ASANSOLBengali NewsPANDESWAR-ANDALPolitics

পান্ডবেশ্বরের পদ্ম শিবিরের প্রার্থী জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে খুনের ছক,বিজেপি ও শাসক দলের মধ্যে বাকযুদ্ধ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, অন্ডাল ও আসানসোল , ২৫ মার্চঃ একটি ঘরের মধ্যে বোমা বাঁধার সময় সেই বোমা বিস্ফোরণে মৃত্যু হলো এক তৃণমূল কংগ্রেস কর্মীর। পান্ডবেশ্বরের বিদায়ী বিধায়ক তথা বিজেপির প্রার্থী জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে খুন ছক করতেই এই বোমা বাঁধার ছক করা হচ্ছিলো বলে পদ্ম শিবিরের দাবি। ঘটনাটি ঘটেছে বুধবার গভীর রাতে পশ্চিম বর্ধমান জেলার পাণ্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রের অন্ডাল থানার অন্তর্গত জামবাদ বেনেডি এলাকার। মৃত তৃনমুল কংগ্রেসের কর্মীর নাম সরবন চৌধুরী (৪০)।


বৃহস্পতিবার সকালে আসানসোল জেলা হাসপাতালে তৃনমূল কংগ্রেসের কর্মীর মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। তৃনমুল কংগ্রেসের মৃত কর্মীর হাত, মুখ সহ শরীরের বেশকিছু অংশ বোমায় পুড়ে যায়।
ঠিক এক মাস পরে আগামী ২৬ এপ্রিল পশ্চিম বর্ধমান জেলার পান্ডবেশ্বর বিধান সভা সহ নয়টি কেন্দ্রে ভোট হবে। তার আগে এই বোমা বিস্ফোরণের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পান্ডবেশ্বর বিধানসভা কেন্দ্রে শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেস ও বিজেপির মধ্যে রাজনৈতিক চাপানউতর শুরু হয়েছে। পান্ডবেশ্বরের বিদায়ী বিধায়ক তথা এবারের বিজেপি প্রার্থী জিতেন্দ্র তেওয়ারি অভিযোগ করে বলেন, তাকে খুন করার চক্রান্ত করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এরপরই বাকযুদ্ধে জড়িয়ে পড়েন দুই দলের নেতারা। জেলা প্রশাসনের কাছ থেকে এই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে নির্বাচন কমিশন। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।


স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বুধবার গভীর রাতে জামবাদ বেনেডি এলাকায় একটি বাড়িতে বোমা বাঁধছিলো বেশ কয়েকজন। তারমধ্যে সরবন চৌধুরী নামে ঐ তৃনমুল কংগ্রেসের কর্মীও ছিলো। সেই সময় আচমকাই বোমা বিস্ফোরণ হয়। জানা গেছে সেই বিস্ফোরণে জখম হন সরবন চৌধুরী সহ আরো তিনজন। রাতেই সরবনকে রানিগঞ্জের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বৃহস্পতিবার সকালে সেখানে মৃত্যু হয় তার।

সরবনের সঙ্গে থাকা যে তিনজন জখম হয়েছে বলে জানা গেছে , তারমধ্যে এক বা দুজন মারা যেতে পারে বলে সন্দেহ এলাকাবাসীদের। তবে তারা কোথায় ভর্তি রয়েছে তা দুপুর পর্যন্ত জানা যায়নি। পুলিশও তাদের ব্যাপারে কিছু জানাতে পারেনি। যে ঘরে বসে বোমা বাঁধার কাজ করা হচ্ছিল বিস্ফোরণের সেই বাড়িটিরও ক্ষতি হয়েছে। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে অন্ডাল থানার পুলিশ। স্বাভাবিকভাবে ঘটনার জেরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়।


এদিকে, বৃহস্পতিবার সকালে জিতেন্দ্র তেওয়ারি অভিযোগ করে বলেন, আমাকে মারার পরিকল্পনা করছে তৃনমুল কংগ্রেসের নেতারা। তার মধ্যে মুল পরিকল্পনাকারী হলেন এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান। তিনি আরো বলেন, আমি যতদিন বিধায়ক ছিলাম, ততদিন পান্ডবেশ্বর শান্ত ছিলো। এবার এলাকায় নতুন করে সন্ত্রাস শুরু হবে। আমি পুলিশ প্রশাসনের কাছে আবেদন করছি নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ মতো এখনই তৃনমুল কংগ্রেসের গুন্ডাদের গ্রেফতার করা হোক।


এদিন বিকালে আসানসোলের নিংঘার একটি হোটেলে জেলা বিজেপির পক্ষ থেকে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করা হয়। সেখানে জিতেন্দ্র তেওয়ারি ছাড়াও বিজেপির জেলা নেতারা ছিলেন। সেখানে জিতেন্দ্র তেওয়ারি আবারও অভিযোগ করে বলেন, আমরা নির্বাচন কমিশনকে সব জানাচ্ছি। আমাদের ভয় দেখিয়ে কোন লাভ নেই। জনগন শেষ কথা বলবে।


তবে এলাকার পঞ্চায়েত প্রধান বীর বাহাদুর সিং সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটা বিজেপির আদি ও নব্যর গোলমাল। যে মারা গেছে, সে আমাদের দলের কেউ নয়। মৃত ব্যক্তি বুধবারই বিজেপিতে যোগ দিতে গেছিলো বলে আমরা জানতে পেরেছি।


অন্যদিকে, পুলিশ জানায় ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। যে বাড়িতে বোমা বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে, তার মালিককে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।
প্রসঙ্গতঃ, পান্ডবেশ্বর বিধান সভায় এবারের নির্বাচনে জিতেন্দ্র তেওয়ারির মূল লড়াই তৃনমুল কংগ্রেসের নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সঙ্গে।

Leave a Reply