আসানসোলের পর বরাকরে বিজেপির প্রচারে উত্তেজনা, পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তি নিরাপত্তারক্ষীদের, রাস্তায় বসলেন দিলীপ ঘোষ
বেঙ্গল মিরর, দেব ভট্টাচার্য ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১১ জানুয়ারিঃ আসানসোল পুরনিগম নির্বাচনে (Asansol Municipal Election ) বিজেপির হাই ভোল্টেজ প্রচারের সোমবার দুপুরে আসানসোলের রেলপার এলাকার ঘটনার রিকনস্ট্রাকশন বা পুননির্মাণ হলো মঙ্গলবার কুলটি পুর এলাকায়। সোমবার প্রচারে বাধা পেয়ে রাস্তায় বসে ছিলেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি।এদিন একইভাবে প্রচারে বাধা পেয়ে প্রতিবাদে কুলটির ৬৬ নং ওয়ার্ডে বরাকরের ২ নং জাতীয় সড়ক লাগোয়া রামনগর মন্দিরের কাছে রাস্তায় বসে পড়েন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ ( Dilip Ghosh)। তার সঙ্গে ছিলেন দলের জেলা সভাপতি দিলীপ দে, রাজ্য কমিটির সদস্য কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, দুই বিধায়ক ডাঃ অজয় পোদ্দার ও লক্ষণ ঘোড়ুই, নির্মল কর্মকার, সুব্রত মিশ্র ও দলের প্রার্থীরা।
করোনা আবহে বিধি মেনে প্রচার করার জন্য বিশাল পুলিশ বাহিনী দিলীপ ঘোষ সহ অন্যদের আটকায়। যা নিয়ে প্রথমে বচসা শুরু হয়। পরে দিলীপ ঘোষ পুলিশ বাধা সরিয়ে এগোতে চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে দিলীপ ঘোষের নিরাপত্তা রক্ষীদের ধাক্কাধাক্কিও হয়। ধস্তাধস্তি হয় বিজেপির অন্য নেতাদের সঙ্গেও। গোটা ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।
দিলীপবাবুর অভিযোগ পুলিশ তৃনমুল কংগ্রেসের হয়ে আমার প্রচারে বাধা দিয়ে শারীরিক ভাবে হেনস্তা করেছে। ৷ বারবার প্রচারে বাধা পেয়ে তিনি শাসক দলকে টেনে পুলিশকে আক্রমন করেন। তিনি বলেন, এতো যদি করোনার ভয়, তাহলে কমিশন নির্বাচন বন্ধ করে দিচ্ছে না কেন? যত বিধি ও নিয়ম বিজেপির জন্য। এতো মানুষের ভিড় দেখে তৃনমুল কংগ্রেস ভয় পেয়েছে। টেনশনে আছে। তাই পুলিশকে নামিয়েছে। তিনি আরো বলেন, আমরা কোন বিধি ভাঙ্গিনি। আমরা ৫ জনেই প্রচার করছি। রাস্তায় হাঁটছি। মানুষ এলে কি করবো? এতো পুলিশ তো রয়েছে। তারা আটকাক। পুলিশকে হুঁশিয়ারী দিয়ে তিনি শেষে বলেন, আমার সিডিউল মতো প্রচার করবো। আটকানো হলে, পুলিশের উপর দিয়ে হেঁটে যাবো। দম থাকলে আটকাক।
এরপর পুলিশের বাধাকে উপেক্ষা করে দিলীপ ঘোষ বরাকর থেকে বেগুনিয়া, ডিসেরগড় রোড, বরাকরের আস্থা হাসপাতাল সংলগ্ন এলাকা হয়ে রানিতলা পর্যন্ত প্রচার করেন। রানিতলায় দলের অফিসে বেশ কিছুক্ষুন বসার পরে দুপুরে এলাকায় সুব্রত মিশ্রর বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্নভোজ সারেন দিলীপ ঘোষ।
রানিতলার অফিসে যখন তিনি ছিলেন, তখন অদূরে বিজেপির মন্ডল ২ এর সভানেত্রী মৌমিতা মুদি দলবদল করে তৃনমুল কংগ্রেসে যোগ দেন। সেখানে ছিলেন তৃনমুল কংগ্রেসের জেলা চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়।
এদিন সকাল এগারোটার পরে আসানসোল থেকে কুলটি পুর এলাকায় বরাকরের দুটি ওয়ার্ডে দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে প্রচার করতে আসেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষ। দিলীপ ঘোষের এই নির্বাচনী প্রচারকে কেন্দ্র করে যাতে কোন অশান্তি না হয়, তারজন্য আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের ডিসিপি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী ও এসিপি (কুলটি) সুকান্ত বন্দোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে বিশাল সংখ্যায় পুলিশ মোতায়েন ছিলো।
দিলীপ ঘোষের কুলটি পুর এলাকায় প্রচার সম্পর্কে, কুলটির প্রাক্তন বিধায়ক তথা জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের চেয়ারম্যান উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় বলেন, বিজেপি নেতারা নিজেদেরকে টিভির পর্দায় তুলে ধরতে এইসব ঝামেলা সৃষ্টি করছে। পুলিশ প্রশাসন বিজেপি নেতাদেরকে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে না। বিজেপি নেতার আসার ফলে কোন অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে তারজন্য পুলিশ প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পালন করছে। দিলীপ ঘোষের অভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, আমাদের সঙ্গে যা জনসমর্থন আছে, তাতে মানুষ এমনি আমাদের ভোট দেবেন। তিনি দাবি করেন, তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী ও সমর্থকরা নিজের নিজের ওয়ার্ডে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম অনুসারে পুর নির্বাচনের প্রচার চালাচ্ছে।
আসানসোল দূর্গাপুর পুলিশের তরফে বলা হয়েছে, কাউকে কোথাও, বাধা দেওয়া হয় নি। শুধু মাত্র রাজ্য নির্বাচন কমিশনের করোনা বিধি মেনে চলতে বলা হয়েছে।
আসানসোলে বিদায়ী বিজেপি কাউন্সিলর দুর্নীতিগ্রস্ত! দিলীপ ঘোষকে আটকে ক্ষোভ উগরে দিলেন তৃনমুল প্রার্থী