ কলেজ কর্তৃপক্ষ মেলের মাধ্যমে পেয়ে শুক্রবার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন বলে শনিবার জানা যায়। এই অভিযোগ ও ঘটনার কথা প্রকাশ্যে আসার পরেই কলেেজর অন্দরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।

আরো জানা গেছে, নজরুল সেন্টিনারি পলিটেকনিক কলেজের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ঐ পড়ুয়া মেলের মাধ্যমে গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে সেই বিভাগেরই এক অধ্যাপকের বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। সেই অভিযোগ পেয়েই কলেজ কর্তৃপক্ষ নড়েচড়ে বসে। ইন্টার্নাল কমপ্লেন কমিটি বা আইসিসির বৈঠক ডেকে গোটা ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করে এক সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে ।

৫ সদস্যর কমিটি গঠন করে তদন্ত শুরু কতৃপক্ষে

সেই নির্দেশের কথা অভিযোগকারী পড়ুয়া ও পলিটেকনিকের উচ্চ কর্তৃপক্ষকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত (ইনচার্জ) অধ্যক্ষ ফারুক আলি। ফারুক আলি আরো জানান, ইন্টার্নাল কমপ্লেইন কমিটি থেকে একজন অবসর নিয়েছেন। তাই নতুন করে শুক্রবার পাঁচ জনের কমিটি গঠন করা হয়েছে। সেই কমিটির হাতে তদন্তের দায়িত্বও তুলে দেওয়া হয়েছে ।

সঠিক তদন্ত শেষ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেই হবে

বৃহস্পতিবার বিকেলে কলেজের অফিসিয়াল মেলে ঐ পড়ুয়া অভিযোগ করেছে । তা আমরা পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিয়েছি। ঐ অধ্যাপক ও পড়ুয়াকে এই তদন্তের কথা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন তৃণমূল ব্লক ছাত্র পরিষদের সভাপতি তথা কলেজের তৃতীয় বর্ষের পড়ুয়া ছাত্র সংসদের সভাপতি মিঠুন মন্ডল । তিনি নিজে অভিযোগকারী পড়ুয়া ও কলেজের ইনচার্জ ফারুক আলির সাথে কথা বলেছেন। মিঠুন মন্ডল বলেন, এটা গুরুতর একটা অভিযোগ। এর সঠিক তদন্ত শেষ করে দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতেই হবে। কলেজের স্বার্থে অবিলম্বে ব্যবস্থাও নেওয়া উচিত।


অভিযোগকারী ঐ পড়ুয়া গত ৮ অক্টোবর বর্ধমান থেকে ইমেলের মাধ্যমে কলেজ কতৃপক্ষর কাছে লিখিত অভিযোগ পাঠিয়েছেন। সেই অভিযোগে পড়ুয়া জানিয়েছেন, ২০১৮ সালে সে এই পলিটেকনিক কলেজে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে ভর্তি হয়। ভর্তির কিছুদিন পর থেকেই সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের এক অধ্যাপক অভিষেক বেরা তার সঙ্গে অভব্যতা শুরু করেন‌। নানান অছিলায় তিনি তার শরীর স্পর্শ করা, যৌনতার কথা বলতেন। এমনকি মোবাইলে মেসেজ পাঠানো, পরীক্ষার সময় ক্লাসরুমের শেষ বেঞ্চিতে বসতে বাধ্য করতেন তিনি। এছাড়াও তার পাশে শরীর ঘেঁষে অধ্যাপক বসে থাকায় ঐ পড়ুয়া প্রচণ্ড মানসিক চাপে পড়ে যেতো ।

সে ঐ অধ্যাপকের নানা কুপ্রস্তাবে সাড়া দেননি বলে তৃতীয় সেমিস্টারে তাকে ফেল করিয়ে দেওয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ করেছে ঐ পড়ুয়া। পড়ুয়া জানিয়েছে , প্রথমদিকে কলেজ হোস্টেলেই সে থাকতো । এদিকে অধ্যাপকদের স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতেন ঐ অধ্যাপকও। তাই ঐ পড়ুয়া অধ্যাপকের হাত থেকে বাঁচতে সে কলেজ হোস্টেল ছেড়ে রুপনারায়নপুরের দেশবন্ধু পার্কে একটি মেসে থাকা শুরু করে। কিন্তু তাতেও হেনস্থার হাত থেকে সে রেহাই পায়নি বলে অভিযোগে পড়ুয়া জানিয়েছে । এই অবস্থায় পলিটেকনিক কলেজে তার পড়াশোনা চালানো যথেষ্ট চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে পড়ুয়ার দাবি।


যে অধ্যাপকের বিরুদ্ধে অভিযোগ সেই অভিষেক বেরা বলেন, আমি কলেজের অধ্যক্ষের চিঠি পাওয়ার পর এই ঘটনা ও অভিযোগের কথা শুক্রবারই জেনেছি। তার দাবি, এটা সম্পূর্ণ অসত্য। অধ্যাপক আরো বলেন, আমার নাম জড়িয়ে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। তদন্ত হলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।

Leave a Reply