ASANSOL

অটল বিহারি বাজপেয়ীর জমানার সঙ্গে মোদির জমানার অনেক পার্থক্য”, কর্মীসভায় বললেন প্রাক্তন অর্থ মন্ত্রী যশবন্ত সিনহা

বেঙ্গল মিরর, আসানসোল, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায় ও সৌরদীপ্ত সেনগুপ্ত : প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহার উপস্থিতিতে শুক্রবার আসানসোলের রবীন্দ্র ভবনে আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে তৃনমুল কংগ্রেসের প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহার সমর্থনে একটি সভা হয়। সেই সভায় শত্রুঘ্ন সিনহা ছাড়াও রাজ্যের মন্ত্রী ঘটক, সাংসদ কল্যাণ ব্যানার্জি, তৃণমূল বিধায়ক প্রদীপ মজুমদার, মন্ত্রী বীরবাহ হাঁসদা ও শ্রীকান্ত মাহাতো, আসানসোল পুরনিগমের ডেপুটি মেয়র তথা পশ্চিম বর্ধমান জেলা আইএনটিটিইউসির সভাপতি অভিজিৎ ঘটক, রাজ্য সম্পাদক ভি শিবদাসন ওরফে দাসু, রাজ্যের সহসভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার, জেলা মহিলা সভানেত্রী মিনতি হাজরা কাউন্সিলর গুরুদাস ওরফে রকেট চট্টোপাধ্যায় , অশোক রুদ্র, প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এনডিএ ১ বা অটল বিহারি বাজপেয়ি জমানার অর্থমন্ত্রী যশবন্ত সিনহা বলেন, নির্বাচনের আসল পরীক্ষা বুথে। তিনি বুথ স্তরের কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম করতে বলেন। আসানসোলকে বলা হয় ভারতের প্রাণ। শত্রুঘ্ন সিনহা আসানসোল থেকে জিতলে কেন্দ্রীয় সরকারকে কড়া বার্তা দেওয়া যেতে পারে। তিনি অভিযোগ করেন বলেন, বিজেপি ভুল পথে হাঁটছে। তাই আমি ২০১৮ সালে বিজেপির সঙ্গে বিচ্ছেদ করি। যশবন্ত সিনহার অভিযোগ, গত বিধানসভা নির্বাচনে মোদি ও অমিত শাহ বাংলা দখল করতে চেয়েছিলেন। সেটা আমি বুঝতে পেরে বাংলায় বিজেপিকে রুখতে তৃনমুল কংগ্রেসে যোগ দান করি।


তিনি , হিন্দুত্বের সঙ্গে বিজেপির কোনো সম্পর্ক নেই। তারা শুধু ক্ষমতা চায়। শত্রুঘ্ন সিনহা যখন সংসদে গর্জে উঠবেন, তখন মোদী ও অমিত শাহ নামের দুই গুজরাটির হৃদয় কেঁপে উঠবে। তিনি দাবি করেন, শত্রুঘ্ন সিনহা মাত্র দুই বছরের জন্য আসানসোলে আসেননি। তিনি আসানসোলে থেকে আসানসোলের জন্য কাজ করবেন। তিনি অভিযোগ করেন যে দেশের শিল্প সংস্থাগুলি নরেন্দ্র মোদী ও অমিত শাহের এটিএম হিসাবে কাজ করে। সে কারণেই দেশের সবকিছু দুজনকে দেওয়া হচ্ছে। আসানসোল থেকে তৃণমূলের জয় মানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জয়।


প্রার্থী শত্রুঘ্ন সিনহাও জাতীয় সম্পদ বিক্রির বিষয়ে খোঁচা দিয়েছেন এদিনের সভায়। মুদ্রাস্ফীতি নিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে কটাক্ষ করেন তিনি বলেন, তার কথা ও কাজের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। অটল বিহারী বাজপেয়ীর জমানায় বিজেপিতে গণতন্ত্র ছিল। এখন মোদীর জমানায় শুধুই একনায়কত্ব। তিনি বলেন, দেশের দৃষ্টি আজ যদি কোনো এক নেতার দিকে থাকে, তিনি হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

তৃনমুল কংগ্রেসের নেতা স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বলেন, বিজেপি প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল জাতীয় সম্পদ ব্যক্তিগত হাতে বিক্রি করার পক্ষে। এমন প্রার্থীর হাতে আসানসোলের লাগাম দেওয়া বিপদজনক হবে। অন্যদিকে জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, আসানসোল উপনির্বাচনে আসল লড়াই মোদি ও দিদির মধ্যে। তিনি এবার আসানসোলে নতুন ইতিহাস তৈরি করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাতকে শক্তিশালী করার জন্য TMC কর্মীদের কাছে আবেদন জানিয়েছেন। রাজ্যের আরো এক মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা বলেপন যে আসানসোলের জন্য আমার মনে একটি বিশেষ জায়গা রয়েছে। বিজেপিকে এত গুরুত্ব দেওয়ার দরকার নেই। বিজেপি আদিবাসীদের উন্নয়নের কথা ভাবে না বলে অভিযোগ বীরবাহার।তিনি বলেন, বিধানসভা নির্বাচনের সময় আমি শুভেন্দু অধিকারীর মতো বিজেপি নেতাকে রুখে দিয়েছিলাম।


সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন যে যশবন্ত সিনহা যখন বিজেপি সাংসদ ছিলেন তখন তাঁর কথার গভীরতা থাকায় শুনতে ভাল লাগতো। এটা খুবই দুঃখের বিষয় যে আজ এই ধরনের লোকদের বিজেপিতে কোনো স্থান নেই। বেসরকারীকরণকে সমর্থন করার জন্য কল্যাণ ব্যানার্জী অগ্নিমিত্র পালের কটাক্ষ করেন। মন্ত্রী মলয় ঘটক বলেন, শনিবার আসানসোলে একটি পদযাত্রা হবে। যেখানে শত্রুঘ্ন সিনহার সমর্থনে অভিষেক বন্দোপাধ্যায় যোগ দেবেন। প্রচারের শেষ দিন রবিবার আসানসোল পুরনিগমের প্রতিটি ওয়ার্ড ও ব্লকে একযোগে র‌্যালি বার করা হবে। ভোটের শত্রুঘ্ন সিনহার জয় নিশ্চিত করার জন্য তিনি দলের কর্মীদের কাছে কোমর বেঁধে মাঠে নামার আবেদন করেন।

Leave a Reply