RANIGANJ-JAMURIA

রানিগঞ্জে ধসের ঘটনাকে কেন্দ্র উত্তেজনা, কোলিয়ারিতে বিক্ষোভ, রনক্ষেত্র

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জি ,  রানীগঞ্জ : এবার ধসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল আসানসোলের রানিগঞ্জ থানার নিমচা ফাঁড়ি এলাকার ইসিএলের সাতগ্রাম এরিয়ার জে কে নগর প্রজেক্ট এলাকায়। মঙ্গলবার রাতের ধসের ঘটনা ঘটার পরে এলাকার বাসিন্দারা বুধবার ঐ এলাকাকে ইসিএল ম্যানেজমেন্ট বাসযোগ্য করে তোলে তার দাবি তুলেছিলো। এরপর বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই বেলিয়াবাথানা এলাকার বাসিন্দারা এলাকার নিরাপত্তার দাবি তুলে জে কে নগর প্রজেক্ট কোলিয়ারির সামনে বিক্ষোভে শামিল হয়। দীর্ঘক্ষন বিক্ষোভ চলার পর ইসিএল ম্যানেজমেন্ট কোন সদুত্তর দিতে না পারায় বিক্ষোভকারীরা আরো উত্তেজিত হয়ে পড়েন।

ইসিএলের ঐ কোলিয়ারির ম্যানেজার বিক্ষোভকারীদের আশ্বস্ত করার চেষ্টা করলেও তারা কোনমতেই তাদের দাবি থেকে সরে আসে না। পরে এই ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এজেন্ট ও ম্যানেজার এসে পৌঁছলে উত্তেজনার পারদ আরো বেড়ে যায়। বিক্ষোভকারীরা এজেন্টের গাড়ি ঘিরে ধরে এলাকা সুরক্ষিত করার দাবি তুলে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। ঘটনাস্থলে পুলিশের বিশাল বাহিনী ও ইসিএল নিরাপত্তারক্ষীরা এসে পৌঁছলেও এজেন্টকে ঘিরে ধরে চলে বিক্ষোভ। এজেন্ট এ বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে না পারায় তারা এজেন্টের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখায়। পরে এজেন্ট ঘটনাস্থল থেকে চলে যেতে গেলে, এজেন্টকে ঘিরে ধরে তার গাড়িকে লক্ষ্য করে ইট বৃষ্টি করে বিক্ষোভকারীরা। সেই সময় দুই মহিলা এজেন্টের গাড়ির পাশে চলে আসায় তারাও এজেন্টের গাড়ির ধাক্কায় অল্পবিস্তর আহত হয়।

পুলিশ ও স্থানীয়রা ওই মহিলাদের উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠায়। পরে পুলিশের বিশাল বাহিনী ও ইসিএল কর্তৃপক্ষ গ্রামবাসীদের ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে এদিন দুপুর নাগাদ স্বাভাবিক হয় পরিস্থিতি। এই ঘটনায় এজেন্টের গাড়িতে ভাঙচুর চালানোর সাথেই বেশ কয়েকজন নিরাপত্তারক্ষী ও আহত হয়।

বৃহস্পতিবারের এই ঘটনাকে ঘিরে সকাল থেকেই খনির উৎপাদন বন্ধ থাকে। পরে এদিন দুপুর দুটো নাগাদ ইসিএল কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে কোলিয়ারি কাজকর্ম স্বাভাবিক হয়। উল্লেখ্য বেলিয়া বাথান এলাকায় ধসের ঘটনা এর আগে বেশ কয়েক দফায় ঘটেছে। দুটি পুকুর এই ধসের ঘটনায় মাটির তলায় চলে যায়, এখন পুকুর দুটি চারণ ক্ষেত্র হিসেবে পরিণত হয়েছে। এরপরই মঙ্গলবার রাতের ধসের ঘটনা ফের আরও একবার ঘটার পরই এলাকার মানুষেরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। উল্লেখ্য ধসের ঘটনার জেরে ইতিমধ্যেই বেলিয়াবাথান এলাকায় প্রায় ৪টি বাড়িতে ফাটল দেখা দেয়। এরপর আবার বেলিয়াবাথান স্কুলের কাছে ফের এই ধরনের ধসের ঘটনা ঘটায়, স্বভাবতই আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকার মানুষ।

স্থানীয় এলাকার বাসিন্দারা এদিন দাবি করেন ওই সকল এলাকায় ইসিএল ম্যানেজমেন্ট ভূগর্ভস্থ কয়লা কেটে নেওয়ার পর কোনরূপ বালি ভরাট না করায়, ধসের ঘটনা সেখানে নিত্যনৈমিত্তিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাই অবিলম্বে ঐসকল এলাকাকে বিপদমুক্ত করতে বালি ভরাট করে এলাকাটিকে সুরক্ষিত করতে তারা বিক্ষোভ আন্দোলন করেছে বলেই দাবি করে তাদের বক্তব্যে। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনার প্রেক্ষিতে ইসিএলের কোলিয়ারি এলাকায় পুলিশ পিকেট বসানো হয়।

রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত দুই সিনিয়র আইপিএসকে ওএসডি হিসেবে নিযুক্ত করা হল