BARABANI-SALANPUR-CHITTARANJAN

দুই বছর আগের এক বৃদ্ধার রহস্যময় মৃত্যুর কিনারা করল রূপনারায়নপুর পুলিশ

বেঙ্গল মিরর, কাজল মিত্র :- দুই বছর আগের ঘটে যাওয়া মৃত্যুরহস্যের কিনারা করল রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ।পুলিশের বড়ো রকমের এক সাফল্য।সালানপুর থানার রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির অন্তর্গত রূপনারায়ণপুর সবজি বাজার রোডের উপর একটি একতলা বাড়ি থেকে ২০২০ সালের কুড়ি মার্চ এক বৃদ্ধার মৃতদেহ পাওয়াকে ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছিল ।কিন্তু এতদিন ধরে অভিযুক্ত অধরা থাকলেও ওই বৃদ্ধার রহস্যময় মৃত্যুর কিনারা হল প্রায় দুই বছর পর।


জানাগেছে যে রূপনারায়নপুর বাজার রোডের উপর বসুনিকেতন নামে একটি একতলা বাড়ি একাই বসবাস করতেন ৬৫ বছরের ওই বৃদ্ধা যার নাম শেফালি রায়।তিনি একা থাকার ফলে প্রতিদিন এর কাজের জন্যে বাড়িতে কিছু লোক রাখা হয়েছিল যারা ওই বৃদ্ধার সহযোগিতা করতে। কিন্তু হঠাৎই ২০২০ সালের কুড়ি মার্চ সকাল ১১ টা নাগাদ তাকে তারই বাড়ির ভেতরে থেকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।সসেইসময় রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ ছিলেন সিকান্দর আলম।তখন প্রাথমিক তদন্তে সেটিকে সাধারণ মৃত্যু বলে মনে করা হয়েছিল।


কিন্তু মৃত বৃদ্ধার এক ভাই শংকর চন্দ্র রায় যিনি রাঁচিতে থাকত সেখানে উকিল এর পেশায় ছিলেন তিনি ঘটনার খবর পেয়ে রূপনারায়ণপুরে এসে পুলিশের কাছে একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ দায়ের করেন ।পুলিশ এ বিষয়ে অজ্ঞাত ব্যাক্তির বিরুদ্ধে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা দায়ের করেন।রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির তৎকালীন সাব – ইন্সপেক্টর শোভন সাহার হাতে মৃত্যুর কিনারা করার জন্য তদন্ত ভার দেওয়া হয় ।


কিন্তু প্রাথমিক তদন্ত ছাড়া তিনি বিষয়টির বিশেষ অগ্রগতি ঘটাতে পারেন নি । ইতিমধ্যে রূপনারায়নপুর থেকে তাকে বদলিও হতে হয় এরপরই এই মৃত্যু রহস্যের পর্দা উন্মোচনের জন্য দায়িত্ব পান বর্তমান রূপনারায়নপুর ওসি রাহুল দেব মন্ডল। প্রথমে তিনি ময়নাতদন্তের রিপোর্ট খতিয়ে দেখে জানতে পারেন ওই বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে মারা হয়েছিল । কোনভাবেই যা আত্মহত্যা নয় ।এরপরই তিনি একে একে তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারেন সেইবাড়িতে যারা যারা কাজ করত সকলকে ডেকে পাঠান ।তাদের প্রত্যেকের বয়ান রেকর্ড করানো হয় ।তবে তিনি জানতে পারেন ওই বাড়িতেই কিরণ দাস নামে আরেক ব্যাক্তি কাজ করতে যেত।কিন্তু ঘটনার পরপরই সে এলাকা থেকে পলাতক ছিল পরে অবশ্য ঘটনার বহুদিন পর নিজের এলাকা ফিরে আসেন এবং রূপনারায়নপুর পশ্চিম রাঙ্গামাটির হরিজন বস্তিতে থাকতে শুরু করে।

গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ওই কিরণ দাস যার বয়স ৩৫ তাকে ২৭ মে ওসি রাহুলদেব বাবু ফাঁড়িতে তুলে নিয়ে আসেন এবং দীর্ঘ জিজ্ঞাসাবাদ করার পর সে স্বীকার করে যে সেই সেদিন
রাগের বশে শেফালী দেবীকে গলা চেপে খুন করেছিল । রূপনারায়নপুর ফাঁড়ির পুলিশ কিরনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে।
আজ ২৮ মে খুনে অভিযুক্ত কি রন দাসকে পুলিশ আসানসোল আদালতে পেশ করছে ।

মৃত্যুর বিষয়টি প্রায় ধামাচাপা পরে যাওয়ার ফলে মৃতার পরিবারের তরফে সেরকম ভাবে আসামিকে ধরার ব্যাপারে খুব একটা চাপ ছিলনা।কিন্তু দুইবছর আগের বৃদ্ধার মৃত্যুর কেসের দায়িত্বে থাকা রূপনারায়ণপুর ওসি রাহুলদেব মন্ডল ব্যোমকেশ বক্সীর কায়দায় সহযোগীদের সাহায্য নিয়ে যেভাবে এই মৃত্যুরহস্যের কিনারা করলেন তা পুলিশের প্রতি মানুষের আস্থাকে আরও মজবুত করবে বলে মনে করা হচ্ছে ।

Leave a Reply