ASANSOL

আসানসোল শিল্পাঞ্চল ছট পুজোয় মাতলো, ভিড় উপচে পড়লো ঘাটে-ঘাটে

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় / কাজল মিত্র/সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত:, আসানসোল, ১০ নভেম্বরঃ দূর্গা পুজো, কালি পুজো শেষ হয়েছে। বুধবার ছট পুজোয় মাতলো গোটা আসানসোল শিল্পাঞ্চল। মাইথন ও বার্ণপুরের দামোদর নদীর ঘাটে এদিন দুপুর গড়াতেই ভিড় উপচে পড়ে সাধারণ মানুষের ভিড়। একই ছবি দেখা যায় আসানসোল, রানিগঞ্জ, বারাবনি, কুলটি, বরাকর, জামুড়িয়াতেও। শিল্পাঞ্চলের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া সব ছোট বড় নদী ও পুকুরে ছট পুজোর জন্য ঘাট তৈরী করা হয়েছিলো।
এদিন বিভিন্ন ছট পুজোর ঘাট পরিদর্শন করেন রাজ্যের আইন ও পূর্ত দপ্তরের মন্ত্রী মলয় ঘটক, আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়, আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান তথা রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দোপাধ্যায়, বারাবনির বিধায়ক তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি বিধায় উপাধ্যায় সহ অন্যান্যরা।


প্রতি বছরের এই বছরও দেখা গেলো মাইথনে ছট পূজায় ভক্তদের ভিড়। দুপুরের পরে সন্ধ্যায় সেই ভিড় আরো বাড়ে। এদিন পুলিশকে ছট ঘাটে কড়া নজরদারি দেখতে পাওয়া যায়। পুলিশের তরফে জলাধারে মধ্যে দুটি নৌকার ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম মোতায়ন করা হয়। তাছাড়া যাতে শান্তি বজায় থাকে তার জন্যই সমস্ত স্থানে পুলিশ মোতায়ন করা হয়।
অন্যদিক, আসানসোল পুরনিগমের তরফের বার্ণপুরের দামোদর সহ পুর এলাকার বিভিন্ন ঘাটে ছট পুজোর ভক্তদের কথা ভেবে সব রকমের ব্যবস্থা করা হয়েছিলো।

প্রতি বছরের মত এবছরও দেখা গেলো মাইথনের থার্ড ডাইকে ছট পূজায় ভক্তগণের ভিড়।কল্যানেশ্বরী আঞ্চলিক তৃণমূল কমিটির সহযোগিতায় মাইথন ঘাট সাজিয়ে তোলা হয়।দুপুর হতেই ছট ব্রতীরা মাথায় পুজোর ডালা নিয়ে মাইথন জলাধারে পৌঁছায়।সেখানে সূর্য অস্ত যাওয়ার পর জলে দাঁড়িয়ে আরোগ প্রদান করে।তাছাড়া এদিন পুলিশের ছট ঘাটের মধ্যে কড়া নজরদারি দেখতে পাওয়া যায়।এবং পুলিশের তরফে জলাধারে মধ্যে দুটি নৌকার মাধ্যমে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট টিম মোতায়ন করা হয়,তাছাড়া যাতে শান্তি বজায় থাকে তার জন্যই সমস্ত স্থানে পুলিশের দল মোতায়ন করা হয়,তাছাড়া এদিন নিজে উপস্থিত ছিলেন সালানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক পবিত্র কুমার গাঙ্গুলি এবং কল্যানেশ্বরী ফাঁড়ির ইনচার্জ উৎপল ঘোষাল।


এই প্রসঙ্গে সমাজসেবী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা মনোজ তেওয়ারী বলেন প্রতি বছর মাইথন ঘাটে ছট পূজা উপলক্ষে প্রচুর ভক্তদের ও সাধারণ মানুষের সমাগম হয়।তাই নিরাপত্তার দিকে বিশেষ নজরদারি করা হয়েছে।তার পাশাপাশি এলাকার মানুষরা প্রতি বছরই সবাই মিলে একত্রিত ভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেয়।তাছাড়া বারাবনী বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় প্রতি ক্ষণ সমস্ত খবর নিচ্ছে কী কী অসুবিধা হচ্ছে বা না হচ্ছে।

কাল্লা প্রভু ছট ঘাটে দেখা গেল অপরূপ দৃশ্য কৃষ্ণা প্রাসাদের কৌশিস সার্থক

বিগত ৪৩ বছরের মতো এবারও আসানসোলের কল্লা এলাকায় অবস্থিত প্রভু ছট ঘাটে আসানসোলের বিশিষ্ট সমাজকর্মী কৃষ্ণ প্রসাদের পৃষ্ঠপোষকতায় ছট পূজার একটি দুর্দান্ত উদযাপনের আয়োজন করা হয়েছে। জানা যায়, সম্প্রতি দেবভূমি উত্তরাখণ্ডে গিয়েছিলেন কৃষ্ণপ্রসাদ। সেখান থেকে তিনি এই সমগ্র এলাকাকে পবিত্র করার জন্য বোতলে ভরে হাজার হাজার লিটার গঙ্গাজল নিয়ে আসেন।তিনি সেখান থেকে আনা পবিত্র গঙ্গার জল সহ প্রভু ছট ঘাটে আগত প্রতিটি ছট ব্রতীকে শাড়ী ,গামছা,কম্বল তুলসী চারা ,ও পূজা সামগ্রী সহ
প্রদান করেন। আসানসোলে সাম্প্রতিক বন্যার পর, কৃষ্ণপ্রসাদ অসম্ভবকে সম্ভব করে নদীর দুই পাশের ঘাট মেরামতের কাজ হাতে নেন।

ছত্রবতীরা নদীতে পৌঁছানোর জন্য সিঁড়ি তৈরি করা হয়েছিল, আজ ছত্রবতীরা সারা শিল্পাঞ্চল থেকে এসে এই সিঁড়ি দিয়ে নদীতে পৌঁছে উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদন করে।কৃষ্ণ প্রসাদ করোনার সময় পুরো ঘাটকে স্যানিটাইজ করার ব্যবস্থাও করেছিলেন। দুই শতাধিক সিসি ক্যামেরা ভক্তদের মনিটরিং করেছে। অস্তগামী সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদনের পর কাশী থেকে আগত পণ্ডিতরা বারাণসীর গঙ্গা ঘাটের আদলে আরতি করেন। আগামীকাল সকালেও উদীয়মান সূর্যকে অর্ঘ্য নিবেদনের পর অনুরূপ আরতি করা হবে।

সন্ধ্যায় অর্ঘ্য নিবেদনের পর গঙ্গা আরতির অলৌকিক দৃশ্য ভগবানের ছট ঘাটে অবতীর্ণ হয়। ভগবান ছট ঘাটে আসা ছত্রবতীরা ভগবান ছট ঘাটের পুনরুজ্জীবনের জন্য প্রকাশ্যে কৃষ্ণ প্রাসাদের প্রশংসা করেন। সমাজের সর্বস্তরের অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও এই মনোরম দৃশ্য গ্রহণ করতে সেখানে এসে পৌঁছেছেন। এর মধ্যে প্রধান অতিথি আসানসোল উত্তরের বিধায়ক এবং রাজ্যের আইন ও গণপূর্ত মন্ত্রী মলয় ঘটক, রানিগঞ্জের প্রাক্তন বিধায়ক সোহরাব আলি, রামকৃষ্ণ মিশনের মহারাজ সৌমামানন্দ জি মহারাজ, আসানসোল পৌর কর্পোরেশনের প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান অমরনাথ চ্যাটার্জি সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন।

Leave a Reply