ASANSOL

রানিগঞ্জ পুনর্বাসন প্রকল্প, জামুড়িয়ায় নতুন আবাসন এরিয়া পরিদর্শনে জেলাশাসক, কথা বললেন বাসিন্দাদের সঙ্গে

বেঙ্গল মিরর, রাজা বন্দ্যোপাধ্যায়/ চরণ মুখার্জি, আসানসোল, ১৩ মেঃ আসানসোল রানিগঞ্জ খনি এলাকায় ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের জন্য পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ চলছে। আসানসোলের বেশকিছু এলাকায় ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য আবাসন তৈরীর কাজ চলছে। জামুড়িয়ার বিজয় নগরে তৈরী হওয়া নতুন আবাসেন ধস কবলিত এলাকার বেশ কয়েকটি পরিবার চলে গেছেন।
শুক্রবার সেই বিজয় নগরে আসেন পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক এস অরুণ প্রসাদ। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক ( ডেভেলপমেন্ট) সঞ্জয় পাল। জেলাশাসক এখনো পর্যন্ত যেকটি পরিবার সেখানে এসেছেন, তাদের সঙ্গে কথা বলেন। সেখানে তাদের কোন সমস্যা হচ্ছে কিনা তাও জানতে চান।


প্রায় তিন বছর হতে চলল কয়লা মন্ত্রক বা কোল ইন্ডিয়া কয়লা খনি এলাকায় ধস ও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে পুনর্বাসন প্রকল্প খাতে আর টাকাও দেয়নি। এমনকি এই প্রকল্পের কাজ ২০১৯ এর পরে সম্প্রসারণের জন্য আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের তরফে বারবার আবেদন জানালেও কয়লা মন্ত্রক সাড়া দেয়নি।
সম্প্রতি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের জেলাশাসক ও পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে ভার্চুয়াল বৈঠক করেন। সেই বৈঠকে পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসকের কাছে তিনি জানতে চান, আসানসোলের পুনর্বাসন প্রকল্পের কাজ কতদূর এগিয়েছে। তার উত্তরে জেলাশাসক তাকে জানান কয়লা মন্ত্রক টাকা দেয়নি। তাই কাজ থমকে আছে। সেই বৈঠকে থাকা রাজ্যের আবাসন দপ্তরের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, কেন্দ্র যত টাকা দিয়েছিল সেই কাজের ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট দেওয়া হয়েছে। এরপরেও আর টাকা দিচ্ছে না। তাও অনেকদিন হলো। এতেই মুখ্যমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হন।


আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ বা আড্ডা সূত্রে জানা গেছে, পুনর্বাসন প্রকল্পে ধস কবলিত এলাকার সব মিলিয়ে ২৯ হাজারের কিছু বেশি পরিবারকে বাড়ি করে দিতে হবে। এর মধ্যে ঘরের বিনিময়ে ঘর পাবেন এমন ২২, ৮৬৬ পরিবারকে চিহ্নিত করা হয়েছে। আর যাদের পৈত্রিক সম্পত্তি হিসাবে জমি ছিল তেমন ৬১০১ জন আছেন । এছাড়াও বিভিন্ন ব্যবসায়ী হিসাবে ধস কবলিত এলাকায় যারা ছিলেন তাদের সংখ্যাটা ২২২ জন। এই প্রকল্পটি যখন আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদকে বাস্তবায়ন করার দায়িত্ব দেওয়া হয় তখন এটি ২৬৬১ কোটি ৭৩ লক্ষ টাকার প্রকল্প ছিল। ২০১৯ এর মধ্যে প্রকল্পটি শেষ করার কথা ছিল। কিন্তু ধস কবলিত এলাকার বাসিন্দাদের পুনর্বাসন দেওয়ার জন্য জমি পাওয়া যাচ্ছিল না। আর যেসব জমি ঠিক করা হচ্ছিল সেখানে ইসিএল এনওসি দিতে চাইছিল না ।

তাছাড়াও একবারে শুরুতে বামজমানায় যারা এই প্রকল্পের সমীক্ষা করেছিলেন তারা বেশি লোক সংখ্যা দেখিয়ে সমীক্ষাটা করেছিলেন। যা ভুল ছিল। এইসব ঠিক করতে গিয়ে সময় লাগে। খরচ বেড়ে দাঁড়ায় ৫১৭৭ কোটি টাকা। এখন পর্যন্ত আড্ডাকে দেওয়া হয়েছে ৫৮১ কোটি ১৫ লক্ষ টাকা। কিন্তু আড্ডার তরফে দাবি করা হয়েছে তারা এখনো পর্যন্ত ৬০১ কোটি টাকার বেশি খরচ করেছে। এই টাকার মধ্য প্রায় ৮০ একর জমি কেনা হয়েছে অন্ডালের দক্ষিণখন্ড ১৫৫ কোটি টাকা দিয়ে ।তাছাড়া এই সম্পূর্ণ প্রকল্প তৈরি করতে ২৫০ একর জমি দরকার।

কিন্তু এখন পর্যন্ত কেনা জমি ও খাস জমি মিলিয়ে ১৪৯ একর জমি পেয়েছে
আড্ডা। অর্থাৎ এখনো আরো ১০০ একর জমি দরকার। ছাতিম ডাঙ্গার ক্ষতিগ্রস্থ ১৫৫ পরিবারকে ইতিমধ্যেই জামুড়িয়ার বিজয় নগর এলাকায় নতুন আবাসন দেওয়া হয়েছে। এছাড়া অন্ডালের দক্ষিণখন্ড ৫৬৪৪, বিজয়নগরে ২৬০০ ও বারাবনিতে ২৩০০ আবাসন তৈরির কাজ চলছে।

Leave a Reply