ASANSOLBengali NewsCOVID 19Health

রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, টিকার আকাল

বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল : একদিকে জেলাজুড়ে প্রত্যেকদিন করণ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে । অন্যদিকে করোনাভাইরাস টিকার আকাল দেখা দেওয়ায় জেলা হাসপাতাল,ইস্কোর হাসপাতাল, চিত্তরঞ্জন রেল হাসপাতাল সহ জেলার বেশিরভাগ স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলিতে ভ্যাক্সিনেশন কর্মসূচি আপাতত স্থগিত হয়ে গেল। এর ফলে অত্যন্ত অনিশ্চয়তায় পড়ে গেলেন ভোটের কাজে নিযুক্ত কর্মীরা। কারণ তাদের প্রত্যেকেরই প্রথম ডোজ নেওয়ার পর ভোটের কাজে যাওয়ার আগেই দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার কথা। সেই দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার তারিখ অনেকের পেরিয়ে যাবে।

সোমবারও কোন কোন ভোট কর্মী গিয়ে দ্বিতীয় ডোজের টিকা  পাননি।  সেই কারণে দুশ্চিন্তায় ভোট কর্মী থেকে ভোটের সাথে যুক্ত সরকারি আধিকারিকরাও। এছাড়াও সাধারণ মানুষ যারা অনেক আগে প্রথম ডোজ নিয়েছেন এবং দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার জন্য নির্দিষ্ট তারিখের অপেক্ষা করছেন  হাসপাতালে গিয়ে তারাও ফেরত আসছেন।সোমবার এই চিত্র একাধিক জায়গায় ধরা পড়েছে । প্রথম ডোজ যারা নিয়েছেন তাদের জন্য দ্বিতীয় ডোজ সংরক্ষণ করে রাখার কোনো নির্দেশ অবশ্য  নেই বলে জানিয়েছেন জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অশ্বিনী কুমার মাজি। তবে তিনি বলেন ৪২ থেকে ৫৫ দিন পর্যন্ত দুটি ডোজের মধ্যে আলাদা আলাদা ভ্যাকসিন এর ক্ষেত্রে ব্যবধান আছে ।আশা করি তার মধ্যে এসে যাবে।

  অথচ দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ঘোষণা করেছেন রবিবার থেকে চার দিনের জন্য দেশজুড়ে টিকা উৎসব পালন করা হোক এবং মানুষকে টিকা নেয়ার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করা হোক। সেই টিকাই দিল্লি থেকে কেন্দ্রীয় সরকার না পাঠানোই এই রাজ্যসহ পশ্চিম বর্ধমান জেলায় এখন চরম করোনা ভ্যাকসিন সংকটে পড়েছেন।

চিত্তরঞ্জন কে জি হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে সেখানে ৪১৭  জনকে গত  ৮ এপ্রিল শেষদিন টিকা দেওয়া হয়।। তারপর থেকেই টিকা মজুত না থাকায় কাউকে দেওয়া যাচ্ছে না। এই শহরে ও দ্রুত গতিতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। রেল কর্তৃপক্ষ সেই কারণে নতুন করে বেশ কিছু নির্দেশ জারী করেছেন। বিশেষ করে মাস্ক ব্যবহারের জন্য বলা হয়েছে। 

অন্যদিকে সালানপুর ব্লক পিঠাকিয়ারি গ্রামীণ হাসপাতালেও একই অবস্থা। এখানকার   বি এম ও এইচ  সুব্রত সিট বলেন  আমাদের ব্লক থেকেই চিত্তরঞ্জন রেল হাসপাতালে পাঠানো হতো  ভ্যাক্সসিন। সব মিলিয়ে প্রায় ৮০০ র মতো  আমরা প্রত্যেকদিন টিকা দিচ্ছিলাম। আমাদের না থাকায় আমরা চিত্তরঞ্জন রেল হাসপাতালের পাঠাতে পারছিনা।  তাই ওনাদেরও বন্ধ। ইসকো হাসপাতালে  এক  চিকিৎসক  জানিয়েছেন  তারাও রাজ্য সরকারের কাছ থেকেই  এই ভ্যাকসিন পেতেন । এই মুহূর্তে তাদেরও নেই।  এদিকে ইস্কোতে আক্রান্তের সংখ্যা  বাড়ছে কর্মী এবং তাদের পরিবারের মধ্যে। 

যারা ভোটের জন্য আগে থেকেই  প্রথম ডোজ নিয়েছেন  তারা অপেক্ষা করছিলেন দ্বিতীয় ডোজ এর জন্য ।এমন বেশ কয়েকজন ভোট কর্মী   বলেন  আমরা  ভয়ে ভয়ে ভোট করতে যাব। যদি এর মধ্যে আমাদের না দেওয়া হয় । আমাদের জন্য দ্বিতীয় ডোজ সংরক্ষিত রাখা উচিত ছিল।এই অবস্থায় লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। ২৪ ঘন্টায়  জেলায় করোনা বেড়ে  হয়েছে ২০৭ ।শুধুমাত্র চিত্তরঞ্জন শহরে গতকাল পর্যন্ত করোনা সংক্রমিতের সংখ্যা ২৩৮ জন। নিবিড় টিকাকরণ ছাড়া করোনাভাইরাস থেকে মুক্তি পাওয়া যখন প্রায় অসম্ভব তখন হঠাৎ করে দিনের পর দিন টিকার আকাল থাকায় জনমানসে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।

জেলার ডেপুটি চিফ মেডিকেল অফিসার কেকা মুখোপাধ্যায় বলেন রাজ্যেই যেখানে। ঐ ভ্যাকসিন নেই সেখানে আমরা জেলা থেকে দেবো কি করে। আমাদের জেলায় যতটা ছিল আমরা সব জায়গায় ভাগ করে দিয়েছিলাম । এই মুহূর্তে আর নেই। জেলা হাসপাতালের সুপার নিখিল চন্দ্র দাস বলেন আমাদেরও প্রচুর মানুষ ফোন করছেন বা আসছেন। আমাদের আজ থেকে আর নেই।

Leave a Reply