ASANSOLBengali News

কয়লা কান্ড : ” হুলিয়া ” ও “গ্রেফতারী পরোয়ানা” খারিজের দাবিতে বিশেষ সিবিআই আদালতে আবেদন লালা ও সঙ্গী রত্নেশ ভার্মার

সওয়াল-জবাব শুনে রায় ঘোষণা স্থগিত রাখলেন বিচারক

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১১ ফেব্রুয়ারিঃ বারবার নোটিশ দিয়ে ডেকে পাঠানোর পরে হাজিরা না দেওয়ায় বেআইনী কয়লা কান্ড মুল চক্রী বা কিং পিন অনুপ মাজি ওরফে লালাকে ” এ্যাবসকন্ড ” বা ” ফেরার ” ঘোষণা করেছিলো আসানসোলের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালত। একই তকমা দেওয়া হয়েছুলো লালার অন্যতম সহযোগী রত্নেশ ভার্মাকে।

গত ১১ জানুয়ারি ৮২ সেকশান বা ধারায় এই মর্মে একটি নোটিশ জারি করেছিলেন আসানসোল সিবিআই আদালতের বিচারক জয়শ্রী বন্দোপাধ্যায়। নোটিশে বলা হয়েছিলো , আগামী ১১ ফেব্রুয়ারির মধ্যে দুজনকেই আসানসোল সিবিআই আদালতে হাজিরা দিতে হবে। এই সময়ের মধ্যে হাজিরা না দিলে, আইন মোতাবেক তাদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে।

লালার বাড়ির দেওয়ালে লাগিয়া দিয়ে এসেছিলেন


গত ১৪ জানুয়ারি সেই নোটিশ প্রথমে সিবিআইয়ের ৯ জনের একটি দল পুরুলিয়ার নিতুরিয়ার ভামুরিয়াতে লালার বাড়ির দেওয়ালে লাগিয়া দিয়ে এসেছিলেন। একইভাবে, সেদিন সকালে সিবিআইয়ের ৪ জন অফিসারের একটি দল আসানসোলের কুলটির মিঠানির বড়তোড়িয়ায় রত্নেশ ভার্মার বাড়িতে আসে। সেখানেও সিবিআইয়ের অফিসাররা রত্নেশ ভার্মাকে পায়নি। সিবিআইয়ের অফিসাররা তাদের সঙ্গে কথা বলে রত্নেশের বাড়ির দেওয়ালে নোটিশ লাগিয়ে দিয়েছিলেন। এই সময়ের মধ্যে সিবিআইয়ের অফিসাররা লালা ও তার সঙ্গীর কোন খোঁজ পায়নি।

লালা ও রত্নেশ সিবিআই আদালতের জারি করা হুলিয়া ও গ্রেফতারি পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ


কিন্তু, বৃহস্পতিবার লালা ও রত্নেশ সিবিআই আদালতের জারি করা হুলিয়া ও গ্রেফতারি পরোয়ানাকে চ্যালেঞ্জ করে আসানসোলে বিশেষ সিবিআই আদালতে আপিল করে। তাদের হয়ে এদিন সিবিআই আদালতে বিচারক জয়শ্রী বন্দোপাধ্যায়ের সামনে সওয়াল করেন শেখর কুন্ডু, আবদুল রউফ ও কুনাল গাঙ্গুলি। শেখরবাবু বলেন, হাইকোর্টে করা অনুপ মাজি ওরফে লালা সিবিআইয়ের তদন্ত করার এক্তিয়ার নিয়ে একটি মামলা করেছিলো। সেই মামলার রায়ে ডিভিশন বেঞ্চের বিচারক জানান, সিবিআইয়ের রেলের জায়গা ছাড়া অন্য জায়গায় তদন্ত করতে যেতে পারবে না। অন্য জায়গায় তদন্ত করতে হলে রাজ্য সরকারের অনুমতি নিতে হবে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে সিবিআই হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে যায়। সেখানে তার শুনানি হলেও, রায় ঘোষণা এখনো হয়নি। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে লালা ও তার সঙ্গীর নামে আসানসোলের সিবিআই আদালত যে হুলিয়ার নোটিশ ও গ্রেফতারী পরোয়ানা জারি করেছে তা খারিজ করা হোক।

শেখরবাবুদের এই সওয়ালের পরে সিবিআইয়ের আইনজীবী পাল্টা সওয়াল করে বলেন, এদিন ঐ দুজন পাওয়ার অফ এ্যাটোর্নির মাধ্যমে আপিল করা হয়েছে। তা যেন আদালত গ্রহণই না করে। অবিলম্বে তা খারিজ করা হোক। তখন শেখরবাবুরা আবার বলেন, ঐ একই কারণে সিবিআই আবেদন করেছে। তাহলে, সেটাও হয়না।

এই সওয়াল-জবাবের শেষে বিচারক এদিন রায় ঘোষণা করেননি। রায় পেন্ডিং রাখেন বিচারক।
প্রথমে, আসানসোলের সিবিআই আদালত এই দুজনের নামে জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলো। তাদেরকে নোটিশ দিয়ে সিবিআই নিজাম প্যালেসে ডেকে পাঠিয়েছিলো। তাদের বাড়ি ও অফিসেও সিবিআইয়ের অফিসাররা হানা দিয়েছিলো। কিন্তু তাদেরকে পায়নি সিবিআই। এতকিছুর পরেও তারা হাজিরা দেয়নি।


সময়মতো হাজিরা না দেওয়ায় আসানসোল সিবিআই আদালত জামিন অযোগ্য ধারায় গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করার পরে লালা ও তার সহযোগীর সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের নোটিশ জারি করেছিলো।

কয়লা কান্ড সিআইডিও তদন্তে নেমেছে


প্রসঙ্গতঃ, এই মামলায় আসানসোল, রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া ও দূর্গাপুরের একাধিক ব্যবসায়ীর বাড়িতে সিবিআই হানা দিয়েছিলো। তার আগে, ইসিএলের আধিকারিকদের বাড়ি ও অফিসে তল্লাশি করেছে সিবিআই। চলতি মাসে আবার হাইকোর্টের নির্দেশে এই মামলায় রাজ্য পুলিশের সিআইডিও তদন্তে নেমেছে।

https://bengalmirrorthinkpositive.com/2021/02/11/আসানসোল-প্রগতি-ও-বিএন-ঘাঁ/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *