ASANSOL

আসানসোল পুরনিগম ভোট লড়াইয়ে নামতে প্রস্তুত শাসক থেকে বিরোধী দল, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হলফনামাকে স্বাগত

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ২৩ ডিসেম্বরঃ রাজ্য নির্বাচন কমিশন বৃহস্পতিবারই কলকাতা হাইকোর্টে হলফনামা দিয়ে বলেছে রাজ্যের চারটি পুরনিগমের সঙ্গে আসানসোল পুরনিগমের ভোট ২০২২ এর ২২ জানুয়ারি করা হবে।
আর এরপরেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে শাসক দল তৃনমুল কংগ্রেসের পাশাপাশি তিন বিরোধী দল বিজেপি, কংগ্রেস ও বামফ্রন্টের তরফে বলে দেওয়া হলো তারা ভোট লড়াইয়ে নামতে প্রস্তুত।

সব দল এখন অপেক্ষা করছে হাইকোর্টের নির্দেশ রাজ্য নির্বাচন কমিশন কবে নির্বাচনের দিন ঘোষণা করে সরকারি নোটিফিকেশন জারি করে।
এদিকে পদ্ম শিবিরের নেতাদের দাবি, স্বচ্ছতার সঙ্গে মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হলে, আসানসোল পুরনিগম তারাই দখল করবে। যদিও শাসক শিবির তা মানতে নারাজ।


২০১৫ সালের অক্টোবর মাসে আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডে ভোট হয়েছিলো। তারমধ্যে ৭৬ টি ওয়ার্ড জিতে বোর্ড দখল করেছিলো তৃনমুল কংগ্রেস। মেয়র হয়েছিলেন জিতেন্দ্র তেওয়ারি। বামেদের দখলে ছিলো ১৭ টি ওয়ার্ড। তারমধ্যে সিপিএমের ছিলো ১৪, ফরওয়ার্ড ব্লক ২ ও সিপিআই ১ টি করে। একইভাবে বিজেপি পেয়েছিলো ৮ টি ওয়ার্ড, কংগ্রেস ৩ টি ও নির্দলের ছিলো ২ টি ওয়ার্ড। পরবর্তীকালে বিরোধী দলের ঘর ভেঙে যায়। বাম, কংগ্রেস ও বিজেপি ছেড়ে একাধিক কাউন্সিলর শাসক দলে চলে আসেন। ৫ বছরের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০২০ সালের অক্টোবর মাসে। মেয়র পদে থাকা জিতেন্দ্র তেওয়ারিকে এরপর পুর প্রশাসক করে প্রশাসক বোর্ড হয়। কিন্তু মাস দুয়েকের মধ্যেই গত বছরের ডিসেম্বরে জিতেন্দ্র তেওয়ারি প্রথমে পুর প্রশাসক ও পরে তৃনমুল কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এখন শাসক দলের শিবিরে রয়েছেন ৯০ জন কাউন্সিলর।


বর্তমানে আসানসোল পুরনিগমের পুর প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমরা সারা বছর দল করি ও প্রশাসনের সঙ্গে থেকে মানুষের কাজ করি। আমাদেরকে ভোটের জন্য আলাদা করে প্রস্তুতি নিতে হয়না। আমরা সব সময় প্রস্তুত। আর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যে বাংলার মানুষেরা আছেন তা তো বিধান সভা নির্বাচনেই প্রমাণ হয়েছে। তৃনমুল কংগ্রেসের রাজ্য সম্পাদক তথা আসানসোল পুরনিগমের দলের কনভেনার ভি শিবদাসন তরফে দাসু বলেন, আমরা সব সময় তৈরী। মানুষের কাছে সারা বছর যাই।


বর্তমানে বিজেপি নেতা আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি এদিনও দাবি করে বলেন, স্বচ্ছতা ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে মানুষকে ভোট দিতে দেওয়া হলে বিজেপি সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে বোর্ড গঠন করবে। তার কারণ সদ্য হওয়া নির্বাচনের ফলের নিরিখে বিজেপি আসানসোলের ১০৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে ৬৬ টিতে এগিয়ে রয়েছে।
সদ্য রাজ্য বিজেপির সম্পাদকের দায়িত্ব পাওয়া লক্ষণ ঘোড়ুই বলেন, আমরা আগে থেকেই তৈরী রয়েছি৷ ওয়ার্ড কমিটি তৈরী করা হয়েছে। যারা ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে নির্বাচনের কাজ করবেন, তাদেরও দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।


কংগ্রেসের জেলা সভাপতি দেবেশ চক্রবর্তী আদালতের চাপে পড়ে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হলফনামা দেওয়ায় খুশি। তিনি বলেন, গত দেড় বছর ধরে নির্বাচন না করে, প্রশাসক বোর্ড করে প্রহসন করা হয়েছে। মানুষ যদি ভয়মুক্ত হয়ে ভোট দেয়, তাহলে ভালো ফল করবো।


সিপিএমের জেলা সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন, আমরা সম্পুর্ণ তৈরী। শুক্রবার আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে নিরুপম সেন স্মারক বক্তৃতা নিয়ে সভা হবে। সেখানে সবাই আসবেন। সেই সভায় এই নির্বাচন প্রসঙ্গ অবশ্যই আসবে।
বিদায়ী পুর বোর্ডের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের তাপস কবি বলেন, নির্বাচনের প্রচারে আমাদের ইস্যু হবে দূর্নীতি ও ব্যর্থ পুর পরিসেবা।

Leave a Reply