ASANSOL

ভ্যাকসিন না পেয়ে বিক্ষোভ আসানসোলের স্বাস্থ্য কেন্দ্রে, পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ

বেঙ্গল মিরর,রাজা বন্দোপাধ্যায়, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত ও কাজল মিত্র, আসানসোল, ২৬ জুলাইঃ করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে বলতে গেলে প্রায় সব জায়গা থেকেই প্রতিদিনই অসন্তোষ, হয়রানি, ঘেরাও, বিক্ষোভের অভিযোগ উঠছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্র বা হাসপাতাল থেকে ভ্যাকসিন না পেয়ে গন্ডগোল ও ঝামেলারও খবর পাওয়া যাচ্ছে। সোমবার একই ভাবে যেমনটা হলো আসানসোল পুরনিগমের ৮৭ নম্বর ওয়ার্ডে মহিশীলায় আরবান প্রাইমারি হেল্থ সেন্টার বা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে। এদিন সেখানে ভ্যাকসিন না পেয়ে বিক্ষোভ দেখালেন স্থানীয় গ্রামবাসীরা। ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এদিন সকাল থেকেই স্বাস্থ্য কেন্দ্র চত্তরে ছিল ভ্যাকসিন নিতে আসা সাধারণ মানুষের ব্যাপক ভিড়।


জানা গেছে, সোমবার আসানসোল পুরনিগমের এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভোর থেকেই প্রচুর মানুষ লাইন দিয়েছিল ভ্যাকসিন নিতে। কিন্তু তাদের দাবি তারা ভ্যাকসিন অনলাইনে বুক করলেও এখান থেকে ভ্যাকসিন পাচ্ছেন না। কিন্তু অনেকেই অনলাইনে বুক না করেও এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে বেআইনিভাবে ভ্যাকসিন যাচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই ঘটনার কথা জানাজানি হতেই স্থানীয় বাসিন্দারা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে চত্বরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। এরফলে এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ বন্ধ হয়ে যায়।


বিক্ষোভকারী স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, গত কয়েকদিন আগে অনলাইনের মাধ্যমে ভ্যাকসিনের জন্য স্লট বুক করেছিলাম। আমাদেরকে এখানে এসে ভ্যাকসিন নেওয়ার ম্যাসেজ দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু তারপরও বারবার এখানে এসেও ভ্যাকসিন পাচ্ছিনা। এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দায়িত্বে থাকা পুরনিগমের স্বাস্থ্য কর্মীরা বাসিন্দাদের জানিয়েছেন আগের থেকেই নাকি অন্য লোকের নাম তাদের কাছে চলে এসেছে। কিভাবে স্লট বুক করেও অন্য লোকেরা ভ্যাকসিন কি ভাবে পেয়ে যাচ্ছেন তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এলাকার বাসিন্দারা ।


যদিও স্লট বুকিং করা থাকলেও ভ্যাকসিন পাচ্ছেন না এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে পুরনিগমের স্বাস্থ্য কর্মীরা।
কিন্তু বিক্ষোভের ফলে এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। বিক্ষোভকারীরা স্বাস্থ্য কেন্দ্রের জানলার কাঁচ ভেঙে দেন বলে অভিযোগ। পরিস্থিতি এমন জায়গায় পৌঁছায় বেলা বারোটারা সময় ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ বন্ধ করে দিয়ে স্বাস্থ্য কেন্দ্রের গেট বন্ধ করে দিতে বাধ্য হন পুরনিগমের স্বাস্থ্য কর্মীরা। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিন থানার পুলিশ স্বাস্থ্য কেন্দ্রে এসে পৌঁছায়। ভ্যাকসিন নিতে আসা মানুষেরা পুলিশকে ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। পুলিশ পুরনিগমের স্বাস্থ্য কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে দুপুর দুটোর পরে ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ শুরু করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।


অন্যদিকে, এদিনের ঘটনা নিয়ে আসানসোল পুরনিগমের স্বাস্থ্য আধিকারিক ডাঃ দীপক গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। তবে কাউকেই অনলাইনে স্লট বুকিং ছাড়া ভ্যাকসিন দেওয়া হয়নি।
তবে আসানসোল পুরনিগমের এই স্বাস্থ্য কেন্দ্রে শুধু নয়, বলতে গেলে গোটা আসানসোল শিল্পাঞ্চল ও পশ্চিম বর্ধমান জেলা জুড়ে ভ্যাকসিন দেওয়া নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। বিশেষ করে কোভ্যাকসিন না পেয়ে হয়রানির মুখে পড়তে হচ্ছে সাধারণ মানুষদের।

Leave a Reply