ASANSOLBengali News

আসানসোলের তিন জয়ী কাউন্সিলর সহ নেতা ও কর্মীর নামে পুলিশের মামলা, গণনা কেন্দ্রে গন্ডগোলের অভিযোগ

আসানসোল পুরনিগম ভোটের ফল বেরোনোর পরেও শাসকের সঙ্গে বিরোধীদের বাকযুদ্ধ অব্যাহত

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ১৭ ফেব্রুয়ারিঃ আসানসোল পুরভোটের ফল প্রকাশ হয়েছে মাত্র তিন দিন হলো। আসানসোল পুরনিগমের ১০৬ টি ওয়ার্ডের মধ্যে তৃনমুল কংগ্রেস একাই ৯১ টি দখল করে নিরঙ্কুশ সংখ্যা গরিষ্ঠতা পেয়েছে। বাকি ১৫ টি পেয়েছে বিরোধীরা। আর এর মধ্যেই ভোট গণনার আগের দিন গণনা কেন্দ্রে গন্ডগোল ও বিক্ষোভ দেখানোর অভিযোগ আসানসোলের নবনির্বাচিত তিন বিরোধী কাউন্সিলর সহ ৩১ জন বিভিন্ন দলের নেতা ও কর্মীর নামে ও শতাধিক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের নামে সুয়োমোটো মামলা করলো আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। গণনার দিন ১৪ ফেব্রুয়ারি এই মামলায় এফআইআর করেছেন আসানসোল উত্তর থানার ওসি তন্ময় রায়। ৩১জন প্রত্যেকের বিরুদ্ধে মহামারি প্রতিরোধ আইন, নির্বাচন বিধি না মানা, সরকারি কাজে বাধা, হুমকি দেওয়া সহ একাধিক ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। যার মধ্যে আইপিসির ১১ টি ধারা রয়েছে। জানা গেছে, বেশীরভাগ ধারাই জামিন অযোগ্য। ইতিমধ্যেই সেই এফআইআর আসানসোল আদালতে সিজেএমের কাছে জমা দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত অভিযুক্তদের মধ্যে কাউকে গ্রেফতার করা হয় নি বা কেউ জামিন নিতে আদালতে আত্মসমর্পণও করেননি।

file photo


যে তিন বিরোধী দলের কাউন্সিলের নামে এফআইআর হয়েছে তার মধ্যে দুজন হলেন কংগ্রেসের ২৫ নং ওয়ার্ডের এস এম মুস্তফা ও ২৮ নং ওয়ার্ডের গোলাম সরবর এবং অন্যজন হলেন ২৯ নং ওয়ার্ডের বিজেপির গৌরব গুপ্ত। ৩১ জনের মধ্যে বেশ কয়েকজন প্রার্থীও রয়েছেন। আর এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপান উতর ও শাসক দলের নেতাদের সঙ্গে বিরোধী দলের
নেতাদের বাকযুদ্ধ। একযোগে তৃনমুল কংগ্রেস ও পুলিশকে আক্রমণ করেন আসানসোল পুরনিগমের প্রাক্তন মেয়র বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারি, জেলা সিপিএমের নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় ও কংগ্রেস কাউন্সিলর গোলাম সরবর। পাল্টা জবাব দিয়েছেন ৫০ নং ওয়ার্ডের তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি অভিজিৎ ঘটক।


গণনার আগের দিন রবিবার রাতে আসানসোল উত্তর থানার ধাদকার আসানসোল পলিটেকনিক কলেজের গণনাকেন্দ্রে বিক্ষোভ দেখান বিভিন্ন বিরোধী দলের প্রার্থী, নেতা ও কর্মীরা। তাদের অভিযোগ ছিল, গণনা কেন্দ্রর ভেতরে স্ট্রং রুমের সিসি ক্যামেরা ঘণ্টাখানেকের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বহিরাগতরা ভেতরে রয়েছে। আর পেছনে রয়েছে শাসক দলের মদত। খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী সেখানে পৌঁছায়। বেশ কিছুক্ষুন পরে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনতে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। সেই ঘটনাকে সামনে রেখে সোমবার সুয়োমোটো বা স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করে আসানসোল উত্তর থানার পুলিশ। পুলিশ জানায়, আসানসোলের কংগ্রেস কাউন্সিলর গো‌লাম সরবর ও এস এম মুস্তফা এবং বিজেপি কাউন্সিলর গৌরব গুপ্ত সহ মোট ৩১ জন ও শতাধিক অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়েছে।


আর পুলিশের এই মামলা করা নিয়ে ক্ষোভ ছড়িয়েছে বিরোধী শিবিরে। আসানসোলের বিজেপি নেতা জিতেন্দ্র তেওয়ারির প্রশ্ন, তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা মাত্র কয়েকটি ওয়ার্ডে হার হজম করতে না পেরে পুলিশকে দিয়ে আর কত অন্যায় করাবেন? শাসক দলের যে গুন্ডারা ইভিএম লুঠ করতে এলো, তাদের কিছু হলো না। আর যারা তা আটকালো। তাদের বিরুদ্ধে মামলা হলো। এইসব করে কিছু লাভ নেই। ১ মাস পরে মানুষ এর জবাব দেবেন।


জেলা সিপিএম নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায় বলেন , নির্বাচনের ফল বেরোনোর পরেও ভয়াবহ সন্ত্রাস চলছে আসানসোলে। বেছে বেছে বামপন্থী কর্মীদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। দলমত নির্বিশেষে রাস্তায় নেমে এর প্রতিবাদ করা উচিত।
কংগ্রেসের কাউন্সিলর গোলাম সরবর বলেন, স্ট্রং রুমের সিসি ক্যামেরা বন্ধ হয়ে যায়। এক ঘন্টা পরে সেখানে যারা ছিলেন, তারা তার কারণ জানতে চান। সেখানে পুলিশ প্রশাসনের তরফে যারা ছিলেন, তারা তা বলে দিতে পারতেন। কিন্তু তারা তা করেননি। পুলিশ লাঠিচার্জ করে। আবার মামলা করবো। এটা বলতে পারি, সিপিএমের ৩৪ বছরে কি হয়েছে? ১০ বছরে তো এর চেয়েও ভয়ঙ্কর অবস্থা।


অন্যদিকে, সেদিনের ঘটনায় পুলিশি পদক্ষেপে কোন অন্যায় দেখছেন না আসানসোল পুরনিগমের ৫০ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি অভিজিৎ ঘটক। তিনি বলেন, অন্যায় কাজ করলে পরিণাম কি হয় তা আগেই ভাবা উচিত ছিল। পুলিশ আইন ভাঙ্গার জন্য মামলা করেছে। আর একমাস পরে কেন? ২০২১ এর বিধান সভা নির্বাচন থেকে বাংলার মানুষেরা বিজেপি সহ বিরোধীদের জবাব দিচ্ছেন। এরপরও তারা বুঝতে পারছেন না।

read also : Asansol में गिनती से पहले ही काउंटिंग सेंटर के बाहर भारी हंगामा लाठीचार्ज

read also : ASANSOL ELECTION RESULT BLOG : TMC 91 , BJP 7, CONG 3, INDEPENDENT 3, CPM 2, TIE 1

Leave a Reply