একদা বাবুল ঘনিষ্ঠ, এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক মন্তব্য
বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : গত শনিবার দুপুরে হঠাৎ করেই তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দেন আসানসোলের বিজেপির টিকিটে জয়ী সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়। আর তারপর থেকেই রাজ্য রাজনীতি সরগরম। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিজেপি সমর্থকদের দ্বারা শেয়ার হতে থাকে বিভিন্ন মিমস্ এবং পোস্ট।
আর এরই মাঝে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিজেপি যোগদানের পরে এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় বিস্ফোরক মন্তব্য নিয়ে সরব হলেন একদা প্রাক্তন বাবুল সুপ্রিয়র সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডলার বলে পরিচিত অভিজিৎ রায়।বেশ কিছুদিন ধরে যদিও তাকে বাবুল সুপ্রিয়র কার্যক্রমে তেমন উপস্থিত থাকতে দেখতে পাওয়া যেতনা। তবে বাবুলের সোশ্যাল মিডিয়া সামলানোর পরে পরবর্তীকালে তিনি বিজেপির রাঢ়বঙ্গের সোশ্যাল মিডিয়ার জোনাল ইনচার্জ রূপে দায়িত্ব সামলে আসছেন বলে জানা গিয়েছে।
তিনি গতকাল ওই ফেসবুক পোস্টের মাধ্যমে সরাসরি কারো নাম না করলেও ফেসবুক পোস্টে লেখেন “আপনি এখন সদ্যজাত TMছি:। ৭ লক্ষ মানুষের আবেগকে আপনি একদিনে ঠকাতে পারেন। সত্যি কথা ফেসবুক পোস্ট করার জন্য কাছের মানুষকে দিয়ে হুমকি দেওয়াতে পারেন।স্নেহভাজনদের বলে ফেসবুকে ভালো ভালো কথা পোস্ট করিয়ে নিজের ভাবমূর্তি তৈরি করার চেষ্টা করতেই পারেন। প্যান্ডেমিকে কঠিন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশকে অবজ্ঞা করে চাকরীও খেতে পারেন। এখন আপনি ভাইপোর বন্ধু কিনা করতে পারেন। আপনি সব পারেন। আপনি যা করার করুন আমি তৈরি আছি। গতকালের আপনার আচরণ লজ্জাজনক ও দুঃখজনক।”
আর এই পোষ্টের পরেই সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে শোরগোল পড়ে গেছে। কারণ একদা বাবুল ঘনিষ্ঠ ওই ব্যক্তির মন্তব্য যথেষ্ট ইঙ্গিত বহন করছে।
প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দল ছাড়ার পর হঠাৎ করেই গতকাল তিনি তার ফেসবুক প্রোফাইলে “কাছের মানুষকে দিয়ে করানো হুমকি”- র ইঙ্গিতপূর্ন মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে অভিজিৎ রায় কে সামনাসামনি পেয়ে কোনো চাপ আসছে কিনা এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ” হ্যাঁ বেশ কিছু জায়গা থেকেই চাপ অবশ্যই আসছে।” চাপ কি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর থেকে আসছে এ ব্যাপারে অভিজিৎবাবু বলেন, “সম্পূর্ণ বিষয়ে এই মুহূর্তে আমি মিডিয়ার সামনে মুখ খুলব না। যথাসময়ে প্রকাশ করব। তবে আমি সমস্তকিছু রাজ্যের উচ্চ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। তারা আমার সঙ্গে কথা বলেছেন।”
একইসঙ্গে তিনি বলেন, “প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় তৃণমূলে যোগদান করার পর আমাদের কোনো প্রভাব পড়েনি। বরংচ গতকাল দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর উপস্থিতিতে যেভাবে কর্মীদের স্বতঃস্ফূর্ত যোগদান ছিল অভূতপূর্ব। কর্মীদের উৎসাহ আরো চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
আমাদের নীতিগত কোনো পরিবর্তন হয়নি। আগেও তৃণমূলের নীতির বিরুদ্ধে পোস্ট করেছি এবং এখনও করছি। বাবুল সুপ্রিয় দল ছাড়ার পরে শুধু আমি কেন প্রচুর বিজেপি সমর্থকরা পোস্ট করেছেন এবং এখনো করছেন। এটি স্বতঃস্ফূর্ত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ।”
প্রসঙ্গত, অভিজিৎ রায় রাজনীতি ছাড়াও সাংস্কৃতিক জগতের সাথে ওতপ্রতভাবে জড়িত এবং বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তাকে কিবোর্ড শিল্পী হিসেবে সিন্থেসাইজার বাজাতে দেখা যেত। আর হয়তবা একারনেই দুই শিল্পীর মেলবন্ধন আরো মজবুত হয়। যদিও কিবোর্ড যন্ত্রশিল্পী অভিজিৎ রাজনীতিতে সক্রিয় যোগদানের পরে সোশ্যাল মিডিয়ার কাজে আরো বেশি করে লিপ্ত হয়ে পড়েন বলেই খবর। এখন সোশ্যাল মাধ্যমে বিস্ফোরক উক্তির পরে রাজনীতির আঁচ কোনদিকে যায় সেদিকেই লক্ষ্য ওয়াকিবহাল মহলের। খবর লেখা পর্যন্ত এ বিষয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর তরফে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।