ASANSOL

আসানসোলে কারখানায় বস্তা চাপা পড়ে মৃত্যু কর্মীর, ক্ষতি পূরণের দাবিতে দেহ রেখে বিক্ষোভ

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়, আসানসোল, ১ মার্চঃ কারখানার ভেতরে বস্তা তোলায় কাজ করার সময় সেই বস্তা তলায় চাপা পড়ে মৃত্যু হলো এক কর্মীর। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ এই ঘটনাটি ঘটেছে আসানসোল দক্ষিণ থানার সাতাইশায় একটি বেসরকারি কাঁচ কারখানায়। আসানসোল দক্ষিণ থানার ধেমোমেন কোলিয়ারির বাসিন্দা মৃত কর্মীর নাম কৃষ্ণা নুনিয়া (৩৫)।

দূর্ঘটনার পরে কারখানায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। অন্য কর্মীরা কাজ বন্ধ করে দেন। খবর পেয়ে মৃত কর্মীর পরিবারের সদস্য কারখানায় চলে আসেন। এদিন দুপুরে আসানসোল জেলা হাসপাতালে কর্মীর মৃতদেহর ময়নাতদন্ত হয়। তারপর সেই মৃতদেহ কারখানার অফিসে মৃতদেহ রেখে ক্ষতি পূরণের দাবিতে বিক্ষোভ দেখানো শুরু করেন। খবর পেয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ কারখানায় যায়। সন্ধ্যার শেষ খবর কারখানায় বিক্ষোভ চলছে। পরিবারের অভিযোগ, কারখানার মালিক অরবিন্দ মেহারিয়া তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন না। তাদেরকে মৃতদেহ নিয়ে চলে যাওয়ার হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি, থানায় গিয়ে ক্ষতি পূরণের জন্য কথা বলতে বলা হচ্ছে। কিন্তু মৃত কর্মীর পরিবারের সদস্য ও অন্যদের দাবি, কারখানায় এসে সবার সামনে ক্ষতি পূরণের কথা বলতে হবে। যতক্ষণ না তা হবে, তারা কারখানা থেকে মৃতদেহ নিয়ে যাবেন না। তারা আরো বলেন, মৃত কৃষ্ণা নুনিয়া পরিবারের একমাত্র রোজগার করতো। তার পরিবারকে কে দেখবে।


পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, অন্যদিনের মতো মঙ্গলবার সকাল সাড়ে আটটা নাগাদ আসানসোলের সাতাইশায় ঐ বেসরকারি কারখানার ভেতরে অন্য কর্মীদের সঙ্গে কাঁচ তৈরির কাঁচামাল ভর্তি বস্তা তোলার কাজ করছিলো কৃষ্ণা নুনিয়া। আচমকাই হুড়মুড়িয়ে বেশ কিছু বস্তা তার উপরে পড়ে। সেইসব বস্তার তলায় চাপা পড়ে যায় ঐ কর্মী। সেই সময় সেখানে থাকা কর্মীরা হতচকিত হয়ে পড়েন। কারখানার অন্য কর্মীরা দৌড়ে আসেন। বস্তা সরিয়ে কৃষ্ণা গুরুতর জখম অবস্থায় আসানসোলের সেনরেল রোডের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সেখান থেকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত বলে ঘোষণা করেন। গোটা ঘটনাটি কারখানার ভেতরে লাগানো সিসি ক্যামেরায় ধরাও পড়েছে।


কারখানার সুপারভাইজার হিমাংশু ঠাকুর বলেন, কারখানার মালিক আসেননি। তাকে আসতে বলা হচ্ছে পরিবারের তরফে। তিনি থানায় গিয়ে কথা বলার জন্য বলেছেন। কিন্তু তা মানতে রাজি নন। তারা কারখানায় কথা বলতে চাইছেন।
কারখানার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায় নি। তবে কারখানার সুপারভাইজার আশ্বাস দিয়ে বলেন, নিয়ম মতো যা ক্ষতি পূরণ পাওয়ার কথা, তা দেওয়া হবে।
পুলিশ জানায়, আলোচনা করে গোটা বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। পরে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণে মামলার নিষ্পত্তি হল।

Leave a Reply