ASANSOL

আসানসোলের তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলের নামে থানায় অভিযোগ প্রধান শিক্ষিকার, গার্লস স্কুলে চড়াও হয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ, ডেকে পাঠালো দল

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৪ মার্চঃ ( Asansol Live News Today ) ” দুয়ারে সরকার” র দ্বিতীয় শিবির চলাকালীন আসানসোল শহরের জিটি রোডের মূর্গাশোলের আর্যকন্যা উচ্চ বিদ্যালয়ে দলবল নিয়ে চড়াও হয়ে ভর্তির জন্য চাপ ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠলো আসানসোল পুরনিগমের ৪১ নং ওয়ার্ডের সদ্য নির্বাচিত হওয়া তৃনমুল কংগ্রেসের কাউন্সিলর রনবীর সিং বারারা ওরফে জিতুর বিরুদ্ধে। শুক্রবার সকালের এই ঘটনায় ব্যাপক শোরগোল পড়েছে শিক্ষা মহলে। বিকালে ঐ গার্লস স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ঊর্মিলা ঠাকুর গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে আসানসোল দক্ষিণ থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগ জিডি বা জেনারেল ডায়েরি হিসেবে ধরে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে।


সদ্য নির্বাচিত দলের এক কাউন্সিলরের এহেন আচরণে চরম অস্বস্তিতে পড়েছে পশ্চিম বর্ধমান জেলা তৃনমুল কংগ্রেস নেতৃত্ব। গোটা ঘটনার কথা ঠিক কি হয়েছে, তা জানতে ঐ কাউন্সিলরকে রাতেই জেলা কার্যালয়ে তলব করা হয়েছে বলে জানান দলের রাজ্য সম্পাদক তথা আসানসোল পুরনিগমের দলের আহ্বায়ক ভি শিবদাসন তরফে দাসু ।


একইভাবে তৃনমুল কংগ্রেসের উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা কমিটি কাউন্সিলরের এমন আচরণে যথেষ্টই ক্ষুব্ধ। সংগঠনের জেলা সভাপতি রাজীব মুখোপাধ্যায় বলেন, কাউন্সিলর এইভাবে মার্চ মাসে স্কুলে গিয়ে ভর্তির জন্য চাপ দিয়ে ঠিক কাজ করেননি। কাউন্সিলর অন্যভাবে তার কথা বলতে পারতেন। আমরা চাই, সবকিছু দেখে দলের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত।


এমন ঘটনায় রীতিমতো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা থেকে অন্য শিক্ষিকা সহ কর্মীরা।
তবে তার বিরুদ্ধে উঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছেন শাসক দলের ঐ কাউন্সিলর। তিনি বলেন, আমার ওয়ার্ডে দুটি স্কুল আছে। তারমধ্যে একটিতে আমার অনুরোধ মতো পড়ুয়ারা ভর্তি করা হয়েছে। তাদের ফিও কমানো হয়েছে। কিন্তু আর্য কন্যা স্কুলে তা করা হয়নি। আমি ওয়ার্ডের কাউন্সিলর হিসাবে মেয়েদেরকে ভর্তি করানোর অনুরোধ করেছিলাম। প্রথমবার গত ১৮ ফেব্রুয়ারি স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষিকাকে সেই অনুরোধ করেছিলাম। তিনি বলেছিলেন ১ মার্চ বলবেন। তারমধ্যে আমি লিখিত ভাবে আবেদন করি। তাতে কিছু করা হয় নি। তাই আমি এদিন কয়েকজন মেয়ে ও তাদের অভিভাবকদের নিয়ে দুয়ারে সরকারের শিবির চলাকালীন যাই। প্রধান শিক্ষিকার সঙ্গে দেখা করে বলি। তার দাবি, আমি থাকাকালীন প্রধান শিক্ষিকা অফিসে সবাইকে ডেকে নেন। পরে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশও আসে। আমি তখন চলে আসি। আমি কোন চাপ ও হুমকি দিইনি। সবকিছু স্কুলের সিসিক্যামেরায় রয়েছে।
থানায় অভিযোগ দায়ের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পুলিশ তদন্ত করে দেখুক।


তবে ঐ কাউন্সিলরের সব কান্ডকারখানা সিসি ক্যামেরার ধরা পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, রীতিমতো চড়া গলায় কথা বলছেন ঐ কাউন্সিলর।
এই প্রসঙ্গে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, গোটা ঘটনার কথা জানিয়ে আমি আসানসোল দক্ষিণ থানায় অভিযোগ দায়ের করেছি। তাতে আমি সব বলেছি। জেলার নামকরা স্কুল হলো এটি। আমরা দুয়ারে সরকারের শিবির করছি। ঐ কাউন্সিলর দুদিন এসে ভর্তি করানোর জন্য চাপ দিচ্ছেন। হুমকি দিয়েছেন। আমরা চাই পুলিশ তদন্ত করে পদক্ষেপ নিক। কারণ এই ঘটনায় আমরা সবাই ভীত ও আতঙ্কিত।
এদিকে আসানসোল দক্ষিণ থানার পুলিশ জানায়, অভিযোগ দায়ের হয়েছে। তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

Leave a Reply