আসানসোলে গড়ে উঠতে চলেছে জেলার প্রশাসনিক ভবন, খরচ করা হবে প্রায় ৩০ কোটি টাকা
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৫ নভেম্বরঃ ( Asansol News ) মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগে চার বছর আগে আসানসোল ও দুর্গাপুর মহকুমা নিয়ে বর্ধমান জেলাকে ভেঙে পৃথক পশ্চিম বর্ধমান জেলা গড়ে উঠে। নতুন জেলা হলেও এখনো পর্যন্ত পশ্চিম বর্ধমান জেলার নিজস্ব প্রশাসনিক ভবন তৈরি করা হয়নি। বর্তমানে পশ্চিম বর্ধমান জেলার জেলাশাসকের দপ্তর আসানসোলের কন্যাপুরে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডা ভবনে চলছে। এবার সেই অবস্থার পরিবর্তন হতে চলেছে। এবার আসানসোলে পশ্চিম বর্ধমান জেলার নতুন প্রশাসনিক ভবন তৈরি করার উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার।
![](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2023/10/IMG-20230207-WA0151-e1698295248979.webp?resize=768%2C512&ssl=1)
![pexels-photo-269077.jpeg](https://i0.wp.com/bengalmirrorthinkpositive.com/wp-content/uploads/2021/11/pexels-photo-269077.jpeg?resize=470%2C313&ssl=1)
প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় করে আসানসোলের কন্যপুরে গড়ে উঠবে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের প্রশাসনিক দপ্তর। চলতি নভেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে নবান্ন থেকে এই নিয়ে চূড়ান্ত সম্মতি মিলেছে বলে সরকারিভাবে জানা গেছে। জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে বলেন, নতুন প্রশাসনিক ভবনের জন্য ২৯ কোটি ২৪ লাখ ৫৬ হাজার ২৪৫ টাকা রাজ্য সরকার অনুমোদন করেছে । চারতলা এই আধুনিক ভবনটি প্রায় সাড়ে ছয় হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে তৈরি হবে। আগামী তিন বছর অর্থাৎ ২০২৪ সালের মধ্যেই এই ভবনের কাজ শেষ করার জন্য সময়সীমা ধার্য করা হয়েছে। শুধু জেলাশাসকের দপ্তর নয়, জেলার প্রশাসনের অন্যান্য যেসব অফিস গুলি আছে সেগুলিও নতুন ভবনে উঠে আসবে বলে আপাতত সিদ্ধান্ত হয়েছে। শুধু তাই নয় এই ভবনের মধ্যে পৃথক আধুনিক একটি আলাদা হলঘরও থাকবে যেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করা হবে ।
ঐ আধিকারিক বলেন, বর্তমানে বাইরের বিভিন্ন দপ্তর থেকে এখানে যারা আসেন বৈঠকের জন্য তাদের সময় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি, অনেক বেশি গাড়ির তেলের জন্য খরচ হতো। নতুন প্রশাসনিক ভবন হলে তার মধ্যে যেহেতু অন্যান্য দপ্তর গুলো উঠে চলে আসবে, তাই স্বাভাবিকভাবেই সময় ও খরচ দুই বাঁচবে।
পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ বলেন, ইতিমধ্যেই নতুন ভবন তৈরির জন্য চূড়ান্ত অনুমোদন পাওয়া গেছে। এর ফলে প্রশাসনের আধিকারিকদের পাশাপাশি সাধারণ মানুষের সুবিধা হবে।
প্রসঙ্গতঃ, সেই ৮০ দশকের শুরু থেকেই ডিস্ট্রিক্ট ফর্মেশন কমিটি নামে একটি কমিটি তৈরি করে আসানসোল ও দুর্গাপুরকে নিয়ে নতুন জেলা গঠনের দাবি উঠেছিলো। আন্দোলনও হয়। সেই সময় মন্ত্রী অশোক মিত্র কমিশন সুপারিশ করেছিলো বর্ধমান জেলা ভেঙে দু’ভাগ করে অন্যান্য আরো কয়েকটি জেলার মতো নতুন একটা জেলা করা হোক। কিন্তু তৎকালীন বামফ্রন্ট সরকার সেই সুপারিশ মানেনি । ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে সেই দাবি আবার নতুন করে উঠে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্যোগেই ২০১৭ সালের ৭ এপ্রিল আসানসোলে একটি সরকারি সভা থেকে আসানসোল ও দূর্গাপুরকে নিয়ে নতুন পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৈরির কথা ঘোষণা করেন। তারপর আসানসোলের আড্ডা ভবনে জেলাশাসকের কার্যালয় তৈরী হয়। বর্তমানে অতিরিক্ত জেলাশাসকের দপ্তর গুলি সহ বিভিন্ন দপ্তর আলাদা আলাদা জায়গায় রয়েছে। নতুন ভবন তৈরি হলে সব দপ্তর একটা প্রশাসনিক ভবনে চলে আসবে। তাতে কাজের গতি বাড়বে।
পূর্ত দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সরকারি অনুমোদন মেলায়, জেলার নতুন প্রশাসনিক ভবন তৈরির কাজ দ্রুত শুরু করা হবে।