ASANSOL

School Reopens: ১১ মাস পরে স্কুলের ক্লাস ও বন্ধু, উচ্ছ্বসিত পড়ুয়ারা

খুশি শিক্ষক শিক্ষিকারা

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১২ ফেব্রুয়ারিঃ School Reopens কমবেশি ১১ মাস পরে আমরা আমাদের বন্ধুদের সঙ্গে আবার ক্লাসে, স্কুলের পোশাকে ফিরে এলাম। যদিও বন্ধুদের পুরো মুখ দেখতে পারিনি। কেননা মাস্কে ঢাকা ছিলো আমাদের সবার মুখে। তবুও দারুণ আনন্দ লাগছিল। মনের মধ্যে ছিলো আলাদা একটা উচ্ছাসও । শুক্রবার এই রকম প্রথম প্রতিক্রিয়া ছিলো এতদিন পরে স্কুলে আসা তাপস, রুপশ্রী থেকে তমালদের।

জেলার ২৬৯ টি স্কুলের ক্লাস খুললো


করোনার জন্য ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে দেশ তথা রাজ্যের সঙ্গে পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের সব স্কুল বন্ধ হয়ে যায়। এতদিন বন্ধ হয়ে থাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্কুল গুলো আবার চালু হলো। তবে প্রাথমিক থেকে অষ্টম শ্রেণীর ক্লাস এখনো না খোলায় পড়ুয়াদের মধ্যে একটা ক্ষোভ ও হতাশা থেকেই গেছে। এদিন থেকে পশ্চিম বর্ধমান জেলার ২৬৯ টি স্কুলের নবম, দশম, একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণির ক্লাস খুললো। রাজ্য সরকারের ঠিক করে দেওয়া সতর্কতা ও বিধি মেনে পড়ুয়াদের স্কুলে আসতে হয়েছে।


আসানসোলের একটি হাইস্কুলের নবম শ্রেণীর পড়ুয়া অনিমেষ রায় বলে, এতদিন পরে স্কুলে বন্ধুদের পেয়ে বারবার জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছিল । কিন্তু করোনা বিধির জন্য সেই সুযোগ ছিল না। এতদিন যাদের মুখ দেখিনি তাদের মুখে ঢাকা থাকলেও, সামনে থেকে দেখে ও গলা শুনে সেই পুরনো আনন্দ গুলো মনের মধ্যে বারবার ফিরে আসছিল।

আসানসোলের একটি স্কুলের পড়ুয়া অভিষেক রায় বলে, সকাল থেকেই স্কুলের পোশাক পরে অপেক্ষা করছিলাম কখন স্কুলে যাব। রাতে ভালো করে ঘুমও হয়নি। এদিন অবশ্য বাংলা বনধের প্রভাবে আমাদের স্কুলে পড়েনি । স্কুলে এসে শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী, ক্লাস, ব্ল্যাকবোর্ড দেখে দারুণ আনন্দ হচ্ছিল। সেই সঙ্গে মনে হচ্ছিলো অনলাইনে পড়া আর স্কুলের বেঞ্চে বসে সবার সঙ্গে পড়ার মধ্যে কতটা তফাৎ।


ইস্পাত নগরী বার্ণপুরের একটি স্কুলে দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়া সন্দীপ মুখোপাধ্যায় বলে, এতদিন পর স্কুলে আসতে পেরে এমন একটা অনুভুতি হচ্ছিলো, যা ভাষায় বলতে পারবোনা । তবে তার মধ্যে একটা দুঃখও ছিলো। কেননা একদিনে যেহেতু সবাইকে নিয়ে ক্লাস করা যাবে না তাই অনেক বন্ধুর মুখ এদিন দেখতে পারলাম না। বেঞ্চে বসেছি ঠিকই।

একটা বেঞ্চে দুজন করে বসার ব্যবস্থা । পাশাপাশি নয়, দূরে দূরে বসা। আমরা এদিন প্রাক্টিক্যাল ক্লাস করলাম । স্কুলের অন্য পড়ুয়ারা বলে, এতদিন পর স্কুলে এসে প্রাক্টিক্যাল ক্লাস করে বুঝতে পারি যে, অনলাইনে হয়তো কিছুটা হলেও বই পড়ে নেওয়া যায়। কিন্তু স্কুলে না এলে প্রাকটিকাল করা যায় না।এতদিন পর তাই আজকে স্কুলে এসে আনন্দটা বেশি পেলাম।


আসানসোলের উমারানি গরাই মহিলা কল্যান স্কুলের শিক্ষিকা শ্রাবণী বন্দোপাধ্যায় বলেন, এদিন ক্লাসে পড়ুয়াদের দেখে শুধু আমার নয়, স্কুলের সব শিক্ষিকার দারুণ আনন্দ হয়েছে। মেয়েরাও খুব খুশি। যতই হোক স্কুল তো আমাদের কাছে ” সেকেন্ড হোম”। এতদিন কি করে বাড়িতে কাটিয়েছি, তা আমরাই। তবে প্রথম দিন বাংলা বনধ হয়ে যাওয়ায় অনেক মেয়ে স্কুলে আসতে পারেনি।


School Reopens শুধু আসানসোল, বার্নপুর নয় গোটা শিল্পাঞ্চলের সব স্কুলের পড়ুয়ারা এতদিন পরে পোশাক পড়ে ও ব্যাগ নিয়ে স্কুলে আসার উৎসাহ ছিল চোখে পড়ার মতো।

Leave a Reply