ASANSOL

রানিগঞ্জে ইঞ্জিনিয়ারদের
গলায় খালি বোতলের মালা পড়িয়ে, রোদে বসিয়ে বিক্ষোভ তৃণমূলের পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও প্রধানদের, বিতর্ক

গ্রামে গ্রামে পানীয় জলের সংকটের জন্য দায়ী পিএইচই ইঞ্জিনিয়াররা বলে অভিযোগ

বেঙ্গল মিরর, চরণ মুখার্জী ও রাজা বন্দোপাধ্যায়, আসানসোল, ৮ মার্চঃ গ্রামে গ্রামে পানীয়জলের সংকটের জন্য জনস্বাস্থ্য কারিগরি বিভাগ বা পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ারদের দায়ী করে তাদেরকে হেনস্থা করার অভিযোগ উঠল পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোলের রানিগঞ্জ ব্লকের তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও প্রধানদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার আসানসোলের রানিগঞ্জের বিডিও অফিসের সামনে পিএইচইর জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ারদের খালি জলের বোতলের মালা পড়িয়ে ও রোদে বসিয়ে রাখা হয়। এদিন পানীয়জলের জন্য বিডিও অফিসে বসে বিক্ষোভ দেখান পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানরা।
রানিগঞ্জ পঞ্চায়েত এলাকায় তীব্র পানীয়জলের সংকটের জন্য পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতি ও সরাসরি তাদের ঘাড়ে দোষ চাপিয়ে দেন পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও প্রধানরা।

এদিনের বিক্ষোভে সামিল হয়েছিলেন রানিগঞ্জের ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান ও পঞ্চায়েত সভাপতি নিজে।রানিগঞ্জের পঞ্চায়েত সভাপতি তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা বিনোদ নুনিয়া পিএইচইর জুনিয়র ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ রায়ের গলায় খালি জলের বোতলের মালা পড়িয়ে দেন। হাতে খালি বালতি ধরিয়ে বসিয়ে রেখে দেওয়া হয় তাকে। রোদে বসে বসে ইঞ্জিনিয়াররা পানীয় জল চাইলেও তাদেরকে সেই জল দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।


গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধানদের সঙ্গে এদিনের বিক্ষোভে থাকা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির দাবি, পঞ্চায়েত এলাকায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্য সরকারের সমস্ত রকমের পরিষেবা দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন গ্রামবাসীদের জন্য। শুধুমাত্র পানীয় জলের সংকট দূর হচ্ছে না রানিগঞ্জের গ্রাম গুলিতে। আর এরজন্য পিএইচইর ইঞ্জিনিয়ারদের গাফিলতি রয়েছে । এই দায় তাদেরই নিতে হবে। তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, ইঞ্জিনিয়ারদের জন্য পঞ্চায়েত প্রধানদের প্রায়দিনই গ্রামবাসীদের বিক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। তাই এদিন আমরা বিডিও অফিসের সামনে ইঞ্জিনিয়ারদের রোদে বসিয়ে রেখে ঘেরাও করেছি। বিডিও অভীক বন্দোপাধ্যায়কে এখানে বসে ফোনে সব বলেছি ও পরিষ্কার করে জানিয়েছি জল না পাওয়া পর্যন্ত আমরা উঠবো না।


যদিও জুনিয়ার ইঞ্জিনিয়ার সোমনাথ রায়ের দাবি, এই এলাকায় পানীয় জলের সংকট দূর করতে হলে নতুনভাবে জল প্রকল্প করতে হবে। প্রকল্পের জন্য অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। নতুন পাইপ লাইন বসানোর কাজ করতে হবে। অর্থ বরাদ্দ করা হলেও টেন্ডার করতে হবে। তবেই নতুন কাজ করতে পারবো আমরা। কিন্তু এক্ষেত্রে তেমন কিছুই করা হয়নি। পিএইচইর ইঞ্জিনিয়াররা আরো বলেন, আমাদের উপর যে দায় চাপানো হচ্ছে তা সঠিক নয়।
এই বিক্ষোভের মধ্যে পিএইচইর এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সহ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি ও প্রধানদের নিয়ে বৈঠকে বসেন বিডিও।


সেই বৈঠকে শেষে তিনি বলেন, গরম পড়তেই এই ব্লকের ছয়টি গ্রাম পঞ্চায়েতে জল সংকট দেখা দিয়েছে। এই এলাকায় জল সরবরাহের একমাত্র ভরসা পিএইচই। প্রতিদিন ৮০ মেগা গ্যালন জলের দরকার হয়। কিন্তু পাওয়া যায় ২০ থেকে ২৫ গ্যালন। সেই কারণে রেশনিং করে জল দিতে হয়। এদিন আলোচনা করে ঠিক হয়েছে, যে সব জায়গায় পাইপলাইন বসানোর কথা তা দ্রুত করা হবে। যতক্ষণ তা না হচ্ছে, ততক্ষণ ট্যাঙ্কার করে জল সরবরাহ করা হবে।
তবে এদিনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে শোরগোল ছড়িয়েছে রানিগঞ্জ এলাকায়। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাদের আচরণ নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

Leave a Reply