ASANSOL

আসানসোলে উল্টো হেঁটে প্রতিবাদ বিজেপির, পুর ভোটের ফলের পরের দিনই জেলাশাসকের কার্যালয়ে অবস্থান বিক্ষোভ

এক ঘন্টা ছাপ্পা দিলেও জেতা যায় না, দাবি তাপস বন্দোপাধ্যায়ের

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৫ ফেব্রুয়ারিঃ ( Asansol News Live Today ) আসানসোল পুরনিগম নির্বাচনের ফল বেরোনোর ঠিক পরের দিন মঙ্গলবার আসানসোলে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক কার্যালয়ের সামনে অবস্থান বিক্ষোভ করলো আসানসোল জেলা বিজেপি (protest by BJP )। এই ভোট বাতিল করে পুনর্নির্বাচনের দাবি ও পুর ভোটের দিন শাসক দলের সন্ত্রাসের প্রতিবাদে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনের রাস্তায় উল্টো হাঁটলেন জেলা বিজেপি নেতৃত্ব। ছিলেন জেলা বিজেপি সভাপতি দিলীপ দে, আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র জিতেন্দ্র তেওয়ারি, কৃষ্ণেন্দু মুখোপাধ্যায়, বাপ্পা চট্টোপাধ্যায় সহ অন্য নেতারা।


জিতেন্দ্র তেওয়ারি হুমকি দিয়ে বলেন, প্রয়োজনে আমরা আদালতে যাবো। এছাড়াও পুর ভোটের দিন সন্ত্রাসের সব কিছু ডকুমেন্টারি আকারে খুব শীঘ্রই জন সমক্ষে আনা হবে বলে জানানো হয়েছে।
বিজেপির এদিনের আন্দোলনকে কটাক্ষ করতে গিয়ে রানিগঞ্জের বিধায়ক তথা আসানসোল দূর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডার চেয়ারম্যান তাপস বন্দোপাধ্যায় বলেন, এক ঘন্টা ছাপ্পা দিলেও এই ভাবে জেতা যায় না। সামান্য ছাপ্পা মেরে ও ফলস্ ভোট দিয়ে এতো মার্জিনে জেতা যায়? আমি যতদূর জানি, বিজেপির প্রাইম প্রার্থীরা তো প্রায় সবাই জিতেছেন। তাদের ক্ষেত্রেও কি তাই হয়েছে। তাপসবাবুর মতে, এইসব কথা হলো বিপরীতধর্মী। চাইল্ডিস বিষয় না করে গোটা বিষয়টি স্পোর্টিংলি নেওয়া উচিত। মামলা করতে আদালতে যে কেউ যেতে পারে। ঐসব করে কিছুই হবেনা।


বিজেপি নেতাদের উল্টো হাঁটা নিয়ে কটাক্ষ করেছেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র পারিষদ তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি অভিজিৎ ঘটক। তিনি বলেন, বিজেপির এই রাজ্যে উল্টো দিকে যাওয়া শুরু হয়ে গেছে। বিধান সভা নির্বাচনে ৭৭ পাওয়া, এখন কমে ৬৮ তে নেমে গেছে। বিজেপিকে যে মানুষ চাইছে না, তা নেতারা মানতে পারছেন না।
স্বাভাবিকভাবেই তাপস বন্দোপাধ্যায়ের এই মন্তব্য নিয়ে রাজনৈতিক বিতর্ক দেখা দিয়েছে। অনেকেরই প্রশ্ন, তাহলে কি শাসক দল আসানসোল পুর ভোটে ছাপ্পা দিয়েছে? বিরোধী দলেরা যা বলছে, সেটা কি সত্যি।


প্রসঙ্গতঃ, সোমবারই আসানসোল পুরনিগম ভোটের ফল বেরিয়েছে। ১০৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃনমুল কংগ্রেস একাই ৯১ টি ওয়ার্ড দখল করেছে। বিরোধীরা পেয়েছে বাকি ১৫ টি ওয়ার্ড। যার মধ্যে বিজেপি পেয়েছে ৭ টি ওয়ার্ড।
পুর ভোটের দিন সন্ত্রাসের প্রতিবাদে এদিনের জেলা বিজেপির অবস্থান বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে যাতে কোন রকম গন্ডগোল না হয়, তারজন্য জেলাশাসক কার্যালয় ও তার আশপাশের এলাকাকে নিরাপত্তার বেষ্টনীতে ঘিরে দেওয়া হয়। বিশাল পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে মোতায়েন করা হয় কমব্যাট ফোর্স। ব্যারিকেড দিয়ে সব ঘিরে দেওয়া হয়। ১০০ মিটার আগে বিজেপি নেতাদের আটকে দেওয়া হয়। জেলা সভাপতি সহ মাত্র ৫ জনকে জেলাশাসকের অফিসে যেতে দেওয়া হয়। এমনকি সাংবাদিকদের যেতে দেওয়া হয়নি।


৪ দফা দাবির একটি স্মারক লিপি জেলাশাসককে দিয়ে আসার পরে জিতেন্দ্র তেওয়ারি বলেন, পুলিশের এদিনের তৎপরতা যদি পুর ভোটের দিন থাকতো, তাহলে সাধারন মানুষেরা ভোট দিতে পারতেন। সেদিন সবকিছুই উল্টো হয়েছে। আইন মানা হয়নি। ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে। আমরা জেলাশাসকের কাছে ভোটের দিনের বুথ দখল, ছাপ্পা মারা, রিগিং করা, গুলি চালানো, দলের প্রার্থীকে মারা ও অপহরণ করা সহ সব তথ্য দিয়ে তদন্ত করার দাবি জানিয়েছি। আমরা ভোট বাতিলের দাবি করেছি। তিনি বলেন, প্রয়োজনে রাজ্য নেতৃত্বর সঙ্গে কথা বলে আমরা আদালতে যাবো। যারা সেদিন এই কাজে সাহায্য করেছেন তাদের কাউকেই ছাড়া হবে না। আমাদের আশা, একমাস পরে যখন আসানসোল লোকসভা কেন্দ্রের বাই ইলেকশন হবে, তখন মানুষেরা এর জবাব দেবেন।

Leave a Reply