ASANSOL-BURNPUR

Asansol Illegal Arms Factory চোরা কুঠুরিতে, ধৃত দুই কারিগর, বাজেয়াপ্ত প্রচুর আগ্নেয়াস্ত্র

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত, আসানসোল, ২৫ অক্টোবরঃ Asansol Illegal Arms Factory পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটর থানা এলাকায় আবারও হদিশ মিললো বেআইনি অস্ত্র কারখানার। আসানসোলের হিরাপুর থানার বার্ণপুরের আসানসোল পুরনিগমের ৮৩ নং ওয়ার্ডের আজাদনগরের নয়াবস্তির একটি বাড়ির ভেতরে মাটির তলায় থাকা চোরা কুঠুরি বা আন্ডারগ্রাউন্ড ঘরের মধ্যে এই কারখানা ছিলো।

Asansol Illegal Arms Factory

সোমবার দুপুরে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মুদির নেতৃত্বে হিরাপুর থানার পুলিশের অভিযানে এই কারখানার হদিশ পাওয়া যায়। স্বাভাবিক ভাবেই একটি অস্ত্র কারখানার খোঁজ মেলায় গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। গৃহকর্তা মহঃ জাভেদ হোসেন পালিয়ে গেলেও গৃহকর্ত্রীকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আটক করে থানায় নিয়ে যায়। এদিন দুপুরে পুলিশ যখন অভিযান চালায়, তখন কারখানায় দুজন আগ্নেয়াস্ত্র তৈরী করছিলোন। সেই দুই কারিগরকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ধৃতদের নাম হলো মহঃ ফিরোজ ও মহঃ তনবীর। তারা বিহারের মুঙ্গেরের বাসিন্দা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে অসম্পূর্ণ পিস্তল, তিনটি তৈরী হওয়া পিস্তল ও পিস্তল তৈরী প্রচুর সামগ্রী।


প্রসঙ্গতঃ, কিছুদিন আগেই কুলটি থানার ডিসেরগড়ে থেকে এই রকমই একটি অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিশ মিলেছিলো। সেখান থেকে উদ্ধার হয়েছিলো প্রচুর অস্ত্র। তার আগে এই কুলটি থানার নিয়ামতপুরেও আরো একটি অস্ত্র কারখানা পুলিশ পায়। সেখান থেকেও পাওয়া যায় প্রচুর অস্ত্র। দুটি জায়গা থেকেই পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতারও করেছিলো। দুটি ঘটনার ক্ষেত্রেই পুলিশ বিহারের মুঙ্গেরের কানেকশন পেয়েছিলো।


জানা গেছে, আজাদ নগরের নয়া বস্তি এলাকার একটি বাড়িতে অস্ত্র তৈরি হচ্ছে বলে গোপন খবর পেয়ে হিরাপুর থানা পুলিশ এদিন ঐ বাড়িতে অভিযান চালায়। মহঃ জাভেদ হোসেনের রান্নাঘরে একটি দরজা দেখতে পায় পুলিশ। সেই দরজার পরে সিঁড়ি নিচে চোরা কুঠুরি বা আন্ডারগ্রাউন্ড ঘরে চলে গেছে। বাইরে থেকে সেটিকে দেখলে মনে হবে সেফটি ট্যাঙ্ক। আদৌও তা নয়। যার ভেতরে ছিলো অস্ত্র কারখানা। গত ছয় মাস ধরে জাভেদের বাড়িতে অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিল বলে পুলিশ তদন্ত শুরু করে জানতে পেরেছে।
তবে আসানসোল দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেট এলাকার পরপর এইভাবে অস্ত্র কারখানার হদিশ ও সেখান থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়েছে।


পুলিশের তরফে কারখানার হদিশ পাওয়াকে বড় সাফল্য বলা হলেও বিভিন্ন থানা এলাকায় অস্ত্র কারখানার হদিশ মেলায় পুলিশের নজরদারি ও সোর্স বড়সড় প্রশ্নের সামনে চলে এসেছে। কেননা, ভিন রাজ্যের অস্ত্র কারবারিরা এখন আসানসোল শিল্পাঞ্চলকে নিজেদের কারখানা তৈরীর ” সেফ জোন ” বল মনে যে করছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা।


এদিনের অভিযান প্রসঙ্গে ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মুদি এদিন বলেন, হিরাপুর থানার পুলিশের কাছে গোপন খবর ছিল যে, আজাদনগরের নয়াবস্তির বাসিন্দা মহঃ জাভেদ হোসেনের বাড়িতে একটি অস্ত্র কারখানা চলছে (Asansol Illegal Arms Factory)। সেই মতো এদিন দুপুরে তার বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালায়। বাড়ির ভেতরে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড ঘরে লুকিয়ে অস্ত্র তৈরি করা হচ্ছিলো। সেখান থেকে বেশ কিছু অসম্পূর্ণ পিস্তল ও তৈরী পিস্তলের পাশাপাশি অস্ত্র তৈরীর সামগ্রী পাওয়া গেছে। দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে, যারা সেখানে অস্ত্র তৈরী করছিলো। গৃহকর্তা পালিয়ে গেলেও, গৃহকর্ত্রীকে আটক করা হয়েছে। পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।


হিরাপুর থানা সূত্রে জানা গেছে, Asansol Illegal Arms Factory মঙ্গলবার ধৃতদেরকে আসানসোল আদালতে তুলে রিমান্ডের জন্য বিচারকের কাছে আবেদন জানানো হবে। প্রাথমিক তদন্তে ধৃতদের জেরা করে পুলিশ নিশ্চিত, এখানে অস্ত্র তৈরী করে বিহারের মুঙ্গেরে নিয়ে যাওয়া হতো। পরে সেখান থেকে সেই অস্ত্র দেশের বিভিন্ন রাজ্য পাচার করা হতো।

আসানসোলের হীরাপুর থানা এলাকায় অস্ত্র তৈরির কারখানার হদিস, চাঞ্চল্য

Leave a Reply