ASANSOL

আসানসোলে ৩ কংগ্রেস প্রার্থী সহ ২৯ জনের মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার, শাসক দলের কাঁটা রয়ে গেলো অনেক ওয়ার্ডেই

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায় ও দেব ভট্টাচার্য, আসানসোল, ৬ জানুয়ারিঃ আসানসোল পুরনিগম নির্বাচনের জন্য লড়াইয়ে নেমেও শেষ পর্যন্ত মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নিলেন ২৯ জন প্রার্থী। তার মধ্যে ৩ জন রয়েছেন কংগ্রেসের প্রার্থী। বাকি ২৬ জন নির্দল বলে বৃহস্পতিবার বিকেল তিনটের পরে প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে। বুধবার ৭ জন মনোনয়ন প্রত্যাহার করেছিলেন। বৃহস্পতিবার করেন আরো ২২ জন। এবারের পুর নির্বাচনের জন্য আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ড থেকে মোট ৮৯ জন নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন জমা দিয়েছিলেন। সবমিলিয়ে ২৬ জন নির্দল প্রার্থী মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এখনো পুর লড়াইয়ে থেকে গেলেন ৬৩ জন নির্দল প্রার্থী।

আর এই নির্দল প্রার্থীর বেশির ভাগটাই শাসক দলের বিক্ষুব্ধ। কাউকে প্রার্থী করা না হওয়ায় সে নির্দল হয়েছেন। অনেকে এমন আছেন, যাদের দলের দেওয়া প্রার্থী পছন্দ হয়নি। প্রাক্তন মেয়র পারিষদ মির হাসিমের মতো হাতেগোনা কয়েকজনকে শাসক দলের উচ্চ নেতৃত্ব বোঝাতে পেরে মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করাতে সক্ষম হয়েছেন। যেমন পারা যায়নি বিদায়ী পুর বোর্ডের ডেপুটি মেয়র তবস্সুম আরার মতো অনেককেই। তবস্সুম আরা দলের প্রার্থী পদ না পেয়ে কুলটি এলাকার নিজের পুরনো ৬৩ নং ওয়ার্ড থেকে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন। তার প্রতীক সিঁড়ি। এদিন নতুন প্রতীক পেয়ে তিনি বলেন, এলাকার বাসিন্দারা আমার সঙ্গে আছেন। দল যদি হেরে যাওয়া নেতাকে প্রার্থী করে, তাহলে কিছু বলার নেই। বলতে গেলে আসানসোল পুরনিগমের কুলটি ও বরাকর এলাকায় বিভিন্ন ওয়ার্ডে সবচেয়ে বেশি শাসক দলের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দলের নেতা ও কর্মীরা নির্দল প্রার্থী হয়েছেন।


যেমন ১৬ নং ওয়ার্ডে তৃনমুল কংগ্রেসের কুলটি ব্লকের সভাপতি মহেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের মেয়ে এবারে দলের প্রার্থী। দলের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে না পেরে ঐ ওয়ার্ডে দলেরই দুই নেতার পরিবারের সদস্যরা নির্দল প্রার্থী হয়েছেন।
একই ভাবে, ৬৮ নং ওয়ার্ডে তৃনমুল কংগ্রেস বিদায়ী কাউন্সিল রাধা সিংকে প্রার্থী করেনি। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে রাধা দেবীর দেওর হ্যাপী সিং ঐ ওয়ার্ডে নির্দল প্রার্থী হয়েছেন।


এদিন কংগ্রেসের যে তিনজন মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করেছেন তারা হলেন ৪ নং ওয়ার্ডের শারিক আখতার, ১৪ নং ওয়ার্ডের মুকেশ কুমার রজক ও ৯৯ নং ওয়ার্ডের আনন্দ মুর্মূ। তার মধ্যে মুকেশ কুমার রজক তৃনমুল কংগ্রেসের আসানসোল উত্তর বিধান সভা ব্লকের সভাপতি উৎপল সিনহার হাত থেকে পতাকা নিয়ে দলবদল করেছেন। আর প্রাক্তন কাউন্সিলর সরোজ কর্মকার মনোনয়ন প্রত্যাহার করা প্রসঙ্গে বলেন, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে হারাতে এই সিদ্ধান্ত। আমি নির্বাচনে লড়াই করে বিজেপির হাত শক্ত করতে চাইনি।
এই প্রসঙ্গে কংগ্রেসের রাজ্য নেতা প্রসেনজিৎ পুইতুন্ডি এদিন বলেন, দলের তরফে বুধবারই মহকুমাশাসককে স্মারক লিপি দিয়ে বলেছিলাম শাসক দলের মদতপুষ্ট কয়লা ও বালি মাফিয়ারা মনোনয়ন প্রত্যাহার করার জন্য চাপ দিচ্ছে। প্রাণে মারার হুমকি দিচ্ছে। যে ৩ টি ওয়ার্ডে মনোনয়ন প্রত্যাহার হয়েছে, তার মধ্যে এগুলো ছিলো। ভোটের প্রচারে আমরা তা মানুষকে বলবো।


অন্যদিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি অভিজিৎ ঘটক এই অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, কংগ্রেস তো এখন ডাইনোসরের মতো বিলুপ্ত। সেই দলের প্রার্থীদের কেন ভয় পাবো? আসানসোলের মানুষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেই আছেন। তৃনমুল কংগ্রেস সব ওয়ার্ডে জিতবে। নির্দল প্রার্থীরাও কোন ওয়ার্ডে দলের প্রার্থীর জেতার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াবে না বলে অভিজিৎবাবু এদিন দাবি করেন।

Leave a Reply